মাসআলা Vlog #4

আসসালামু আলাইকুম...?

আরেকটি মাসআলা শেয়ার করছি । আশা করছি মাসআলাটি বুঝার এবং আমল করার চেষ্টা করবেন।


PicsArt_10-22-12.30.38.jpg


মাসআলা...

তাকবীরে তাহরীমার সময় উভয় হাত এতটা উঠাবে যাতে বৃদ্ধাঙ্গুলি দু,টো উভয় কানের লতিকার বরাবর হয়।

ইমাম শাফেয়ী (র.) ও ইমাম মালিক (র.) বলেন, কাঁধ পর্যন্ত উঠাবে, ইমাম আহমদ ( র.) থেকেও এমনটি বর্ণনা রয়েছে, কুনূতের তাকবীর দু, ঈদের তাকবীর এবং জানাযার তাকবীর সম্পর্কেও একই মতপার্থক্য রয়েছে।

ইমাম শাফেয়ী (রহ.) এর দলিল হলো, আবু হুমাইদ সাঈদী বর্ণিত হাদিস- ( মুহাম্মদ ইবনে আতা থেকে বর্ণিত, তিনি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) সাহাবিদের এক জামাআতের সাথে বসাছিলেন, মুহাম্মদ ইবনে আমর বলেন, আমরা রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নামাজ নিয়ে আলোচনা করতে ছিলাম, তখন আবু হুমাইদ সাঈদী বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর নামাজকে আপনাদের তুলনায় বেশি হিফয করেছি (মনে রেখেছি)।

আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) কে দেখেছি যখন তিনি তাকবীর বলতেন তখন উভয় হাত কাঁধ বরাবর উঠাতেন। (বুখারী) হিদায়া গ্রন্থকার উক্ত হাদিস এভাবে বর্ণনা করেছেন।

(كان النبي صلى الله عليه وسلم اذا كبر رفع يديه الى منكبيه)

উভয় হাদিস দ্বারা বুঝা গেল রাসুলুল্লাহ (সাঃ) তাকবীরে তাহরীমার সময় উভয় হাত কাঁধ পর্যন্ত উঠাতেন।

আমাদের দলিল হলো, ঐ হাদিস যা ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) বারা ইবনে আযিব এবং হযরত আনাস (রা.) বর্ণনা করেছেন -

( ان النبي صلى الله عليه وسلم كان اذا كبر رفع يديه حذاء اذنيه)

অর্থাৎ রাসুলুল্লাহ (সাঃ) যখন তাকবীর বলতেন তখন উভয় হাত কান বরাবর উঠাতেন।

দারে কুতনী উক্ত হাদিস হযরত আনাস (রা.) সূত্রে এভাবে বর্ণনা করেছেন -

( قال كان رسول الله صلى الله عليه وسلم اذا افتتح الصلاه كبر ثم رفع يديه حتى يحاذي ابهاميه أذنيه)

অর্থাৎ যখন রাসুলুল্লাহ (সাঃ) নামাজ আরম্ভ করতেন, তাকবীর বলতেন, তারপর উভয় হাত এতটা উঠাতেন যে বৃদ্ধাঙ্গুলি দু,টো কানের লতিকার বরাবর হয়ে যেতো।

আমাদের মাযহাবের সমর্থনে আকলী দলিল হলো, তাকবীরে তাহরীমার সময় হাত উঠানো হয় বধিরদেরকে অবহিত করানোর জন্য, আর তা ঐ ভাবেই সম্ভব যেভাবে আমরা বলেছি, অর্থাৎ কান পর্যন্ত হাত উঠানোর সাথে, কেননা ইমাম যখন কান পর্যন্ত হাত উঠাবে বধির লোকেরা বুঝতে পারবে যে, তাকবীর বলা হয়েছে, তখন তারাও তাকবীর বলে নামাজ আরম্ভ করে দিবে।

এখন যদি প্রশ্ন করা হয় যে, তাকবীরের সময় হাত উঠানো যদি বধিরদেরকে অবহিতকরণ হয় তাহলে একাকী নামাজ আদায়কারী ব্যক্তি তো কান পর্যন্ত হাত উঠাবে না, কেননা তার ব্যাপারে তো এ কারণ পাওয়া যায় না..?

এর জবাব হলো, আসল তো হলো জামাআতের সাথে আদায় করা। যেমন আল্লাহ তায়ালার বাণী-

( واركعوا مع الراكعين )

একাকী নামাজ আদায়কারী ব্যক্তির নামাজ তো হলো نادر আর نادر এর কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই, কেননা ফায়দা আছে, النّادر كالمعدوم তারপর অপর প্রশ্ন জাগে যে, তাহলে তো মুকতাদীর ও কান পর্যন্ত হাত উঠানোর প্রয়োজন নে..?

জবাব হলো, বধির লোকেরা সর্বশেষ কাতারে দাঁড়াবে, তাই তারা ইমামকে দেখতে পায় না।

এ অবস্থায় তারা তাদের সামনের মুকতাদীদেরকে দেখেই নামাজ আরম্ভ করবে।

এ কারণে মুকতাদীদেরও কান পর্যন্ত হাত উঠানো জরুরি।

গ্রন্থকার বলেন, (ইমাম শাফেয়ী (রহ.) এর দলিলের জবাবে) তার বর্ণিত হাদিসকে অপারগতার অবস্থার উপর আরোপ করা হবে, যেমন ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) সূত্রে বর্ণিত - তিনি বলেন, আমি মদীনায় গেলাম তখন দেখলাম যে, লোকেরা ( তাকবীরে তাহরীমার সময়) স্বীয় হাত কান পর্যন্ত উঠাচ্ছেন।

পরবর্তী বছর আমি রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর খিদমতে হাজির হলাম।

লোকেরা প্রচন্ড শীতের কারণে, কাপড় চোপড় এবং এমন পোশাক পরে আছেন যার কিছু অংশ টুপির কাজে আসে, তখন দেখলাম তারা কাঁধ পর্যন্ত উঠাচ্ছেন।

ওয়াইল ইবনে হুজর (রা.) উক্ত হাদিসে স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, ঐ সকল লোকদের কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানো তাদের পোশাকের কারণে ছিল, সুতরাং ( حديث الى المناكب ) অপারগতার উপর আরোপ করা হবে।

শরহে নিকায়ার গ্রন্থকার উভয় হাদিসে এভাবে সামঞ্জস্য বিধান করেছেন যে, হাত দ্বারা হাতের তালু এবং তার উপরিভাগ উদ্দেশ্য, সুতরাং হতে পারে হাতের তালুর কিনারা এবং গোড়ালি কাঁধ বরাবর ছিল আর শুধু হাতের তালু কান বরাবর ছিল, এতে উভয় হাদিসের মাঝে কোনো বিরোধ থাকে না।

স্ত্রীলোকের তাকবীরে তাহরীমার সময় কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠাবে। এটাই বিশুদ্ধ অভিমত, হাসান ইবনে যিয়াদ ইমাম আবু হানিফা (র.) থেকে বর্ণনা করেছেন যে, স্ত্রীলোকেরা কান পর্যন্ত হাত উঠাবে, কারণ হলো, رفع يديه হাতের তালু দ্বারা হয়।

উপরে বর্ণিত হয়েছে যে, স্ত্রীলোকদের হাতের তালু সতর নয়, তাই কান পর্যন্ত হাত উঠানোর ক্ষেত্রে পরুষ - মহিলা বরাবর।

বিশুদ্ধ মতের কারণ হলো, কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানোর সময় মহিলাদের জন্য অধিক পর্দা নিহিত, তাই তাদের কাঁধ পর্যন্ত হাত উঠানো অধিক সমীচীন।

والله اعلم

ধন্যবাদ......পোস্টি পড়ার জন্য, এই পোস্টি শেয়ার করবেন, যাতে অন্য মুসলিম ভাই, মাসআলাগুলো জানতে পারে, যদি কোনো কিছু বুঝতে অসুবিধা হয়, আমাকে কমেন্ট করে জানাবেন, ইনশাহআল্লাহ আমি বুঝিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করব।


PicsArt_10-19-11.01.27.jpg


Image Source

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now