করোনার দিনলিপি(পর্ব-১)

coronar dinlipi.jpg

found here

সকাল বেলা উঠলে শুনেছি শরীর স্বাস্থ ভালো থাকে।ব্যাপারটায় একটা কিন্তু আছে।যখন কেউ সকাল সকাল ওঠে ঘুম থেকে , সে অনেকটা সময় পায় নিজের কাজগুলি করবার জন্য।নিজের বিছানা গোছানো থেকে শুরু করে, খালিপেটে পানি খাওয়ার সময় পর্যন্ত আলাদা করা যায়।ব্যাপারটা এক্সপেরিমেন্ট করার জন্য ইদানীং সকালে উঠছি, কিন্তু খাজনার চেয়ে বাজনা বেশি হয়ে যাচ্ছে।ভোরে ওঠার পরই কিছু কাজ করবার পরই মনে হচ্ছে আবার ঘুমিয়ে নিলে ভালো হতো।

রোজকার মতন আজো সকালে উঠেছি, খালি পেটে পানিও খেলাম।কয়েকদিন যাবৎ টনসিল খুব জালাচ্ছে।টনসিলের ব্যাথায় জ্বর থেকে উঠলাম বেশি দিন হয় নি।শরীর যে দুর্বল তা বুকডাউন দিতে গিয়ে টের পেলাম।পাঁচটা বুকডাউন দিতেই শরীর ভেংগে এলো , মনে হচ্ছে কাঁচের মতন ভেংগে চুরমার হয়ে যাবে।এই পরিস্থিতিতে সাধারনত আমি হার মানি না, বেশি সময় ধরে হয়তো এক্সারসাইজ করতে পারি নাহ, কিন্তু শুরু করতে তো দোষ নাই।

টনসিলের জন্য নিয়মিতো গরম পানি দিয়ে গারগেল করছি , গারগেলের মাঝে স্বরলিপি প্রাক্টিস করি, ভাগ্যিস পাশের ফ্ল্যাটের মানুষ ঘুমে থাকে , নয়তো আমাকে মারতে দ্বিধা করতেন নাহ।

হঠাৎ করেই বইয়ের তৃষনা পেয়ে যায়, বই পরছিলাম একটা নাম “এম্পায়ার অব দ্যা ওয়ার্ল্ড”।লেখক বইটাতে মোঘল সম্রাজের ইতিকথা মোঘল বাদসাদের চরিত্রের মধ্যে দিয়ে ফুঁটিয়ে তুলেছেন।ব্যাপারটা এমন লেখক ইতিহাস বর্ণ্না করছেন ইতিহাসের চরিত্রের মধ্য দিয়ে।আমি পড়ছিলাম বইটির তৃতীয় খন্ড।এই খন্ডে বাদশাহ আকবর তার সম্রাজ্য পরিচালনার স্বিদ্ধান্ত নিচ্ছিলো আর আমি গিলছিলাম।বইটা পরে একটা জিনিস মাথায় আসে, তৎকালীন সময়ে এক পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থার মধ্য দিয়ে আমরা গিয়েছি।নারীকে উপহার হিসেবে দেওয়া এবং হেরেম ও রতিক্রিয়ার বর্ণ্না আমাকে সত্যি ভাবায়।

লেখক একটা অপ্রিয় সত্য এখানে উৎঘাটন করেছেন, আর সব দিক থেকে বিবেচনায় পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থায় কথাটা, আংশিক সত্য বলেই আমার ধারনা।আকবরের বয়েষ যখন চৌদ্দ তখন ঘটনা ক্রমে সে মুঘোল সম্রাট হিসেবে ঘোষিত হয়।সম্রাট হিসেবে তার ও একটা হেরেম থাকে যেখানে ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের নারীরা তাকে যৌনো সুখ দেবার জন্য উদ্গ্রিব হয়ে থাকে।আকবর তার প্রথম রতিক্রিয়া সম্পন্ন করে যে মেয়ের সাথে তার নাম মায়ালা।সত্যটা এমন একজন সম্রাটকে আগে শিখতে হবে কিভাবে একজন নারীকে জয় করা যায়, ভূখন্ডের মতন! যদি এই বিষয়ে সে পারদোর্ষি হতে পারে , তবে যেকোনো ভূমিও জয় করতে সে সক্ষম হবে।তার মানে কি দ্বাড়ায় ভালোবাসা কি শুধু দূর্বল চিত্তের মানুষের জন্য , অন্তত পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যাবস্থার মধ্যে হলেও?

এই প্রশ্নগুলা ঘুরপাক খাচ্ছিলো মাথায়, ঠিক তখনই আম্মু বলে ভাত রান্না হয়ে গেছে, খেলে আসো!আজকে সকালে খাবারের প্রতি আমি তীব্র আকর্ষন বোধ করছি এই কারনে যে , আজ আলুভর্তা আর ডিমভর্তার সাথে টক ডাল আছে।ধোঁয়া ওঠা গরম ভাতের সাথে টক ডা্‌ সাথে শুকনা মরিচের আলু ভর্তা, ঊফফ! জ্বিবে জল আসবার মতন।পেট ভরে খেলাম , খেয়ে ভবছি কি করবো!এই ভাবতে ভাবতে শুইলাম বিছানা। ভাগ্যিস সকালে গুছিয়ে রাখছিলাম।নারীর দেহ আমার এখোনো পাওয়া হয় নি কিন্তু গোছানো বিছানায় শুতে আমার এতো শান্তি লাগে যেনো কনো বাগানের ঘাসে শুয়ে আছি!নারীদেহের থেকে কম কি তা!

কয়েকদিন যাবৎ আম্মুর জন্য হলেও আব্বুর সাথে বাইরে যেতে হচ্ছে নাহ, সধারনত আব্বুর কাজে টুকটাক হেল্প করি, আমার ভালোই লাগে বয়স আর অভিজ্ঞতার ভারে তার প্রতিটা সিদ্ধান্ত আমকে ভাবায় এছাড়া তার পড়া বইগুলোও আমি পড়ি,সে মার্কার দিয়ে যেসব লাইন দাগিয়ে রাখে তা আমার কাছে জীবন নামের পরিক্ষায় নোট খাতার মতন…।

পরবর্তী লেখনিতে আমি আমার দুপুর শেয়ার করবো আপনাদের সাথে, কমেন্ট সেকশনে জানাতে পারেন সকালবেলা আপনার ভালো লাগার কাজগুলি।

signature.png
read my previous post
follow me on twitter

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now