সোর্স
হঠাৎ বন্ধুদের সাথে গল্প করতে করতে কখন যে হাঁটতে হাঁটতে নদীর পারে চলে গেলাম বুঝতে না পারা আমার মন। তবে হ্যাঁ আজকের আবহাওয়াটা অনেক সুন্দর ছিল।
নদীমাতৃক দেশ আমাদের বাংলাদেশ । অপরূপ সৃষ্টি স্রষ্টার নৌকা নিয়ে নদীর পাড়ে বসে ছিল। আমাদেরকে বলছিলো আপা ভাইয়া যাবেন নাকি ঘুরতে সবাই বলছিল চল ঘুরে আসি। আমার ও যেতে মন চাচ্ছিল কিন্তু কি জানেন আমি পানি ভয় পাই।
কিন্তু বারবার নদীর পাড়ে যেতে মন চায়। আমি নদীর পাড়ে যাই মন খারাপ হলে। কোন কারণে একা একা নদীর পাড়ে বসে থাকার মজাই আলাদা ।
শান্তি আছে তারপর কি করার ছিল আমার সবাই যেহেতু যাবে ঘুরতে আমি কেন একা পাড়ে বসে থাকবো পরে একরকম জোর করে নৌকায় উঠলাম। অবশেষে মজার ব্যাপার হলো আমি সব সময় নৌকার মাঝখানে বসি ।
আমরা নৌকায় উঠার আগেই কিছু খাবার কিনে নিয়ে উঠেছিলাম ফুচকা আরো অনেক ধরনের খাবার ।নদীর পাড়ে অনেক মুখরোচক খাবার পাওয়া যায় যা একবার না বারবার খেতে মন চাইবে।
নৌকায় উঠে আমরা বেশ দূরে যাবার পর নৌকার ঢেউ উঠলো অনেক পানির চাপ এখন বর্ষাকাল তাই আমি ভয় পেয়ে বললাম আমি বলছিলাম যাব না এবার হলো তো নৌকা যদি ডুবে যায় কি হবে? আর সবাই হাসছিল ওরা বলল ভয় পাচ্ছ কেন ?
বাতাস তো তাই পানির চাপ। কিছু হবে না আমরা তো আছি আমি বললাম আমি তোমাদের বিশ্বাস করিনা। গান বন্ধ করো ভয়ে আমি চুপচাপ বসে থাকলাম আর সবাই মজা করছে ছবি তুলছে কেউ গান গাইছে কেউবা আবার পানিতে পা ভিজিয়ে বসে আছে ।
আমি শুধু ভয় পাচ্ছিলাম অবশেষে নৌকা একটা ইটের ভাটার কাছে পৌঁছালো সবাই ছবি তোলার জন্য ইটের ভাটাতে নামতে চাইল কিন্তু কি জানেন হঠাৎ করে পানির মধ্যে কেমন গোল গোল গোল গোল ঘুরছিল নৌকাটা মাঝে কোনভাবেই নৌকাকে পারে নিতে পারছিল না হঠাৎ একটা সময় কি হল নৌকার ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে গেল ।
আমি তো এদিকে ভয়ে শেষ প্রায় আশেপাশে কোন নৌকা দেখা যাচ্ছে না কোন লোকজন নাই। কি করবো কিছু বুঝতে পারছিলাম না। মাঝিকে বলতেছিলাম আমরা আপনি অন্য নৌকার লোককে ফোন দেন। এখানে আসতে বলেন উনি তখন ফোনেও লোকদেরকে পাচ্ছিলেন না। কারণ লোক গুলো ফোন ধরছিলো না। উনি বারবার হাত দিয়ে ইশারা করছিলেন কিন্তু কেউ পেছনদিকে ফিরতেছিলো না।
তারপর নদীর মধ্যে নৌকা ভাসছিল। ভাসতে ভাসতে নৌকা গেল তখন লোকজন তখন তাদের বা কি করার ছিল? নৌকা তো পারে নিতে পারছিলাম না কোনোভাবেই নৌকা সব সময় মাঝখানে ছিল সবাই সিদ্ধান্ত নিল আমরা পানিতে ঝাপ দিবো ।
ওই গ্রামের উঠবো তারপর যেকোন উপায়ে রাস্তা বের করব বাসায় যাবার কিছুক্ষণ পর আমি চিল্লাচিল্লি করছিলাম আপনি অন্য মাঝিকে আবার ফোন করেন এখানে আসতে বলেন পরে একটা নৌকা আসলো আমাদের নৌকাটা ঠিক যেখানে বন্ধ হয়েছিল ।
দ্বিতীয় নৌকাটা ও ঠিক সেখানেই বন্ধ হয়ে গেল কোনভাবেই ইঞ্জিন চালু করতে পারছিল না। পরে ওই নৌকাটাও ভাসছিল আমাদের মাঝে দড়ি ছুঁড়ে দেয় ওই নৌকার দিকে। তারপর ওই নৌকার সাথে আমাদের নৌকা বাঁধে। দুটো একসাথে বেঁধে চেষ্টা করে কোন নৌকার ইঞ্জিন চালু করা যায় কিনা কিন্তু না ।
নৌকার ইঞ্জিন চালু করা যাচ্ছিল না। তারপর দুটো নৌকাই একসাথে ভাসছিল। হঠাৎ একটি পাড়ের দিকে চোখ যায়। মাঝি চেষ্টা করে ওই পারে নৌকা ভিড়ানো যায় কিনা। এখানে একটা মজার ব্যাপার হলো দুটো নৌকাতেই কোন বৈঠা ছিল না ।
একটা নৌকায় শুধু বড় একটা বাঁশ ছিল। তখন মাঝি কি করলো ওই বাসটি দিয়ে চেষ্টা করছিল পাড়ে যাবার। অবশেষে কিছুটা কাছাকাছি গেল পাড়ের। কিন্তু সেখানে ছিল হাঁটু পানি, কাদা। কিছু করার ছিল না আমাদের। আসলে যে যেভাবে পেরেছে তখন বাঁচার তাগিদে তাড়াতাড়ি করে নেমেছে কোথায় নামছি এটা দেখার সুযোগ ছিল না।
পরে মাথায় আসে আমরা কোথায়? কি একটা বাগান অনেক বড় একটা বাগান যেটার আসলে কোন রাস্তা নাই। আমরা কোন দিক থেকে বের হবো আমরা আসলে বুঝতে পারছিলাম না। একটা লোকের বাড়ি দেখতে পাই তখন সেই বাড়িতে আমরা যাই যাবার পর লোকটাকে বলি যে ভাই এখান থেকে বের হওয়ার রাস্তাটা আমাদেরকে একটু দেখাবেন?
তখন সে লোকটা আমাদের একটা রাস্তা দেখায় সেই রাস্তায় আমরা সবাই চলি তারপর হাঁটতে হাঁটতে গিয়ে মেন রাস্তা পাই। মেইন রাস্তায় তখন গাড়ি পাচ্ছিলাম না অবশেষে একটি ভ্যান পাই তারপর ভ্যানে করে বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দেই। এরপর থেকে যতবার নৌকায় উঠেছি এই কথাগুলোই বারবার মনে পড়ছে। আসলে কি জানেন, যে ঘটনাগুলো ঘটে মানুষের সাথে সেটা অতীত হয়ে গেলে ও মানুষ সহজে ভুলতে পারেনা।
বর্তমান নিয়ে চলার পথে বারবার অতীত সামনে আসে। অতীত ছাড়া আবার কিন্তু ভবিষ্যতে এগিয়ে যাওয়া যায়না, কারণ আমরা অতীত থেকে শিক্ষা নিয়েই ভবিষ্যৎ ঠিক করতে চাই