নারায়নগঞ্জে প্রথম দিন কাটানোর পর, পরদিন হবে আশপাশটা ঘুরে দেখার। এবং আছে মুখ্য দুটি জায়গা। পানাম নগর আর বৃহৎ আদি লোকনাথ মন্দির।
সাধারণত লোকনাথ মন্দিরের খবর তেমন কেউ জানেনা বা যাওয়াটাও খুব একটা সহজ নয়।
ত যাহোক,পরদিন সকালে উঠবেন আস্তে-ধীরে।
নাস্তা পানি খেয়ে রওনা দিবেন সোনারগাঁওয়ের উদ্দেশ্যে। ভুলে যাওয়া চলবেনা, ঐতিহ্যবাহী পোষাক পরে যেতে হবে।
- ছেলে হলে কাবলি পাজামা আর ঢিলেঢালা পাঞ্জাবি পরবেন।
- মেয়ে হলে লাল-পেড়ে সাদা শাড়ি। সেটার সাথে রঙ মিলিয়ে রিনিঝিনি কাঁচের চুড়ি। আজাক্ল কাঠের এস্থেটিক গয়না পাওয়া যায়; চুড়ি-মালা-কানেরদুল-আংটি সব সমেত, সেসবও পরতে পারেন! কপালে লাল টিপ অত্যাবশকীয়।
১০/১১টা করে রওনা দিবেন।
চিটাগং রোড থেকে বাসে উঠে সোনারগাঁও। বাস থেকে নেমে রিক্সা বা অটোরিকশায় প্রথমেই চলে যাবেন সোনারগাঁও জাদুঘরে।
যেখানে জামদানী জামাকাপড়, নকশীকাঁথা আর পাবেন ঐতিহ্যবাহী মাটির তৈজসপত্র ও বাহারি ঢঙের সাজিয়ে রাখার সব জিনিস। বাজার থেকে দু একটা স্যুভেনির নিয়ে নিতে ভুলবেন না।
জাদুঘরের পেছনে আছে হালকা খাবার দাবারের আয়োজনে কয়েকটা দোকান। যদিও তাদের চা একেবারেই জাতের না, তবে অন্যান্য সুপেয় কোমল পানীয় আছে।
অ্টাআর আছে চমৎকার বাগান-বাড়ির আবহের মাঝে একটা পুকুর। আর তাকে ঘিরেই বিশাল বাগান। ভাগ্য সুপ্রসন্ন হলে সে শান্ত, সুন্দর পুকুরে নোকা চালানোরও সুযোগ হতে পারে।
একটু হাওয়া বাতাস খেয়ে পানাম নগরের উদ্দ্যেশ্যে রওনা দিন। মনে রাখতে হবে পানাম নগরে যেহেতু অনেক সময় অতিবাহিত করবার প্রয়তোজন আছে তাই সেভাবে সময় হিসেব করে যেতে হবে। যাতে পরে পস্তানোর সুযোগ একেবারেই না থাকে।
এ হচ্ছে পানাম নগরে ঢোকার প্রধান ফটক।
বলা হয়ে থাকে ঈসা খাঁর সময়ে পানাম ছিল খানদানি ব্যবসায়ীদের বানানো এলাকা।
যাকে বলা হয় তখনকার সময়ের বনেদি পরিবারের বাস। অনেকটা বর্তমান সময়ের নাম করা রেসিডেনশিয়াল এলাকার মত!
পথিমধ্যে যেতে যেতে দেখবেন কদবেল বিক্রি হচ্ছে। একখানা কদবেল ভালো করে কাসুন্দিসহ মাখিয়ে নিয়ে খেতে খেতে, খুব চমৎকার কারুকার্য খচিত সেসব বাড়িঘরের সৌন্দর্য দেখতে দেখতে ঘুরে বেড়ান নগরীর এমাথা থেকে ওমাথা।
** বালিকারা অত্যাবশ্যকীয় পুরোনো ভাব-গাম্ভীর্যে কিছু ছবি নিতে ভুলবেন না!**
ভর দুপুরে ভাত ঘুম ফাঁকি দিয়ে, মায়ের চোখ এড়িয়ে পাড়া বেড়ানোর বালখিল্যে মেতে থাকা দুই কিশোরী!
পানাম নগরী দেখেই অনেকে ফিরে আসেন। আমি বলবো এখনি না!
পানাম নগরীর শেষ মাথা দিয়ে একটা পায়ে চলা পথ দিয়ে প্রধান রাস্তায় চলে যান। একটা অটোরিকশা ভাড়া করে চলে যান আদি লোনাথের মন্দিরে।
সম্ভব হলে সূর্যাস্তের আগেই পৌঁছে যান সেখানে। ঘন্টা খানেকের রাস্তা অটোরিক্সায়।
সূর্যদেবের সাথে শুভদৃষ্টি! দেখবেন বিকালের সূর্যাস্তের আবহে বা সন্ধ্যার চিত্রে মন্দিরটি কেমন অভাবনীয় আভা ছড়ায় মান্নত-মানার গাছটির চারপাশে!
মন্দির ঘুরে ফেরার পথে কেজি দু'এক সন্দেশ নেবেন অবশ্যই। খুবই সুস্বাদু মন্দিরের সামনে বিক্রি করা এই সন্দেশ। তারপর আস্তে-ধীরে রওনা দিয়ে নারায়ণগঞ্জ চলে আসুন।
এরপর যদি নদী'র মত কোনো ছোটো বোন থাকে, রাতে পেট ভরে নদীর মাছ, বেগুন ভাজা আর মুগের ডাল দিয়ে গরম গরম ভাত খেয়ে নারায়ণগঞ্জ যাত্রার ইতি টানবেন।
নয়তো খানপুর গিয়ে পেটপুরে খেয়ে নেবেন আগের দিনের মত।