City of Old School- প্রথম খন্ড

আপনি যদি মারিও পুজো'র বই গড ফাদারের (The Godfather) একনিষ্ঠ ভক্ত হয়ে থাকেন, আপনাকে নারায়ণগঞ্জ দেখতে হবে রয়ে সয়ে।

যদিও আমর-মিয়া আবারও বিরক্ত হয়ে বলবে "আরে!!! ঘোড়ারডিম শহরে আবার দেখার কী আছে! তোমার কী জীবনের উদ্দ্যেশ্যই হয়েছে শুধু বাজার, মানুষ আর যতসব অখাদ্য ট্রিপ প্ল্যান করেবার জন্য!?"

পুরো নারায়ণগঞ্জেই একটা ওল্ড-স্কুল ঘ্রাণ যা আমাকে সম্মোহিত করেছে নারায়ণগঞ্জের অলি-গলিতে ঘোরার সময়।
কেমন যেন ভিটো কর্লিয়নির মত কোনো গডফাদারের শহর মনে হবে! (অবশ্য বাস্তব ডন কর্লিয়নির ছায়া যে শহরের উপর একেবারেই নেই তা অস্বীকার করা যাবেনা যাঁদের অন্তত নাঃগঞ্জের রাজনীতি নিয়ে একটুও ধারণা আছে)

নাঃগঞ্জকে দেখে ঠিক বিভাগীয় শহর মনে হবেনা। আবার এ জায়গার সাথে বাহ্যিক সব লেনদেন বা যোগাযোগ বন্ধ করে দিন; কিন্তু দিব্যি দিনানিপাত হয়ে যাবে এ শহরের!

একটা শহর, পুরনো ঐতিহ্যের ঘ্রাণ বুকে নিয়ে আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে চলছে বলেই ধারইণা হলো আমার।

যেতে চাইলে সকাল সকাল যেয়ে নারায়ণগঞ্জ নামবেন!
আমি যেবার গেলাম, চাষাড়া নেমে ব্যাটারি-চালিত অটোরিক্সায় উঠলাম।
যেতে যেতে দেখি রাস্তার দু'পাশে রঙিন পর্দায় ঢাকা সামিয়ানা! যেনো কারো বিয়ে! পরে জানা গেলো কেউওক্রাডং বা মৌদক মুয়াল সমান উঁচু উঁচু ময়লার ডিবি আড়াল করতে এই অভিনব ব্যবস্থা!

যাহোক, শহরে যেয়েই তড়িঘড়ি করা যাবেনা।
প্রথম দিন আলসেমিই করুন।
হাজিগঞ্জের কেল্লা দেখুন ঘুরে ঘুরে, আদমজী দিয়ে একটা চক্কর কাটুন।
একটা রিকশা ভাড়া করে খানপুরের আশেপাশের একতা এলাকা চক্কর দিন। ভালোই লাগে রাস্তাগুলো দিয়ে ঘুরতে।
একটু শীতলক্ষ্যার ধারে বসুন, দুটো বাদাম খান!

শেষ বিকেলের দিকে কিল্লাপুরে যেয়ে কেল্লা দেখে আসতে হবে। কেল্লার পৌরাণিক সিঁড়িতে বসে কিছুক্ষণ চেষ্টা করলে হয়তো দু'চার লাইনের "কোবতে"ও রচনা করে ফেলবেন।
তারপর সাঁঝ পড়ে এলে চলে আসুন খানপুরে। চা'এর আড্ডায় বসতে হবে।

যা বলেছি, নাঃগঞ্জ আপনাke ঘুরতে হবে আয়েসী বিকালের আলস্যে চা'এর চুমুকের মত।

চায়ের আড্ডায় শামিল করতে হবে নারায়ণগঞ্জের স্থানীয় কোনো নার্ডকে!
তারপর শুনবেন এক বাস্তব ভিটো কর্লিয়নির বেড়ে ওঠা এবং ডন কর্লিয়নি রূপে আধিপত্য বিস্তার করবার উপাখ্যান।

QEBHQRWEF.jpg

বক্তা যদি হয় আমাদের মিয়া তামজিদের মত, সেক্ষেত্রে চত্ত্বরে বসে চা'এর কাপে চুমুক দিতে দিতে জুলুজুলু চোখে স্বপ্নালু হয়ে আপনি কল্পনাতে দেখতে পাবেন যেন মারিওপুজো'র গডফাদারের এক জ্যান্ত চিত্র!
সেই গল্পের শেষ পর্যায়ে,
খানপুর মোড়ে বসে গরম গরম লুচি আর মুরগীর রানের চাপ খেয়ে, ঢোক ঢোক করে ক'গ্লাস লেবু শরবত খান।

সবশেষে বিসমিল্লাহ করে বাসস্থলের দিকে হেলেদুলে যাত্রা করবেন রাতের নারায়ণগঞ্জ দেখতে দেখতে!
চাইলে যাবার পথে চক্কর মেরে যেতে পারেন মেয়র সাহেবা'র উদ্যোগে ঢাকার হাতির ঝিলের মত ডি&ডি প্রকল্পটি! এতদিনে হয়তো শেষ হয়েছে সে অভিনব কর্ম। আমি যেবার দেখেছিলাম, তবে মাত্র সাজগোজ শুরু হচ্ছিল।

এখানেই শেষ না!
এরপর আছে পানাম নগরীতে খুঁজে পাওয়া বালখিল্য কিশোরীদের কথা আর লোকনাথ মন্দিরে সূর্যদেবের সাথে শুভদৃষ্টির গল্প।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now