অপেক্ষিত হাসি(Part-1)

অপেক্ষিত হাসি

বাসর ঘর,নিস্তব্ধ পরিবেশ। সাকিব এসে আস্তে অাস্তে খাটের পাশে দাঁড়ালো। শিউরে উঠা অবণীর দুু চোখ দিয়ে হঠাৎ অবিরাম জল গড়িয়ে পড়ছে।রাগ,অভিমান নয়তো কোনো অপরাধের অনুতপ্ততায়। সাকিব মৃদু হেসে বলল,"অনেক রাত হয়েছে,ফ্রেশ হয়ে ঘুমিয়ে পড়ুন।"অবণী কিছুটা অবাক চোখে সাকিবের দিকে তাকালো।ছেলেটা আশ্চর্য রকমের বিস্ময় সৃষ্টি করে কোনো কিছু না বলে বারান্দায় গিয়ে বসলো।অবাক চোখে শুয়ে শুয়ে অবণী সাকিবকে বুঝার বৃথা চেষ্টা করছে।

1430978030_statusy-pro-lyubov-i-o-lyubvi-19.jpg
Photo

একমনে ইজি চেয়ারটাতে বসে সাকিব সিগারেট টানছে।আজকের দিনটা সত্যিই আজব।মায়ের কথায় না দেখে অবণীকে বিয়ে করেছে সে।বিয়ের আগে কোনো কথা হয়নি।গাড়িতে আসার সময় অাশ্চর্যজনক ভাবে অবণী একটুও কান্না করে নি।যেন সেখান থেকে কোনোমতে বেরিয়ে আসলেই বাঁচে।বাসর ঘরে হঠাৎ অবণীর কান্না করা সাকিবকে ভাবাচ্ছে।নিশ্চয় মেয়েটা বাড়ির কথা মনে পড়ে কাঁদছে।

সিগারেট টানতে টানতে সাকিব কখন ঘুমিয়েছে তার নিজের মনে নেই।মায়ের ডাকে ঘুম ভাঙ্গে সাকিবের।"তুই কি সারারাত এখানে ঘুমিয়েছিস?"
সাকিব জবাব না দিয়ে ফ্রেশ হতে চলে যায়।বিষয়টা বড়ই উদ্ভট লাগে অবণীর।স্বভাবগত কৌতূহলী হয়ে শাশুড়ি মাকে জিজ্ঞেস করলো,"কি হয়েছে মা উনার?"
সাকিবের মা বলল,"সাকিব তিথি নামের একটা মেয়েকে ভালবাসতো,মেয়েটি ও সাকিবকে খুব ভালবাসতো।বিয়ে ঠিক হয়েছিল তাদের কিন্তু একটা রোড এক্সিডেন্টে মেয়েটি মারা যায়।বিষয়টি সাকিব সহজে মেনে নিতে পারে নি।অন্ধকারে থাকতো সব সময়।সিগারেটে ভিতরটা পুড়িয়ে দিচ্ছে।অনেক কষ্টে তাকে তোদের বিয়েতে রাজি করিয়েছি।"

শুনতে শুনতে অবণীর চোখে অশ্রু দেখা দিলো।হায়রে ভালবাসা ! কেউ হাজার চেষ্টায় পায় না আর কেউ পেয়েও হারিয়ে ফেলে।শাশুড়ি অবণী দু'হাতে হাত রেখে বলল,"আমাকে কথা দে মা,তুই আমার সাকিবকে স্বাভাবিক জীবনে ফিরিয়ে আনবি?
মায়ের আকুলতায় না করতে পারলো না অবণী,কর্তব্যের বন্ধনে থাকা সম্পর্ক পালনের সাথে সাথে আরও একটি দায়ভার নিলো।

maxresdefault.jpg
Photo

মায়ের বলা প্রতিটা কথাই কানে গেলো সাকিবের।একটু মৃদু হাসলো,এতটুকু মেয়ে কি দায়িত্ব নিবে তার?আত্মীয় স্বজনের সাথে আরও একটি ব্যস্ত দিন পার করলো সাকিব।ক্লান্ত হয়ে বিছানায় গা এলিয়ে দিতেই বোন অবণীকে ঘরে দিয়ে গেলো।সাকিব বিছানা ছেড়ে সোফায় যাবার উদ্বেগ করতেই,
আপনাকে উঠতে হবে না,আমি সোফায় শুয়ে পড়ছি।

সাকিবের সাথে অবণীর বলা প্রথম কথা।কন্ঠটা সাকিবের কাছে খুব মিষ্টি লাগলো।
না,তা হয় না।আপনি বিছানায় ঘুমোন।
আচ্ছা,ঠিক আছে।কাউকে যেতে হবে না।দুজনেই বিছানায় থাকি।মাঝখানে না হয় বালিশ দেয়া থাকবে?
একটু ভেবে সাকিব বলল,"আচ্ছা,ঠিক আছে।"
এক বিছানায় দুজন কিন্তু কেউ কথা বলছে না,কত অপরিচিত ওরা দুজন?

দিন যেতে থাকে,কিন্তু তাদের আচরণে পরিবর্তন হয় না।অল্প কথা বলা,আর গম্ভীরতায় ভরা তাদের সময়।তবে অবণী সাকিবের খুব কেয়ার করে।সাকিব আস্তে আস্তে অবণীর কেয়ারিং এ আগের দুঃস্বপ্ন থেকে বেড়িয়ে আসতে থাকে।সাকিব বুঝতে পারে সে অবণীর প্রতি দূর্বল হয়ে পড়েছে।লুকিয়ে লুকিয়ে অবণীর অগুছালো চুলে মায়াময়ী চেহারা দেখতে সাকিবের খুব ভালো লাগে।অবণীর মুখে সচরাচর হাসি দেখা যায় না,চুপচাপ নিজের দায়িত্ব পালন করে যায়।বিষয়টি সাকিবকে খুব ভাবায়।

maxresdefault.jpg
Photo

সাকিব সন্ধায় যখন ঘরে ফিরে দেখে অবণী বোনের মেয়ের সাথে খেলা করছে আর হাসছে তখন সাকিব আর একবার অবণীর প্রেমে পড়লো।তাকে দেখে অবণী হঠাৎ চুপ হয়ে যায়।সাকিবের খুব ইচ্ছে অবণীকে নিজের মত করে সাজে দেখতে।তাই সাথে করে আনা নীল রং এর শাড়িটা অবণীকে উপহার দেয়।বিয়ের পর দেওয়া সাকিবের প্রথম উপহার কিন্তু অবণীর মুখে তেমন হাসি নেই।সাকিব অবাক হয় না।

@ohimahathir

#vote #comment #follow

ME

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now