পৃথিবী সৃষ্টির পর থেকে তিনটি কাল প্রচলিত হয়েছে। একটা অতীত কাল,বর্তমান কাল,এবং ভবিষ্যত কাল। আর এই তিনটি কালের মধ্যে কোন সময়টা আমাদের কাছে ভালো। আজ সেটি নির্বাচন করব।
অতীত কালঃ আমরা যেসকল সময় অতিবাহিত করে এসেছি সেটি হল অতীত কাল। এই সময়ে আছে আমাদের সেই শৈশব জীবন। তখন আমাদের দেশটা তেমন উন্নয়নশীল ছিল না। তাই প্রযুক্তির বিরুপ প্রভাব ও ছিল না। তখন লোকসংখ্যা ছিল কম এবং জমি জমা ছিল অনেক। তাছাড়া অনেক বনজঙ্গল,গাছপালা,আর ফাঁকা মাঠ ছিল। সবাই সুখের মধ্যে দিন কাটাত। তখন ধনী আর গরিবের মধ্যে কোন বৈষম্য ছিল না। সকল ধর্মের মানুষ একসাথে দিন কাটিয়ে দিত। কিন্তু এই অতীত কাল প্রত্যেকটি মানুষ পার করে এসেছে। আর এই সময়টি নতুন করে আর কারো জীবনে আসবে না। সবুজের সমারোহ,আর শৈস্য শ্যামলায় ভরপুর ছিল আমাদের প্রত্যেকের দেশ। তখন প্রযুক্তির কোন বিরুপ প্রভাব মানুষকে স্পর্শ করে নি। তাই অতীতের মানুষ গুলোর গড় আয়ু ১০০+ ছিল। কিন্তু দিন অতিবাহিত হবার পর আমাদের কাছে এসেছে বর্তমান কাল।
source
কুফলঃ অতীত কালে মানুষের অভাব জিনিসটা প্রখর ছিল। তখন কেউ গাছের ফল মূল খেয়ে থাকতো। তবে অভাব জিনিসটা তাদের মধ্যে থাকলেও নিতী নৈতিকতা ছিল তারা খোদা ভিরু ছিল। তখন মাঠের পর মাঠ ছিল। তা দেখলে মন জুড়িয়ে যেত আর সৃষ্টি কর্তার কথা ভাবত। তখন পরিবেশ ছিল খুবই সুন্দর। কলকারখানার তেমন বিষাক্ত ধোয়া ছিল না। এত শব্দ দূষণ ছিল না। এক কথায় অতীতের তেমন কোন কুফল খুজে পাওয়া যায় না। কিন্তু আমাদের কাছ থেকে হারিয়ে যাওয়া সময় গুলো আর ফিরে আসে না। আর আমরা সেগুলোই মিস করি।
বর্তমান কালঃ অতীতকে ছাড়িয়ে আমাদের কাছে এসেছে বর্তমান কাল। একজন মানুষের এই সময়টাই হল বর্তমান কাল। অনেক ধ্যান আর সাধনার মাধ্যমে বিজ্ঞানীরা পৃথিবীকে এগিয়ে নিয়ে এসেছে। মানুষের অনেক কাজ কে সহজ করে তুলেছে। বিভিন্ন ধরনের যন্ত্র আবিষ্কার করে পৃথিবীকে উন্নয়ন করেছে। পরিশ্রম বলতে আমাদের কাছ থেকে দুরে চলে যাচ্ছে। কেননা আমাদের সকল পরিশ্রমের কাজ এখন যন্ত্র করছে। বিভিন্ন ধরনের গাছপালা কেটে শিল্প কলকারখানা তৈরি হয়েছে। বর্তমান সময়ে অনেক লোকজন হয়েছে। সেই সাথে ধনী লোকোর রাজত্ব চলছে এই পৃথিবীতে।তবে আগের সময়ের তুলনায় এখন শিক্ষার হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ বিশ্বকে আমাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে বিজ্ঞানীরা। আমরা ঘরে বসেই বিভিন্ন দেশের খবর পেয়ে যাই। তাছাড়া বিনোদন হিসাবে আমরা টেলিভিশন,রেডিও,মোবাইল ফোন ইত্যাদি ব্যবহার করি। এক কথায় আমাদের প্রয়োজনীয় সব জিনিস এই বর্তমান কালে পেয়েছি।
source
কুফলঃ বর্তমান কালে বিশ্ব হাতের নাগালে এসেছে। এই সময়ে মানুষ উন্নত হবার জন্য বিভিন্ন কলকারখানা,গাড়ি,তৈরি করা হচ্ছে। তাছাড়া গাছপালা কেটে ঘরবাড়ি তৈরি করা হচ্ছে। বর্তমানে এত বিষাক্ত গ্যাস হয়েছে যে আমরা বিভিন্ন অসুখে আক্রান্ত হচ্ছি। বিশেষ করে ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, ইত্যাদি আক্রান্ত করছে। মানুষের সৃষ্টি প্রযুক্তি গুলো আমাদের উপকারের পাশাপাশি বেশি ক্ষতি করছে।আর আমরা সহজেই মূল্যবান জীবনটা হারিয়ে ফেলছি।
ভবিষ্যত কালঃ সেই পুরোনো অতীত আর বর্তমানকে ছাড়িয়ে আমাদের কাছে হাজিড় হবে ভবিষ্যত কাল। হয়ত বা সেই সময়টায় আমাদের কোন চাওয়ার থাকবে না। কেননা আমরা সেদিন এমন উন্নয়নশীল হবো যে অভাব জিনিসটা আর থাকবে না। সেদিন সবাই ধনী লোক হবে। কেউ আর কৃষক,শ্রমিক,কুলি বলে আর অপমান হবে না। সেই সময় আরো নতুন নতুন প্রযুক্তির সৃষ্টি হবে। বর্তমান সময়ে কারো কাছে আই ফোন দেখে অন্য জনের আপছোস হয়। কিন্তু সেদিন আই ফোনের চেয়েও দামি ফোন সবাই ব্যবহার করবে। তবে তাদের মধ্যে কোন কিছুর অভাব না থাকলেও,একটা জিনিসের অভাব থাকবে। আর সেটা হলো যৈন। আর তখন মানুষের মধ্যে ইসলামের চিহ্ন থাকবে না। সবাই তখন আমাদের নবি আর খোদাকে ভুলে যাবেন।
source
কুফলঃ ভবিষ্যতে আমরা আমদের পৃথিবীকে হারিয়ে ফেলব।সেদিন আমরা উন্নত হয়েই বা কি লাভ হবে। বিষাক্ত ধোয়া,আর গ্রীণ হাউস গ্যাস ছাড়া পৃথিবীতে আর কিছুই থাকবে না। তখন আমাদের গড় আয়ু খুব কমে যাবে। খোদাকে ভুলে যাবে সবাই। সেদিন মানুষের জীবনটা মানুষেই নিবে।
ফলাফলঃ
এই তিন কালের মধ্যে আমাদের কাছে অতীত কালটাই অন্যতম। আর অন্যান্য সময় গুলোর মধ্যে অতীত সময়েই ভালো। যতই অভাব থাকনা কেন, মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব ছিল। কিন্তু বর্তমান আর ভবিষ্যত আমাদের জন্য অভিশাপ।এই দুই সময়ই আমাদের মানুষের মধ্যে মনুষ্যত্ব নেই। আছে শুধু অভিশাপ। আর ভবিষ্যতে আমারা সব কিছুই হারিয়ে ফেলব। আমাদের দ্বীণ আর সেই সাথে এই পৃথিবী।
তাই বলা যায়, অন্যান্য সময়ের মধ্যে অতীত সময়টাই আমাদের সবার জন্য ভালো।
(আপনার মতামত চাই।)