ভুল সিদ্ধান্ত ও একটি প্রতিভার অপমৃত্যু

pass.jpegকৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন বিশ্বের প্রথম মোহনীয় রোবট সোফিয়ার সাথে Alan Turing এর নাম কোন না কোন ভাবে যুক্ত থাকবেই।

কারণ তথ্য বলে, ১৯৫০ সালেই Alan Turing এ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা নিয়ে যথেষ্ট কাজ করেছিলেন। আর আজকের সোফিয়া তারই কাজের ধারাবাহিক ফসল।

জানাতে চাচ্ছি, Alan Turing এর ব্যাপারে বেশ চমকপ্রদ কিছু তথ্য। Alan Turing একাধারে গণিতজ্ঞ, দার্শনিক, cryptanalyst, Computer scientist, theological biologist। তবে তিনি Father of theoretical computer science and artificial intelligence হিসেবেই বেশি সমাদৃত হন।

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে নাৎসি বাহিনীকে পরাস্ত করার অন্যতম নায়ক ছিলেন এ Turing। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে উনি ব্রিটেনে Government Code and Cypher School এ কর্মরত ছিলেন।Turing এমন এক পদ্ধতি বের করলেন যা দিয়ে শত্রুপক্ষের তথ্যগুলো cipher করা যেত; অর্থাৎ code দ্রুত ভেঙ্গে গোপনীয় তথ্য জানা যেত।

Turing ছোটবেলা থেকেই একা একা থাকতেন। সহপাঠীদের সাথে তেমন মিশতেন না। পরিণত বয়সে একমাত্র ঘনিষ্ট বন্ধু ছিলো Christopher Morcom। অনেকেই Morcomকে Turing এর "First love" বলে থাকেন।

Tuberculosis এ Morcom এর হঠাৎ মৃত্যু Turing কোনভাবেই মেনে নিতে পারেননি। বলা হয়,এ ঘটনার জন্যই তিনি atheist হয়ে যান এবং materialistic life বেছে নেন।

১৯৫২ সালে ১৯ বছরের Arnold Murray এর সাথে তাঁর পরিচয় হয়। নিজের কাজে লাগানো যাবে ভেবে তিনি Murray কে নিজের বাসায় থাকতে দেন।

২৩ জানুয়ারি, ১৯৫২। Turing এর বাসায় চুরি হওয়াতে তিনি পুলিশ কল করলেন। আর এর সাথে নিজের দুর্ভাগ্যকেও ডেকে আনলেন।

পুলিশ তাদের সাথে কথা বলার সময় সন্দেহ করেছিলেন Alan Turing একজন সমকামী। জিজ্ঞাসাবাদের Turing তা স্বীকারও করেন। অবশ্য তাঁর পরিবারের কেউ আজও মানতে চায় না Turing সমকামী ছিলেন।

তৎকালীন ব্রিটিশ সমাজে সমকামিতা ছিলো জঘন্য অপরাধ। ফলে Criminal Law Amendment Act 1885 ( Section 11) অনুযায়ী অপরাধী Turing কে ১ বছরের সাজা দেওয়া হয়। অবশ্য তাঁকে অন্য আরেকটি প্রস্তাবও দেওয়া হয়। যদি তিনি যৌনাসক্তি কমাতে হরমোন চিকিৎসা গ্রহণ করেন তবে তাকে জেল খাটতে হবে না।

নিজের একাডেমিক ক্যারিয়ার বাঁচাতে Turing দ্বিতীয় প্রস্তাব মেনে নেন। আর এভাবেই তিনি নিজের পায়ে নিজেই কুড়াল মেরেছিলেন।

হরমোন চিকিৎসায় তাঁর যৌনাসক্তি কমতে থাকে। Turing ধীরে ধীরে impotent হতে থাকেন।
ফলে তিনি অস্বাভাবিক বিষন্নতায় ভুগতে ভুগতে ক্রমে মৃত্যুর দিকে যেতে থাকেন।

১৯৫৩ সাল। Turing তখন computer এ chess programming নিয়ে কাজ শুরু করলেন। কিন্তু নিজ টেলেন্টের উপর ততদিনে তিনি আস্থা হারিয়ে ফেলেছিলেন।

Turing নিজ সম্পর্কে বলতেন - তিনি এখন এক অন্য মানুষ, যার ক্যারিয়ার বাঁচাতে এতকিছু তাকেই তিনি খুঁজে পাচ্ছেন না।

অনেক পরে তিনি বুঝেছিলেন তাকে মূলত এ ধরনের চিকিৎসার গিনিপিগ বানানো হয়েছে। শোনা যায়, তাঁর শরীরেও ধীরে ধীরে মেয়েদের শারীরিক গঠনের লক্ষণ দেখা যাচ্ছিলো যা তাকে প্রচন্ড লজ্জা আর সর্বনাশা হতাশার দিকে ঠেলে দিয়েছিলো।

১৯৫৪ সালে নিজ বাসায় Turing কে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। পুলিশ তদন্তে বলা হয়, তিনি সায়ানাইড খেয়ে আত্মহত্যা করেন।

এভাবেই মাত্র ৪২ বছর বয়সে এক নক্ষত্রের পতন হয়।


[ি:: British Prime Minister Gorden Brown   Alan Turing    ি ি        ি   িি     
H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now