ঈমাম আবু হানিফা (রহঃ) ছিলেন ফিকাহ (ইসলামি মাসলা ও মাসায়েল) শাস্রের উদ্ভাবক। চার ইমামের মধ্যে তিনিই একমাত্র তাবেঈন যিনি একাধিক সাহাবীদের দেখেছেন। তিনিই প্রথম ইসলামী আইনশাস্র কিতাবাকেরে লিপিবদ্ধ করান।
ঈমাম আজম আবু হানিফা (রহঃ) শৈশবকাল থেকেই অত্যন্ত মেধাবী, প্রখর বুদ্ধিমত্তা ও অসাধারণ স্মৃতিশক্তির স্মৃতিশক্তির অধিকারী ছিলেন। শৈশবকালে তিনি পবিত্র কুরআনে করিম হিফজ করেন। কুরআন তিলাওয়াতের প্রতি তার খুব আসক্তি ছিল। তার সাধারণ অভ্যাস ছিল প্রতিদিন দুই খতম করা অর্থাৎ মাসে ৬০ খতম পড়তেন। রাতে তাহাজ্জুদে ও দিনে নফল নামাজে। রমজান মাসে ৬১ খতম করতেন,এক খতম তারাবীতে।যে সারা বছর এক খতমও করে না সে সন্দেহ করবে।
একদিন ঈমাম আযম আবু হানিফা (রহঃ)এর মজলিসে জনৈক যুবক উপস্থিত হয়ে জিজ্ঞেস করল, এ পযন্ত অাপনি যত ইজতেহাদ করেছেন এর মধ্যে এমন কোন ইজতেহাদ আছে কি যার ফলে পরবর্তীতে দুঃখ বোধ করেছেন?
ঈমাম আযম আবু হানিফা (রহঃ) বলেন, হ্যাঁ একটি ইজতেহাদের জন্য এখনো আমার দুঃখ হয়। সেটি হল , একবার কিছু লোক আমাকে জিজ্ঞেস করেছিল যে,এক গর্ভধারিনীর মৃত্যু হয়েছে তার পেটে বাচ্চা নড়াচড়া করতে দেখা যাচ্ছে। এমতাবস্থায় কি করা যেতে পারে?
আমি বললাম, মহিলার পেট কেটে বাচ্চা বের করে নিন। অতপর আমি চিন্তা করলাম যে, এ ফয়সালাটি কেমন হল? একটি মৃতদেহকে আমি কস্ট দেয়ার হুকুম কেন দিলাম? এছাড়া পরবর্তীতে পেটের ভিতর থেকে বের করা সেই বাচ্চাটি জীবিত ছিল, না মৃত তাও জানতে পারিনি। তাই আমি সেই ইজতেহাদের কারনে এখনো আফসোস করি। প্রশ্নকারী তখন আরয করল, হযরত! এটি তো আফসোসের কথা নয়। আমিই সেই মায়ের পেটের বাচ্চা। আপনার ইজতেহাদের বরকতে আল্লাহ আমাকে জীবন দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালা আপনাকে উত্তম প্রতিদান করুন।
যেহেতু হুজুর (সাঃ) এর জামানা ও পরবর্তিতে সাহাবীদের জামানায় এই সমস্যা তৈরি হয় নাই তো সমাধানও ছিল না। কিন্তু ঈমাম আজম আবু হানিফা (রহঃ) যে ফয়সালা দিযেছিলেন তা আজ মুসলমান ও অমুসলমান সারা দুনিয়া মানতেছে।
এই মাসায়েলের ব্যাপারে উনি ১৩০০ ব্ছর আগে যে সমাধান দিয়েছিলেন তাতে তার প্রখর জ্ঞানের দূরদর্শীতা প্রমাণিত হয়। (...চলবে)