বৃষ্টি-বিলাস

আমি চাইলেই একটা পাকা দালান বানিয়ে থাকতে পারি,
কিন্তু আমি এই টিনের দোচালা ঘরে থাকি..
জানো কি তার কারণ???

কারণ টিনের ঘরে বৃষ্টিকে নিজের মতো করে উপভোগ করা যায়,
মন ভোলানো বৃষ্টির গান শোনা যায়।

কথাগুলো জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের। উনি উনার "নয় নম্বর বিপদ সংকেত" এর একটা চরিত্র দিয়ে বলেছিলেন। তিনি তার নুহাশ পল্লীতে যে বাংলো বাড়ি বানিয়েছেন, তার নাম দিয়েছেন "বৃষ্টি বিলাস"

বৃষ্টির নিজস্ব একটা গান আছে। আছে তার মন ভোলানো সুর। শহরের যান্ত্রিক পরিবেশে যার ছোঁয়া পাওয়া যায় না। যা উপলব্ধি করার জন্য প্রয়োজন গ্রামের সবুজ পরিবেশ।

আমি একজন গ্রাম্য ছেলে, গ্রামের মাঠেঘাটে দাপিয়ে আমার বেড়ে ওঠা। নদীতে ঝাঁপিয়ে বেড়ানো বা মাঠে দাপিয়ে বেড়ানো, উভয়ই করা হতো আমার। কিন্তু এই দুইটা কাজেই আনন্দের খোঁড়াক এনে দিতো বৃষ্টি।

বৃষ্টিতে গ্রাম্য মাঠে ফুটবল খেলা, নদীতে সাঁতার কাটা এই সবই ছিলো আমার পছন্দের শীর্ষে।

ইন্টারমিডিয়েট পড়ার সময়কার একটা কথা মনে হচ্ছে,একদিন আমরা তিন বন্ধু আমি, আদনান & রহমত বৃষ্টি বিলাসে বের হয়েছিলাম। আমাদের বিলাস টা ছিলো ঝুম বৃষ্টিতে এক ছাতায় তিনজন ঘুড়ে বেড়ানো। সেই সময়কার বৃষ্টির উপলব্ধি এখন আর টের পাওয়া যায়না। এখন জীবিকার তাগিদে একটা শহুরে কীট হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার লক্ষে আছি।

আমার অনার্স লাইফে একবার আমার বউকে নিয়ে বৃষ্টি বিলাসে মত্ত হয়েছিলাম। তখন সে আমার প্রেমিকা ছিলো। একদিন দুজন এক ছাতায় গ্রাম ভ্রমণে বের হয়েছিলাম। বৃষ্টিতে গ্রাম্য রাস্তায় গার্লফ্রেন্ড নিয়ে হাঁটা জীবনের শ্রেষ্ঠ বৃষ্টিবিলাসের স্মৃতি হয়ে এখনো রয়ে গেছে।

আজ বহুবছর পর বৃষ্টিবিলাসে মত্ত হয়েছিলাম। আমার অফিস কম্পাউন্ডে। ছোট্ট টিনের কুঠুরি তে। বহুবছর পর শুনলাম টিনের চালার বৃষ্টির শব্দ। ফিরে গেলাম সেই ছোট্ট বেলায়।

20200720_105720.jpg

#বৃষ্টি-বিলাস

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now