আসসালামু আলাইকুম
প্রিয় বন্ধুরা,
আমি @mubdi 🇧🇩বাংলাদেশ থেকে।
- আজ বুধবার
- ১৬ই ডিসেম্বর ২০২১ (মহান বিজয় দিবস)
স্বাধীনতার আনন্দে আত্মহারা
আহমদ ছফা সদ্য স্বাধীন দেশে ঢাকা শহরের যেখানেই যেতেন সেখানেই বুক চাপড়ে বলতেন, আহ! আমার বাংলাদেশ। বাংলাদেশ এতদিন তাঁর ছিল না। তিনি যেন বাংলাদেশটাকে হাতের মুঠোয় পেয়েছেন। তাই তাঁর আত্মহারা আনন্দ। দেশের পুরো ভূখন্ডে যদি গড়াগড়ি করা যেতো আহমদ ছফা আনন্দে তাই করতেন। হৃদয়ের গভীর থেকে কোনো কিছুর প্রতি ভালোবাসা থাকলে মানুষ যখন তা হাতে পেয়ে যায় তখন তার আনন্দের উচ্ছ্বাস বাইরে থেকে বোঝা যায়। আহমদ ছফার আনন্দটা পরিচিতরা দেখতে পেয়েছিলেন।
যুদ্ধের সময় তিনি কলকাতায় প্রবাসী সরকারের আশেপাশে ছিলেন। অনেক কিছুই দেখেছেন। সে সবের কিছুটা ছাপ তাঁর 'অলাতচক্র' বইতে আছে। শরনার্থী হিসেবে আশ্রয় নেয়া মানুষদের দূর্বিষহ জীবনও পরিলক্ষণ করেছেন।
যুদ্ধকালীন সময়ে কলকাতা থেকে প্রকাশিত হয় তাঁর 'জাগ্রত বাংলাদেশ' নামক বইটি। বাংলাদেশ ও বাংলাভাষা ছাড়া আহমদ ছফার যাপিত জীবনে কিছু ছিল না। ৫৮ বছরের স্বপ্লজীবনে অনাহারে-অভাবের সাথে লড়াই করে কাটিয়েছেন। কোনো চাকরি কিংবা ব্যবসা-বাণিজ্য করে আয়ের মসৃন পথও তৈরী করেননি। স্ত্রী-পুত্র-কন্যা তো ছিলই না। থাকলে তাদের নামে ব্যবসা খুলে এপথে সেপথে আয়-রোজগার করে ভেক ধরতে পারতেন। ভেক ধরতে না পারাটাই ছিল তাঁর কাল।
কাজী নজরুলের অভাব-অনটনের কথা বইয়ে পড়েছি কিন্তু আহমদ ছফার সাদামাটা জীবন চোখে দেখেছি। বাংলাদেশকে যিনি নিজের একমাত্র সম্পদ মনে করতেন তিনিই এই ঢাকা শহরে এত বাড়ি-গাড়ি,বিত্ত-বৈভবের ছিটেফোঁটাও উপভোগ করতে পারেননি। একটু ভালোভাবে খেয়েপরে থাকতে পারলে তাঁর আয়ু এত স্বল্প সময়ে ফুরিয়ে যেতো না। স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরের হুলুস্থল আনন্দের এই সময়ে বাংলাদেশের মনন বিধ্বংস করার যড়ষন্ত্রে পাক-বাহিনীর হাতে নিহত অগণিত বুদ্ধিজীবীকে স্মরণ করতে গিয়ে তাই বারবার আহমদ ছফার মুখোচ্ছবিটা চোখের সামনে ভেসে উঠছে।