লিরা বাংলাদেশ এর পাবনাতে আপাদত কয়েক বছর ধরে বসবাস করতেছে , কিন্কাতু এখন তার তার বাবার সরকারী চাকরির সুবাধে তাদের দিনাজপুরে নতুন বাসায় সিফট হওয়া লাগতেছে ,লিরা তার জীবনের সতের বছরের মধ্যে প্রায় ৩টি জেলায় থাকা হয়ে গেছে । আর ঠিক সেই কারণেই তার স্কুল জীবনে তেমন কোন বন্ধু হয়ে ওঠেনি, আর তাই সে একা থাকতেই পছন্দ করত, তার নিজের মনের ভিতরেই এক অন্য দুনিয়ার মাঝে বাস করত ।
একটি শহর থেকে আরেকটি শহর এটা কি চারটি খানিক কথা, কিন্তু লিরা এর চিন্তা হল অন্যদিকে তার কালথেকে নতুন স্কুলে যেতে হবে, নতুন স্কুল অপরিচিত এক জায়গা কি হবে প্রথম দিন তা নিয়েই জতসব চিন্তা।কথায় কথায় লিরার জীবন বৃত্তান্ত নিয়েই বলা হয়ে ওঠে নি , লিরা তার সতের বছরে পা দিল দুই মাস হইল আর সে ক্লাস নাইনে পরে। তার ক্লাস এইটের বার্ষিক পরীক্ষা শেষেই তার বাবার প্রমোশন হয়। আর যার ফলে বাবার নতুন কর্মস্থল এর জন্য তাদের দিনাজপুর আসতে হয়। তারা যেই বাসায় ওঠেছে সেটা একটা পুরনো জীর্ন-শীর্ন সরকারি ভবন। বাহির থেকে দেখতে পুরনো ভুতের বাড়ি থেকে মোটেও কম নহে কিন্তু বাড়ির ভিতরটা একদম সুন্দর পরিপাটি সুন্দর । তাদের যেই বাসাটা সরকারি কোয়াটার হিসাবে দেওয়া হয়েছে সেই বাসায় দুটি ফ্লাট যার কারনে এই বাড়িতে তারা একা নহে তাদের সাথে আরো একটি পরিবার বসাবাস করে,যারাই এই পুরনো জীর্ন-শীর্ন ভবনটার ভিতরে এত সুন্দর করে সাজিয়ে রেখেছে ,তারা এই বাড়িতে প্রায় তিন বছর ধরে বসবাস করতেছে। তারা লিরাদের বাসার মালামাল ঠিক জায়গায় মত রাখতে আর বাসা গুছাতে অনেক সাহায্য করেছে বিশেষ করে তাদের একমাত্র ছেলে যার নাম ''অন্তু'' , নামের সাথে তার ব্যবহার সবকিছুই মুগ্ধ করার মত। সে লিরার সমবয়সী এবং একই স্কুলে লিরার সহপাঠি। লিরা দেখল যে ছেলেটা তাদের সকল কাজেই সাহায্য করতে চাইতেছে কিন্তু তার বাবা-মা তাকে ভারি কাজ থেকে দূরে সড়িয়ে রাখার চেস্টা করতেছে, লিরা ভাবল অন্টি আংকেল হয়ত চাইতেসে না তদের ছেলে সাহায্য করুক তারপর লিরা দেখল তার বাবা মা ও চাইছেসে অন্তুু সাহায্য না করুক লিরা এই বিষয়টায় কৌতহলবশত তার আম্মুকে জিজ্ঞাসা করেই ফেল্ল ছেলেটা মন থেকে সাহায্য করতে চাইতেসে আর তোমরা তাকে সাহায্য করতে দিতেছ না কেন?কিন্তু লিরার আম্মু কোন সঠিক আন্সার না দিয়ে প্রস্নটা এড়িয়ে গেল।
এরপরের দিনের ঘটনা,লিরা তার স্কুলের জন্য প্রস্তুত হচ্ছিল স্কুলের তার আজ প্রথম দিন তাদের বাসা থেকে হেটে ৫ মিনিটের পথ কিন্তু সে বুঝতে পারতেছিল তার নারভ সিস্টেমে চাপ পরতেছিল নতুন স্কুলে আজ তার প্রথমদিন সেটাই হয়ত প্রধান কারণ তার বাবা-মার মতে কিন্তু আসলে সেটা প্রধান কারণ না প্রধান কারণ হল তার আজকের নতুন স্কুলের সহপাঠীরা তারা কি আগের স্কুলের মতই হবে নাকি তাদের সাথে তার নতুন কোন বন্ধু হবে।সে যখন বাসা থেকে বের হল তখনই অন্তুর সাথে তার দেখা, অন্তু লিরাকে দেখেই পরিচয় হয়ে নিল আর বল্লযে আমরা তহ একই স্কুলের এই ক্লাসে চল একসাথে স্কুলে যায়। লিরার একটু আনইজি ফিল করতেছে তার পরও অন্তুর রিকুয়েস্ট এর কারনে লিরা আর মানা করতে পারল না।
লিরা অন্তুর সাথেই স্কুলে গেল আর আসার সময় দেখল অন্তু তার জন্য স্কুল গেইটে দাঁড়িয়ে রয়েছে আর তারা একসাথেই বাসার উদ্দেশ্যে রওনা দিল। লিরার আজকে স্কুলের প্রথম দিনটা ভালই গিয়েছে প্রথমে তার শ্রেণি শিক্ষক লিরার সাথে তার ক্লাসের সবাইকে পরিচয় করিয়ে দিল আর তার ক্লাসের সবাই ও তার সাথে খুব ভাল্ভাবেই মিশে গেল আর লিরা অনেকগুলো বন্ধু ও নতুন স্কুলে এসে পেয়ে গেল কিন্তু অন্তু তাকে সবার সাথে মিশতে অনেক বেশি সাহায্য করেছে।অন্তুর বন্ধু সুলভ আচরণ এর আর তার সহজে কারোর সাথে মিশে যাওয়ার স্ভাবভের কারনে লিরার চোখে ছেলেটার জন্য একটু পজিটিভ থিংকিং জন্মাতে শুরু করল আর তার পরিমান আরোও বেশি হল যখন রাস্তার পাশে একটি কুকুরকে সে সাথে করে নিয়ে এসে বাসার সামনের চা এর দোকান থেকে একটি রুটি কিনে সেই কুকুরটাকে খাওয়াল, আর সে এটা প্রতিদিনই করত আর কুকুরটা অন্তু এর জন্য স্কুল ছুটির পর স্কুলের গেইটেই দাঁড়িয়ে থাকত আর বাসার গেইট পর্যন্ত আমরা তিনজন একসাথে আসতাম আর অন্তুও কুকুরটাকে খুব বেশি পছন্দ করত আর অন্তু লিরাকে দিনাজপুর শহরাটার প্রাই জাইগাতেই ঘুরতে নিয়ে যেত। লিরা দিনাজপুর এসে অনেক বেশি খুশি ছিল আর তার কখনো অন্তু এর মত এত ভাল বন্ধু হয়ে ওঠেনি।এইভাবে কয়েকমাস চলে গেল লিরার মিডটার্ম পরীক্ষাও সামনের সপ্তাহে,এইদিক দিয়ে অন্তু অসুস্থ আজ প্রাই এক সপ্তাহ হল।লিরার যখন থেকেই অন্তুর সাথে পরিচয় হল ভাল বন্ধুত্ত হয়ে ওঠল ঠিক তখন থেকেই লিরা একটা বিষয় খেয়াল করছে যে অন্তু প্রতিমাসের প্রায় অনেক অসুস্থ থাকে লিরা কয়েকবার অন্তুকে এই নিয়ে প্রশ্ন করলেও লিরা এই বিষয়ে কিছু না বলে এড়িয়ে যায়, তাই লিরাও এখন আর এই বিষয়ে জানার জন্য এত বেশি আগ্রহপোষণ করে না।