ভার্সিটি জীবনের শেষ মুহূর্ত

received_1018945215324556.jpeg

এইতো ভার্সিটি জীবন শেষ হওয়ার পথে। আর মাত্র একটি সেমিস্টার বাকি এর পরেই আমাদের ইন্টার্নশিপ করতে হবে। ভার্সিটিতে আমাদের এটাই শেষ সেমিস্টার শুরু করেছি আজকের প্রথম ক্লাসের মাধ্যমে। দেখতে দেখতে পার করে দিলাম প্রায় চারটি বছর। এখন ক্যাম্পাসে গেলে কেমন যেনো একটা মায়া অনুভূতি হয়। এতো সুন্দর একটি ক্যাম্পাস, বন্ধুদের সাথে কাটানো সুন্দর সময় গুলো সব কিছু কেমন আমাদের জীবনে থেকে ফুরিয়ে আসতেছে। চাইলেও আর পারবো ফেলে আসা সময় গুলোতে ফিরে যেতে। কিছুদিন পর চাইলেও আর পারবো না বন্ধুদের সাথে ক্যাম্পাসে বসে আড্ডা দিতে। ভার্সিটি জীবন শুরুতে কখনও এমনটা অনুভব করি নি। তখন এইটা মাথায় কাজ করতো না আমাদের এক সময় সব কিছু ছেড়ে কর্মের ব্যস্ততায় হারিয়ে যেতে হবে।

ভার্সিটিতে যখন প্রথম ভর্তি হয়ে ক্যাম্পাসে এসেছি তখন সব কিছু কেমন অচেনা লেগেছে , তেমন কোন বন্ধুও হয় নি একা একাই এসেছি ক্লাস করেছি। একাই ক্যাম্পাস ঘুরেফিরে দেখেছি। কিন্তু সময়ের সাথে সব কিছু আপন হতে থাকে। নতুন নতুন বন্ধুত্ব, সবার সাথে মেলামেশা কথা বলা এক সাথে ভার্সিটিতে সময় কাটানো। আসতে আসতে এতোটাই আপন হয়ে যায় ক্যাম্পাস আর বন্ধুত্ব এখন ছেড়ে যেতে হবে ভাবলেও চোখে পানি চলে আসে। এই ভার্সিটি জীবনের বন্ধুত্বটা আমাদের সারা জীবন অটুট থাকে। কারন আমাদের পড়াশুনার সব থেকে বেশি সময়ই এই ভার্সিটিতে এক সাথে অতিবাহিত করে থাকি। আর এর জন্যে বন্ধুদের সাথে একটা গভীর সম্পর্ক হয়ে যায়। মাঝে মাঝে ভাবি সারা জীবন যদি এভাবেই বন্ধুদের সাথে কাটিয়ে দেয়া যেতো হাসি ঠাট্টা, গল্প, ঘুরাফেরা করে। কিন্তু কর্মের তাগিদে আর হয়ে উঠে না বন্ধুদের সাথে সারা জীবন থাকা।

received_519716883488027.jpeg

এইভাবেই পার করে আসছি স্কুল জীবন এবং কলেজ জীবন। স্কুল জীবনে বাড়ি থেকে ক্লাস করছি বন্ধুদের সাথে স্কুলেই দেখা হয়েছে এক সাথে সেভাবে থাকা হয় নি। বন্ধুদের সাথে বাড়ির বাহিরে থাকা শুরু হয় কলেজ জীবন থেকেই। তখন থেকেই বন্ধুদের গুরুত্বটা বুঝতে পেরেছি। জীবনে কিছু বন্ধু থাকা সত্যি জরুরি। মাত্র দুইবছরের কলেজ জীবন তার পর বন্ধুদের ছেড়ে সবাই আলাদা। তখন থেকেই বুঝেছি বন্ধুদের থেকে আলাদা হওয়ার কষ্টটা। কিন্তু এখন তার থেকে অনেক গুন বেশি খারাপ লাগতেছে কারন দীর্ঘ চারটি বছর এক সাথে সময় কাটিয়ে তার পর সবাই আলাদা হয়ে যাচ্ছি। এই স্কুল কলেজ এবং ভার্সিটি জীবন গুলো কখনও আর ফিরে পাবো না।

received_743017830243026.jpeg

এইতো আজকে সেমিস্টার ব্রেক এর পর প্রথম ক্লাস ছিলো। ক্লাসটা অনেক সকালে ছিলো তবুও ঘুম থেকে উঠে ক্লাসে চলে গিয়েছি। অথচ আগের সেমিস্টার গুলোতে প্রথম ক্লাস কখনও আমরা করি নি। কিন্তু এই সেমিস্টারে কেমন যেনো ঘুম থেকে উঠেই সকালে ক্লাসে চলে গেলাম। ক্লাসে গিয়েও অনেকটা প্রশান্তিও পেলাম। ভার্সিটির সব কিছু আমার অনেক ভালো লাগছিলো। হইতো শেষ সেমিস্টার আর পাবো না কখনও তাই এতোটা ভালো লাগছিলো। স্যারের কথা গুলোও আজকে অনেক মনোযোগ সহকারে সবাই শুনেছি। শেষ সময় গুলো যেনো খুব তাড়াতাড়ি হারিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু যখন ভার্সিটির যাত্রা শুরু করি তখন মনে হতো কবে শেষ হবে এই চারটি বছর। কিন্তু এখন পুরোটাই তার উল্টো আমার কাছে। মনে হয় যদি শেষ না হতো ভার্সিটি জীবন, বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেয়ার মুহূর্ত গুলো। কিন্তু জীবনের তাগিদে আমাদের অনেক কিছুই ত্যাগ করতে হয়। এটাই আমাদের জীবনের গোল। এক স্থান থেকে ত্যাগ শিকার করে অন্য স্থানে গিয়ে দাঁড়াতে হয়।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now