আগুন এ পোড়া ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা

আগুন আমাদের জীবনের একটি ও প্রতিদিন এর একটি জরুরী আংশ। যা ছাড়া আমরা একদিন ও চলতে পারিনা। সকাল থেকে রাত অবধি এর ব্যবহার চলতেই থাকে। এমন কি মারা গেলেও এর প্রয়োজন হয়।

আগুনের ছেকা লাগেনি এমন মানুষ মনে হয় খুব একটা খুঁজে পাওয়া যাবে না।কারো হাল্কা আবার কারো খুব কঠিন বা ভয়াবহ। আবার রান্নার সময় গরম তেল ছিটে এসে ফোস্কা পড়ে না এমন রাধুনি ও পাওয়া যায় না। কেউ ঘরোয়া চিকিৎসায় সেরে গেছেন আবার কেউ হাস্পাতালের চিকিৎসায় ভালো হয়েছেন বা পৃথিবীর মায়া ছেড়ে চলে গেছেন। আমাদের অনেকেরই হয়তো মনে আছে ইদানীং ঘটে যাওয়া বনানী,পুরান ঢাকা বা সীতাকুণ্ড তে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ ঘটনা। এছাড়া তো হরহামেশাই ঘটে যাচ্ছে কত ঘটনা। আমাদের যারা রান্নাঘরে কাজ করে তাদের এই অভিজ্ঞতা সবচাইতে বেশি। ছেকা লেগেছে,ঠান্ডা পানিতে হাত ডুবিয়ে রাখো, নারিকেল তেল লাগাও, টুথপেষ্ট লাগাও,ডিম এর সাদা অংশ লাগাও ইত্যাদি কত কি।

images (6).jpeg
Source

গরম পাতিলের ছেকা হয়তো অল্পতেই সেরে যায় বা একটু ঠোসা পড়ে কিন্তু তা যদি বড় আকারে হয় তখন ডাক্তার এর কাছে যাওয়া ছাড়া কোন উপায় থাকে না। হয়তো তাতেও সারিয়ে তোলা মুস্কিল হয়ে যায়, বিকলাঙ্গ হয়ে বেচে থাকে বা ছেড়ে দিতে হয় মৃত্যুর হাতে।

বৃষ্টির দিনে আগুনের ঘটনা খুব কমই হয় শীতেই বেশি আগুন লাগার ঘটনা বেশি হয় কারণ চারিদিকে সব কিছুই শুকনো থাকে। আগুনে পোড়া রুগীর কি কস্ট তা শুধু রুগীই জানে।

গ্রামের রান্নাঘর আর শহরের গ্যাস সিলিন্ডার বা গ্যাস লাইন,ইলেক্ট্রিক সর্টসার্কিট থেকে সবচাইতে বেশি আগুনের সূত্রপাত হয়ে থাকে।

এবার আসি আগুনে পোড়া বা ছেকা লাগার চিকিৎসার কথায়। সারা পৃথিবীতে যে প্যাথির একই মেডিসিন ২২৫ বছর ধরে মানুষের কল্যাণে ব্যবহার হয়ে আসছে,কোন পরিবর্তন হয় নাই,সেই পদ্ধতি এখন এলোপ্যাথি ঔষধের বানিজ্যের কাছে অবহেলিত।একটু লক্ষ্য করলেই দেখবেন যে এলোপ্যাথি মেডিসিন বাজারে আছে কিছু বছর পর আর তা দেহে কাজ করেনা তাই তার উৎপাদন এবং সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।

শুনলে অবাক হয়ে যাবেন অনেক এলোপ্যাথিক ডাক্তার নিজে প্রেস্ক্রিপশনে এলোপ্যাথিক মেডিসিন লিখে রুগীর চিকিৎসা দেন ঠিকই কিন্তু নিজের ও নিজের পরিবারের জন্য হোমিওপ্যাথিক মেডিসিনই কিনে খান। আবার অনেক এলোপ্যাথি এম.বি.বি.এস ডাক্তার হোমিওপ্যাথি ডিগ্রি নিয়ে হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসক হয়ে গেছেন। এর কারন কি? কারন ওনারা বুঝে গেছেন হোমিওপ্যাথি ছাড়া অন্য কোন প্যাথিতে মানুষের দেহ রোগ মুক্ত করা যায় না,রোগ চাপা দেয়া যায়।এতে উনি টাকা আয় করতে পারেন কিন্তু প্রকৃত মানব সেবা করতে পারেন না।
আগুনে পুড়ে গেলে বা ঝলসে গেলে যদি সাথে সাথে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন 'ক্যান্থারিস Q'পানির সাথে মিশিয়ে লাগিয়ে দেয়া যায় তাহলে জ্বালা যেমন কম হয় ঠিক তেমনি ফোস্কা পড়ার সম্ভাবনা ও কম থাকে। যদি জ্বালা হয় তবে 'ক্যান্থারিস-৬' শক্তি ত্রিশ মিনিট পর পর সেবন করালে জ্বালা পোড়া কম হবে। যদি ফোস্কা পড়ে পানি জমে তবে একটি নতুন সিরিঞ্জ দিয়ে পানি বের করে দিন কিন্তু উপরের চামড়া যেনো না উঠে।যদি পোড়া স্থান টানতে থাকে তাহলে সেই স্থানটিকে ভিজিয়ে রাখলে চামড়াতে টান অনুভব কম হবে কিন্তু কি ভাবে করবেন? তাহলে 'ক্যান্থারিস-Q' কে পানির পরিবর্তে খাঁটি নারিকেল তেল বা অলিভ ওয়েল এর সাথে মিশিয়ে ক্ষত স্থানে লাগাতে হবে। রুগীর পোড়ার গ্রেড বা শরীরের কতটুকু স্থান পুড়েছে তা বিবেচনায় নিয়ে অভিজ্ঞ হোমিওপ্যাথিক ডাক্তার এর কাছে যেতে হবে।পোড়ার লক্ষন অনুসারে বিভিন্ন মেডিসিন বিভিন্ন পাওয়ারে প্রয়োগ করে রুগীকে চিকিৎসা দিতে হবে।
এখানে সবচাইতে হতাসার কথা,কোন এলোপ্যাথি চিকিৎসা নিতে গিয়ে যদি রুগী মারা যায় তবে তার দায় কারো উপর পড়ে না কিন্তু হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন এ চিকিৎসা নিতে নিতে কেউ মারা গেলে তার দায় হোমিওপ্যাথিকে বা হোমিওপ্যাথিক ডাক্তারকে নিতে হয় আর এই কারনেই আগুনে পোড়া রুগীকে তারা চিকিৎসা দিতে ভয় পান।
এবার তাহলে

প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য আমরা যে মেডিসিন টি ব্যবহার করবো আগে সেটা বানানো শিখে রাখি।
CANTHARIS-0x0 (2).jpg
source (মেডিসিন এই কোম্পানীরই হতে হবে তা নয়,এটি নাম এর জন্য দেয়া)

কোন হোমিওপ্যাথিক হোলসেল মেডিসিন এর ফার্মেসি থেকে 'ক্যান্থারিস-Q'(মূল ঔষধ) ৩০ এমএল কিনে এনে বাসায় রেখে দেই। যখন প্রয়োজন হবে তখন একটি পরিস্কার পাত্রে ৩০ এমএল পানি নিয়ে তার সাথে ৩০-৪০ ফোটা মেডিসিন মিশিয়ে নিলেই তা ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে।
নারিকেল তেল যদি ব্যাবহার করতে হয় তবে একটি টেবিল চামচের এক চামচ তেল এ ৫/৭ ফোটা মেডিসিন যোগ করে নিলেই তা ব্যবহার উপযোগী হয়ে যাবে। নারিকেল তেল যদি বাসায় না থাকে তাহলে অলিভ অয়েল ও ব্যবহার করতে পারেন।
একটি কথা মনে রাখবেন,মানুষের দেহে মনে বিভিন্ন লক্ষনের ভিত্তিতে হোমিওপ্যাথিক মেডিসিন পরিবর্তন হয়ে যায় আর এলোপ্যাথিতে রোগ কি সেই অনুসারে মেডিসিন চেঞ্জ হয়।
তাই আগুনে পোড়া রুগীর মনের ও দেহের অবস্থা ভেদে তার মেডিসিন পরিবর্তন করতে পারলে অনেক তাড়াতাড়ি এবং সুন্দর ভাবে সারিয়ে তোলা সম্ভব। অতএব সবার উচিৎ ফাস্টএইড মেডিসিন হিসাবে আজই ৩০ এমএল 'ক্যান্থারিস-Q' বাসায় এনে রেখে দেয়া। বহুদিন বাসায় রাখতে পারবেন কোন অসুবিধা নেই। এছাড়া বাজারে আজকাল অয়েন্টমেন্ট হিসাবে টিউবেও পাওয়া যায়। কিন্তু আমার মতে নিজে বানিয়ে ব্যবহার করাই উত্তম। কিছু জানার থাকলে কমেন্টস এ লিখুন।

ভালো থাকবেন।
আখতার উজ জামান, ডিএইচএমএস

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now
Logo
Center