Islamic knowledge for life

জীবিকার জন্য বলি আর যেকারণেই বলি, আমরা নিজেরাই চেষ্টা করি সাধারণ শিক্ষায় নিজেদের সর্বোচ্চ শিক্ষিত করে তুলতে। বিশেষ করে, বাবামায়েরা। বাংলা, ইংলিশ, গণিত যেকোনো বিষয়েই আমাদের ন্যুনতম ভুল দেখা দিলে সেটা সংশোধনের জন্য জীবন ছেড়ে দিয়ে চেষ্টা শুরু করি। বাবা-মায়েরাও তখন ব্যকুল হয়ে যায়। এই টিচার, ওই টিচার।

কিন্তু ধর্মীয় শিক্ষার ছিটেফোঁটাও নাই।

থাকলেও যদি তাতে কোনো ভুল কিংবা অশুদ্ধতা থাকে তাহলে আমাদের হাবভাব হয় এমন, "আল্লাহ মেনে নিবে!"

আমি প্রায় ২০০৯ সাল থেকে অনেককেই আরবি পড়াইছি। কিন্তু ২০১৮ সালে ঢাকায় যাওয়ার আগে কখনোই কাউকে বলিনি পড়ার কথা। যাদের পড়াইছি তারা নিজেরাই আমার কাছে এসে পড়ছে।
ঢাকায় যেয়ে ভাবলাম টিউশন করাই। অল্প হলেও টাকা আসবে, আরবি পড়ানোও হবে। ( টাকার কথা উল্লেখ করলেও আমি কখনোই কারো কাছে আরবি পড়িয়ে টাকা চাইনি। তাই এটাকে দয়াকরে কেউ পুজি করে বসবেন নাহ)

যাইহোক তখন খুজতে লাগলাম আরবি স্টুডেন্ট। অনেক খোজাখুজি করে দু-একটা পাইলেও দেখতাম নিতান্তই অপরিচিত হওয়ায় তারা আমার কাছে পড়তে চাইতো না।
কিন্তু কারণটা তারা কখনোই উল্লেখ করতো না। তাই ব্যাপারটা আমাকে খুব ভাবায়। অনেকদিন পর হঠাৎ আবিষ্কার করি, জেনারেল সাবজেক্টের ক্ষেত্রে অপরিচিত হলে সমস্যা নাই, কিন্তু অদ্ভুত কারণে যারা আরবি পড়ায় তারা অপরিচিত হলে তাদেরকে সবাই ভয় পায়।

যাইহোক, তারপর ভাবলাম পোস্টার লাগাই। কারণ স্টুডেন্ট তো পাচ্ছি না। ১০০ টা পোস্টার বানিয়ে ১০ টা মারার পরেই বুঝতে পারি, কেমন কঠিন কাজ।
যাইহোক, আমি পোস্টারে একটা লাইনে লিখছিলাম, "সন্তানকে সাধারণ শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করার চেষ্টা করুন।" (পোস্টারে একটা বানান ভুল আছে)

কিন্তু আমার এখন মনে হচ্ছে, লাইনটা ভুল লিখেছিলাম।
আমার লিখা উচিত ছিল, "সন্তানকে ধর্মীয় শিক্ষার পাশাপাশি সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত করুন। "

এমন মানুষ খুজতে গেলেই এখন হতাশ হতে হবে, যেই মানুষ নিজে তার বাবা-মার জানাজার নামাজ শুদ্ধভাবে পড়াতে পারবেন।

অনেকেই আছেন মোটামুটি পারেন কোরআন শরিফ পড়তে।
কিন্তু শুদ্ধভাবে নয়।
তাদের আর শুদ্ধতা নিয়ে কোনো মাথা ব্যথাও নাই।
অথচ তারা যদি জানতো অশুদ্ধ উচ্চারণের কারণে অর্থ কোথায় চলে যায় তাহলে তারা শুদ্ধতার জন্য উঠেপড়ে লাগতো।

একবার ঢাকায় এক বিদেশি লোককে এক মসজিদে নামাজ পড়তে ধরে ইমামের সূরা ফাতিহা শোনার পর নামাজ ছেড়ে দিয়ে বসে থাকতে দেখেছিলাম।
আমি ওজু করার পর ভিতরে ঢুকে দেখি লোকটা পিছনে বসেছিল। নামাজ শেষ করে তার সঙ্গে কথা বলবো, তখন দেখলাম উনি একা নামাজ পড়ছেন।
তারপর কথা বললাম। (ভদ্রলোক পাকিস্তানি হওয়ায় তার কথা বুঝতে সমস্যা হয়নি)

ওনাকে নামাজ ছেড়ে দেয়ার কারণ জিজ্ঞেস করলে বলেন, "তেলওয়াতে ভুল হলে অর্থ পাল্টে যায় আর সেটা যদি ইমামের ভুল হয় তাহলে মুসল্লীদের কেউ সেই ভুল বুঝতে পেরে আমিন আমিন করলে ভুলকে সমর্থন করা হয়।"

যাইহোক, ধর্ম নিয়ে কিছু বলতে গেলেই মানুষ আড় চোখে দেখতে শুরু করেন। আবার অনেকে চরমপন্থী বলে গালিও দিয়ে বসেন।

সেইসব মানুষদের এবং যারা সাধারণ শিক্ষাকেই সবকিছু মনে করেন তাদের বলছি,
"নিজের সন্তানকে ডেকে বলুন তো, আপনি মারা গেলে আপনার জন্য সে কি দোয়া করবে!"

ধন্যবাদ!!!

FB_IMG_1595164891292.jpg

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now
Logo
Center