ক্লান্তি

সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর আপনি কি করেন? ঠিক যখন চোখটা খুলেন? প্রথমে কোন কথাটা আপনার মাথায় আসে বা কার চেহারা আপনার মনে আসে? কখনো এটা ভেবে দেখেছেন? কিংবা যখন আপনি আর কখনো সেই চোখ দুটি খুলবে না তখন কি হতে পারে? কথাগুলো অনেক বোরিং আমি জানি কিন্তু আজকে হঠাৎ কেন যেন এই কথাগুলো আমার মাথায় ঘুরছিল।

সকাল সাড়ে পাঁচটায় ঘুম থেকে ওঠার পর থেকে আমার মাথা কেমন যেন ঝিমঝিম করছিল। আসলে খুবই প্রেশার যাচ্ছে। এতটাই ক্লান্ত যে আমার শরীর, মনে হচ্ছে আর কিছু নিতে পারছে না। মনে হচ্ছে আমিও দাঁড়াতে পারবো না। আমার শরীরে প্রতিটা অঙ্গে ব্যথা কিন্তু আমার ক্যাম্পাসের দায়িত্বের জন্য হলেও আমাকে সকালে উঠে সারাটা দিন ডিউটি দিতে হবে। দায়িত্ববোধ অনেক বড় একটা জিনিস। যত দিন যাচ্ছে যত বয়স বাড়ছে আমিও বুঝতে পারছি।

আমি সত্যি বলতে অনেক ক্লান্ত। আমি ক্লান্ত নিজেকে বারবার প্রমাণ করতে করতে। আমি ক্লান্ত বারবার শুনতে যে আমি কিছুই পারি না। সারাদিন হাজারটা কাজ করার পরও দিনশেষে যখন শুনতে হয় আমি কিছুই করিনি, আমি ক্লান্ত। আমার খুবই ক্লান্ত লাগে যখন শত চেষ্টা করার পরও আমি একজন যোগ্য খেলোয়াড় হয়ে উঠতে পারি না। কিংবা নরমালি যতটুকু মানুষ খেলতে পারে আমি ততটুকুও পারি না। আমি খুবই ক্লান্ত বারবার নিজের কাছের মানুষকে নিজের ভালোবাসার অনুভূতি বোঝাতে বোঝাতে। আমি ক্লান্ত বারবার কষ্ট পেতে পেতে। আমি ক্লান্ত কোন একটা কাজে হাজারবার চেষ্টা করার পরও তার ফলাফল শূন্য পাওয়াতে। যতদিন যাচ্ছে লাইফ ততো ফ্রুস্ট্রেটেড হয়ে যাচ্ছে। তার থেকে বাজে বিষয় আমার জীবনের এখন ৮০% জিনিসই এমন, যত চেষ্টা করি না কেন তার ফলাফল শূন্য। এই যে আমার সফটওয়্যার কোয়ালিটি টেস্টিং সাবজেক্টটা, এত কষ্ট করে আমি পড়েছিলাম, এতটাই এফোর্ড দিয়ে আমি সারা রাত জেগে প্রতিটা স্লাইড মুখস্ত করেছিলাম। কিন্তু ভাগ্যের খেলায় এমন প্রশ্ন আসলো যেটা আমার সাইডে নেই। একচুয়ালি কাহিনী হচ্ছে আমাদের যে স্যারের কোশ্চেন করার কথা ছিল তিনি করেননি। আর যিনি কোশ্চেন করেছেন তার স্লাইড আমরা পড়িনি। তো ফলাফল রেজাল্ট খারাপ। তার থেকে বড় কথা এখন যে নতুন ম্যাম ক্লাস নিচ্ছে সেম সাবজেক্টটা সেটা তেও ভালো ফলাফল হচ্ছে না। লেখালেখি করতে ভালো লাগতো কিন্তু সারাদিন এতটাই ক্লান্ত থাকি যে, দিন শেষে কোন পোস্ট করার এনার্জি থাকে না।

আমি সত্যি বলতে নিজের কাছে অনেক ব্যর্থ। এতটাই ব্যর্থ লাগে নিজেকে, কারো সামনে এখন পরিচয় হতে ভালো লাগেনা। ইচ্ছা করে না কারো সাথে মিশতে। নতুন ভাবে পরিচিত হতে । ইচ্ছা করে না facebook এ কারো সাথে কথা বলতে। এখন বেশিরভাগ সময় ফেসবুকে ডিএক্টিভেট করে রাখি। এতটাই ফ্রাস্ট্রেটেড আমি এখন হয়ে গেছি। যাকে এক সময় প্রচন্ড বিশ্বাস করতাম তাকে এখন বিশ্বাস করতে পারি না। কারণ দেখতে গেলে আশেপাশের প্রায় সবাই আমাকে ধোঁকা দিয়েছে। তার উপরে মানুষ এখন পিছনে অনেক কথা বলেই । সবাই আমরা এই ধরনের পরিস্থিতির শিকার হয়েছি।

আমি বলতে গেলে জীবনে কিছুই করতে পারলাম না। মানুষের কিছু একটা গুন থাকে। নয় চেহারা থাকে, নয় ট্যালেন্ট থাকে ,নয় কাজ করার যোগ্যতা থাকে। আমি এখন নিজেকে এমন একটা জায়গায় দেখতে পাচ্ছি যে আমার কিছুই নেই। না আছে চেহারা, না আছে কোন কিছু করার যোগ্যতা , না আছে ভালো শিক্ষাগত যোগ্যতা, না আছে শারীরিকভাবে কোন কিছু করার যোগ্যতা। তার উপরে আমার আশেপাশের মানুষগুলো প্রতিটা মুহূর্তে এখন আমার দুর্বলতাকে চোখে আঙুল দিয়ে ধরিয়ে দিচ্ছে। আমি জানিনা আপনারা কে কি অবস্থায় আছেন। এখন কে কি সিচুয়েশনে আছেন। তাদের কারো সাথে আমার এই দুর্দশা গুলো মিলছে কিনা।

আমি জানি মানুষের খারাপ সময় আসে। কিন্তু আমার মত যার কোন কিছুরই যোগ্যতা নাই , তার খারাপ সময়কে কি দিয়ে বিচার করা যায় আমি জানিনা। আমি জানিনা আমার কোন ভবিষ্যৎ আছে কিনা। এখন এতটা খারাপ লাগে যে কান্নাও পায় না। যাই হোক আমার বর্তমানে কিছু খারাপ সময় তুলে ধরলাম। পারলে আপনারাও জানাবেন আপনারা কে কি অবস্থায় আছেন? কারো সাথে আমার সিচুয়েশন মিলছে কিনা? অথবা কারো অতীতে আমার মত অবস্থা হয়েছিল কিনা এবং আপনারা কিভাবে সে বাজে সিচুয়েশন হ্যান্ডেল করেছিলেন?

আপনাদের একজনের কমেন্টও যদি আমার উপকার হয় আমি চির কৃতজ্ঞ থাকব। ধন্যবাদ এতক্ষণ আমার বোরিং লেখা পড়ার জন্য।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now