black girl.

আমাদের ক্লাসে নীলিমা নামে যে কালো মেয়েটা ছিল।রনি তাকে খুব জ্বালাতন করতো। ক্লাসে ও নীলিমাকে নাইজেরিয়ান বেগুন ছাড়া কখনো ডাকতো না। মেয়েটাকে প্রায় সময় দেখতাম রনির এমন কথা শুনে প্রচণ্ড মন খারাপ করতো। মাঝেমধ্যেই ক্লাস থেকে কাঁদো কাঁদো চোখে বেরিয়ে যেতো।

অনেকবার রনি কে বুঝিয়ে ছিলাম। দেখ কোনো মানুষকে এভাবে তার চেহারা নিয়ে খোটা দেওয়া উচিৎ না।কিন্তু রনি কখনো আমার কথা শুনেনি।বারবার এই কাজ করে গেছে।

কিন্তু আজ রনির বাবার অপারেশন করতে যে টাকা লাগছে সেটা সম্পূর্ণ দিয়েছে নীলিমার বাবা। বিনিময়ে রনিকে বিয়ে করতে হয়েছে নীলিমা মতন নাইজেরিয়ান কালো বেগুন কে।

ট্রেনে একজন হিজড়া মাসুদ সাহেবের গায়ে হাত দিয়ে কথা বলায় উনি প্রচণ্ড রেগে গেলেন। নতুন বউয়ের সামনে এই অপমান সহ্য করতে না পেরে সজোরে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলেন হিজড়ার গালে। থাপ্পড়ের চোটে ট্রেনের সীটের রড লেগে কপাল কেটে যায় হিজড়ার। কাঁদো কাঁদো চোখে মাসুদ সাহেবের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলো হিজরাটা। তারপর, ট্রেন থেকে নামবার আগে বলে গেলে "আল্লাহ এর বিচার করবে"।

একটু আগে হিজড়ার দল এসে মাসুদ সাহেবের প্রথম সন্তান কে নিয়ে গেলো।ওরা কোথা থেকে যেন খবর পেয়েছে এই বাড়িতে একটা হিজড়া সন্তান আছে মাসুদ সাহেবের। মাসুদ সাহেবের স্ত্রী চিৎকার করে কাঁদছে। হঠাৎ মাসুদ সাহেবের সেই দিনের ট্রেনের কথা মনে পড়ে গেলো।

পলাশপুরের চেয়ারম্যান বাড়ির ছেলে জয়। কিন্তু আজ ও আত্মহত্যা করতে চলেছে। মানুষের কাছে এই মুখ ও কিভাবে দেখাবে! সবাই জয়কে এখন অন্যচোখে দেখছে। এলাকার কোনো মানুষের আর কিছু জানা বাকি নেই । সবাই জেনে গেছে জয়ের বউ জয়ের ছোট ভাইয়ের সাথে ফষ্টিনষ্টি করতে গিয়ে ধরা পরেছে।

আম গাছের সাথে একটা দড়ি ঝুলছে। দড়িটাকে মালার মতো করে বানিয়ে নিজের গলায় পড়ে নিলো জয়। পায়ের নিচের চেয়ারটাকে লাথি দিতে যাবে এমন সময় কে যেন জয়ের কানে কানে বলে উঠল।" তুই বন্ধু হয়ে আমার বউয়ের সাথে এসব করতে পারলি? কি দোষ করেছিলাম আমি! যে তুই আমার বউয়ের দিকে নজর দিলি।তোকে কিছু বলার নেই।মাথার উপড়ে আল্লাহ আছে তিনি বিচার করবে "।

জয়ের হঠাৎ মনে পড়ে গেলো পাঁচ বছর আগেকার কথা। তুষারের বউয়ের সাথে জয়ের যে একটা অবৈধ সম্পর্ক ছিল সেটা তুষার জেনে গিয়েছিল। পরে লোকলজ্জার ভয়ে গ্রাম ছেড়ে শহরে চলে যায়।এই ঘটনা জয় আর তুষার ছাড়া কেউ জানে না। হঠাৎ নিজের অজান্তে জয় পা দিয়ে নিচের চেয়ার টা ফেলে দিলো। বারকয়েক কেঁপে উঠে ঝুলে রইলো জয়ের শরীর।

লোকাল বাসে খুব ভিড়। আবির ও ওর ছোটবোন খুব ঠেলাঠেলি করে বাসে উঠে দাঁড়ালো। ভাই বোন পাশাপাশি দাঁড়িয়ে। হঠাৎ দুইজন ছেলের মুচকি হাসি দেখে আবির ছেলে দুটোর হাসির কারণ অনুসন্ধান করতে লাগলো। একটু পরেই আবির কারণ খুঁজে পেলো। ছেলে দুটো হাসছে আবিরের বোনকে দেখে। আবিরের বোনের পিঠে জামার গলার ফাঁক দিয়ে একটা সাদা ফিতা দেখা যাচ্ছে। মুহূর্তেই আবিরের কান রাগে লাল হয়ে উঠলো।ছেলে দুটোকে জবাই করতে ইচ্ছে হচ্ছিল আবিরের। কিন্তু লোকাল বাসে কিছু বলাও যাচ্ছে না। ছেলে দুটোর চোখ থেকে বোনকে আড়াল করে রইলো।

হঠাৎ দুটো সীট ফাঁকা হওয়াতে দুই ভাইবোন বসে পড়লো। কিন্তু আবিরের মনে মনে তখনো আগুন জ্বলছে। হঠাৎ আবিরের মনে পড়লো কয়েকদিন আগের কথা।

টিএসসিতে বন্ধুরা মিলে আড্ডা দিচ্ছিল। এমন সময় দুজন মেয়ে ওদের সামনে দিয়ে যাচ্ছিল। তাদের একজনার পিঠের জামার গলা দিয়ে নিচের অন্তবার্সের ফিতা দেখে আবির ও ওর বন্ধুরা মিলে হাসাহাসি। অথচ মেয়ে দুইটি জানতেও পারেনি ওদের হাসির কারণ।

আজ নিজের বোনের সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা দেখে নিজেই নিজের গালে মনে মনে চড় মেরে চলেছে আবির।অথচ পাশে বসা বোন কিছুই বুঝতে পারছে না।

( জগৎসংসার কখনো ঋণী থাকতে চান না। যেকোনো ভাবে তার ঋণ শোধ করে দেন। যদি কেউ ভালো কাজ দিয়ে জগৎসংসার কে ঋণী করেন। তাহলে জগৎসংসার ভালো কিছু দিয়েই সেটা শোধ করবে। আর যদি খারাপ কাজ দিয়ে ঋণী করেন তাহলে............!)

চতুষ্কোণ
রিফাত আহমেদ image

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now