Life and Death Life

পতিতালয় থেকে যখন বের হল ছেলেটা তখন ফজরের আজান ভেসে আসছে । মুয়াজ্জিন খুব আবেগ দিয়ে আজান দিচ্ছে । ছেলেটা ভাবতে লাগলো । একসময় খুব ধার্মিক ছিল সে ।খুব। খুব committed ছিল সৃষ্টিকর্তার প্রতি। এখন agnostic হয়ে গেছে। কিংবা হয়ত নাস্তিক। ধার্মিক দের লিস্টি থেকে নাম কেটে গেছে সেই কবে। জীবনের ওপর আক্ষেপ লাগছে কিছুটা। প্রতিবার পতিতালয় থেকে বের হবার পর এমনটা লাগে। রাস্তার ধারে গিয়ে বসে ।
পাশে এসে বন্ধু বসলো। অনেকদিনের বন্ধু ।
“সুইসাইডের কথা ভাবছিস ?”
“হুম ।“
“করতে পারিস। লাইফ কোনো দিকে মুভ করতেসে না। একই লুপে ঘুরতেসিস শুধু। বের হতে পারতেসিস না। তার চেয়ে বরং লুপটা কেটেই দে।“
“পতিতালয়ে যাবার আইডিয়াটা তো তুইই দিসিলি।“
“আমি তোকে বলছিলাম শুধু একবার refreshment এর জন্য যেতে।ভীষণ হতাশ ছিলি তাই।
প্রতিদিন গিয়ে গিয়ে এটাকে অভ্যাস বানাতে বলি নাই। আর তা ছাড়া প্রচুর পেইন তোর লাইফে। প্রচুর। না পড়াশোনায় concentration করতে পারতেসিস ,না ফ্যামিলি লাইফে। যে ছেলে প্রায় রাতে বাইরে থাকে তার সম্বন্ধে খুব ভালো ধারনা হবার কথা না ফ্যামিলিতে প্রত্যেকদিন পেইন শুধু বারতেসেই।“
“যদি সব ছেড়ে দিয়ে একদম ভালো হয়ে যাই? একদম স্কুল লাইফের মতো? ধর্ম পালন শুরু করি যদি পুরো দমে?”
‘হা হা। তখন মজাই হবে। হুজুর সাহেব পাজামা –পাঞ্জাবী পড়ে রুমাল দিয়ে মুখ চেপে পতিতালয়ে ঢুকবে আর পতিতারা সবাই হি হি করে হাসবে।“
হতাশায় দুই হাত দিয়ে মাথা চেপে ধরল ছেলেটা,
“উফ....আমি কি ছাড়তেই পারবো না এই লাইফ?”
“বললাম না একটা লুপে ধরা পড়ে গেসিস। বের হওয়া quite impossible .কারণ তোর ব্রেইন অলরেডি জানে কোন জিনিস টা তোকে মজা দেয়। এর বাইরে তোর তৃষ্ণা মিটবে না। your brain is already coded after repeated actions .আর এই যে ধর্ম পালন করবি বলতেসিস ,ধর্মের মূলেই হচ্ছেন স্রষ্টা। যার ওপর তোর বিশ্বাস এখন প্রায় শুন্যের কোঠায়। আস্তিক না হয়ে ধর্ম পালন করবি ক্যামনে ?শুধু কি কিছু সেজদা মারলেই হোল? যার মধ্যে একবার সন্দেহ দানা বাঁধে তার ফেরা খুব কঠিন। তোর ব্রেইন কোডেড হয়ে গেসে সেই সন্দেহ গুলোর জন্য। বার বার ফিরে আসবে। obsessive compulsive disorder. একটা উত্তর পাবি ,হাজারটা প্রশ্ন স্রোতের বেগে আসবে। ”
“তোর কি মনে হয় সৃষ্টিকর্তায় বিশ্বাস করা উচিৎ?”
“তোর লাইফের কথা বললে বলব উচিৎ না।ভাই, মানুষের লাইফে পেইন থাকে। বাট তোর মতো এতো? তিনি কি তোর ইচ্ছে মতো কিছুই দিতে পারতেন না? সামান্য কিছুও না?
তুই যাকে এতো পছন্দ করতি তাকে এতো করে স্রষ্টার কাছে চাইলি।তিনি কি সামান্য response ও করতে পারতেন না? পৃথিবীর অন্য পুরুষদের জন্য কি মেয়ে ঘাটতি হয়ে যেত? সেই মেয়েটা তোর লাইফে আসলে কতটা satisfying লাইফ হতে পারতো তোর লাইফ। এখন পড়াশোনার অবস্থা খারাপ। টিউশন ও নাই। টাকা যোগাবি কয়দিন পর কিভাবে? তোকে তো হেল্প করলেন ই না বরং তোকে একটার পর একটা পেইন দিতেই থাকলেন তিনি। মানসিক যন্ত্রণা চরমে উঠলে তোকে ওষুধ খেয়ে ঘুমাতে হতো। সেই টাকা গুলা কোথেকে আসতো? খোদা আসমান থেকে ফেলতেন? টাকাগুলা আসতো তোর আঠার হাজার টাকা বেতন পাওয়া বাবার পকেট থেকে। বাবার মার গলায় প্রতিদিন পা দিতে হয়েছে নিরীহ তোকে। এতো কোটি টাকার সুদখোর , চোর ,ডাকাত রাতে আরামে ঘুমাত, আর তোকে খোদার কাছে সামান্য ঘুম ভিক্ষা চাইতে হতো। তোকেই কেন ঝামেলায় পরতে হল এতো? সামান্য ইজি ও কি লাইফ করা যেত না? যাতে তুই একটু কামব্যাক করার সুযোগ পাস। Even if there is any God ,you should not respect such a sadistic God.”
“কিন্তু সবাই যে বিলিভ করে লাইফ একটা পরীক্ষা।“
“যে পরিক্ষায় ছাত্র কলমই চালাতে পারল না সেটা আবার কিসের পরীক্ষা? কেমন পরীক্ষা? তিনি যদি সত্যিই তোকে ন্যূনতম ভালবাসতেন তাহলে তোকে যন্ত্রনায় কাতরাতে দেখে কাঁধে হাত রাখতেন। সাহায্য করতেন। যেমন টা আমি করেছি। আমাকে বিলিভ করিস তো?”
“ হ্যাঁ। করি ।“
“ তাহলে আমি বরং বলব তোর করা কাজের জন্য সামান্য অপরাধবোধ ও থাকা উচিৎ না। বীরের বেশে আত্মহত্যা করা উচিৎ। প্রতিশোধ নেয়া উচিৎ। এবং এখনই ।“
“এখনই?”
“দেরি করলে তোর মাইন্ড আবার cool down করে ফেলবে। ভয় লাগবে। সাহস আসবে না। “
“আরেকটুও ভাবা উচিৎ না?”
“ না। পিছুটান থাকার মতো কিছু নেই। There is nothing left for you .You have suffered enough already .”
একটা ট্রাক ছুটে আসছে। ট্রাকের চালক সারা রাত গাড়ি চালিয়ে ভীষণ ক্লান্ত। শেষ পথটুকু তাড়াতাড়ি শেষ করা দরকার। হঠাৎ ট্রাকের সামনে কে যেন লাফ দিল। ট্রাকের চালক কশে ব্রেক মারল। কাজ হল না ।ভীষণ ভয় পাচ্ছে সে। জোরে টান দিল। চাকার নিচে কিছু একটা পিষ্ট হল। এতো তাকানোর সময় নেই। ঝামেলায় পড়া যাবেনা কোন ভাবেই।
ভীষণ আনন্দ নিয়ে হেঁটে যাচ্ছে ইবলিসের চাকর। আরেকটা উইকেট পড়লো আদম সুরতের। নিজেকে পিঠ চাপড়ে দিলো সে। Good job .অনেকটা সময় খাটতে হয়েছে এইটার জন্য। কয়েক বছর ।সময় বৃথা যায় নি। ওস্তাদজি আজকে ভীষণ খুশি হবেন ।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now
Logo
Center