পার্ট-৩
আমি বাথরুমে গিয়ে ঠোঁট বার বার ধুলাম।কুলি করলাম।তাও মেজাজ ঠান্ডা হচ্ছিল না।এ দিকে দরজায় নক করতে শুরু করলো লোকটা।
-কি গো আর কত অপেক্ষা করবো?এসো বাসর রাত পালন করি।
লোকটা হাসচ্ছে।আমি বের হলাম না।কথাও বলছি না।কিছুক্ষন পর আর কোন শব্দ নেই।আস্তে আস্তে দরজা খুললাম।ঘরে কেউ নেই।বের হলাম বাথরুম থেকে।ঘুম পাচ্ছে অনেক আমার।কিন্তু কি করবো লোকটা এসে যদি আবার কিছু করে।হঠাৎ ওনার স্টাডি টেবিলে চোখ পড়ে ওটার পিছনে লুকালে আমাকে আর দেখবে না। আমি স্টাডি টেবিলের পিছনে গুটিসুটি হয়ে বসে আছি।কখন যে ঘুমিয়ে পরলাম বুঝতে পারলাম না।পরদিন সকালবেলা অনেক শব্দে ঘুম ভাঙ্গলো।আস্তে আস্তে বের হলাম। জানালায় তাকালাম দেখি বাসার বাহিরে পুলিশের গাড়ি।আমি ভয় পেয়ে গেলাম।কি হয়েছে যে এত সকালে পুলিশ বাড়িতে।আমি রুম থেকে বের হয়ে নিচে নামলাম।সবাই অনেক চিন্তিত।
-মা কি হয়েছে?
সবাই আমার দিকে এমন ভাবে তাকালো যেন তারা সাত রাজার ধন পেলো।
-কই ছিলে তুমি মা?
-কিরে মা তুই কই চলে গিয়েছিলি?
-মা বাবা আমি কোথাও যাই......
-তুমি কই ছিলে?
বলে লোকটা আমাকে সবার সামনে জড়িয়ে ধরলো।আমি বুঝলাম এখন আসল বিষয়টা কি।পুলিশ গেলো বাসা থেকে।আমাকে রুমে নিয়ে এলো মা।
-বৌমা তুমি ফ্রেশ হয়ে নিচে এসো।কেমন?
-আচ্ছা মা।
মা চলে গেল।আমি ফ্রেশ হয়ে নিচে গেলাম।সবার সাথে নাস্তা করলাম।বাবা আর লোকটা কি বিষয় নিয়ে যেন কথা বলছে।
-তূর্য, আজ তুই বাসায় থাক।আমি অফিস যাই।বৌমাকে আজ সময় দে।
কথাটা শুনে লোকটা আমার দিকে তাকিয়ে এমন ভাবে হাসলো যেন রাজ্য জয় করে ফেলেছে।মনে মনে তাকে বকছি।শয়তান লোক একটা।বাবা চলে গেল।তূর্য নামক শয়তানটাও মাকে কি যেন বলে বাহিরে গেল।মা তার রুমে আমাকে নিয়ে গেল।
-দেখলি তো আমার ছেলের কান্ডটা?তোকে না পেয়ে রাতে সবাইকে ডেকে তুলেছে তোকে খুজার জন্য।পুলিশও এনেছে।কাউকে ঘুমাতে দেয়নি।পাগল একটা।তা তুই কই ছিলি?
-ঘুমিয়ে গিয়েছিলাম।আচ্ছা মা আপনি ঘুমান রাতে ঘুমুতে পারেন নি।
রুমে চলে এলাম।বারান্দায় এলাম।একটা দোলনা আছে।বসলাম দোলনায় আর ভাবছি কোন পাগলের সাথে বিয়ে হলো আমার।কান্না করছি।কিভাবে নিজেকে বাচাবো?এসব ভেবে রুমে যাচ্ছি আর ধাক্কা খেলাম লোকটার সাথে।
-কানা নাকি?ওপসস..কানা না কানি বউ।
-বাজে কথা বলবেন না।আপনি এত খারাপ কেন?
-তোমার জন্য
কিছু বলতে যাব এমন সময় মা এলো ঘরে।
-তূর্য তুই বাসায় থাক।হাসপাতাল থেকে ফোন এসেছে আমি যাচ্ছি।তোরা নিজেদের খেয়াল রাখিস।
-ওকে মা।চিন্তা করো না তোমার বৌয়ের খেয়াল রাখতে পারবো আমি কিন্তু তোমার বৌ পারবে কিনা জানি না।
-পাগল একটা।আচ্ছা যাই আমি।
ইচ্ছে নেই কথা বলার তাও বললাম লোকটাকে
-মা হাসপাতাল গেল কেন?
-মা ডাক্তার তুমি জানো না?অবশ্য জানবে কি করে তোমাকে তো কিছুই বলে নি বিয়ের বিষয়ে।জানালে তো আর বিয়ে করতে না।
-আপনি একটা শয়তান লোক।
-জানি।
-কেন বিয়ে করেছেন আমাকে?মেয়ের অভাব ছিল নাকি?
-হাম তুম এক কামরে মে.....
কথা না বলে গান গাইতে লাগলো লোকটা।আমার কাছে আস্তে আস্তে এগিয়ে আসছে।
(চলবে)