আশা, হতাশা ও আক্ষেপ!!!

কিছুদিন থেকে লক্ষ করছি, শেখ আদিল কালবানির তাসখেলার আড্ডায় উপস্থিতির একটি ভিডিও ভাইরাল হয়ে নিউজফিডে ঘুরছে। শেখ আদিল কালবানী হারাম শরিফের তারাবির ইমাম। আমাদের আস্থা ও বিশ্বাসের সর্বোচ্চ জায়গায় তাঁর অধিষ্ঠান থাকায় তিনি আমাদের কাছে পরম আস্থাভাজন ও বিপুল শ্রদ্ধিত ব্যক্তিত্ব। তাঁর এই অসতর্ক উপস্থিতি লক্ষ কোটি মুসলিমের হৃদয়ে প্রচণ্ড ক্ষতের সৃষ্টি করেছে। বেশ কিছুদিন আগে শেখ সুদাইস হাফিযাহুল্লাহ এর একটি অসতর্ক মন্তব্যও আমাদেরকে ভীষণভাবে পীড়িত করেছে । অবনমিত হয়েছে আমাদের গৌরবের উন্নত শীর। কিন্তু কেন এমন হচ্ছে? কেন বারংবার আমাদের বিশ্বাসের শিখরে চির ধরছে। সর্বোচ্চ শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্বদের কাছ থেকে
এমন সব কর্মকাণ্ড প্রকাশ হচ্ছে, যার কোনো
যৌক্তিক সদুত্তর আমরা খুঁজে পাচ্ছি না। তবে অতীত ইতিহাস সামনে রেখে চিন্তা করলে প্রতীয়মান হয়, এগুলোর
নেপথ্যে আন্তর্জাতিক ইয়াহুদি খ্রিষ্টান ষড়যন্ত্র ক্রিয়াশীল।
ফ্রান্সের রাজা কিং লুই দীর্ঘদিন মুসলিমদের হাতে বন্দী থাকার পর যখন মুক্ত হয়ে ফিরে আসেন, তখন দেশে এসে নীতি নির্ধারকদের নিয়ে জরুরি বৈঠক করেন। সেই বৈঠকের বিষয়বস্তু ছিল, মুসলিমদের পরাস্ত করে রাখার কূটকৌশল প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন। সেই কূটকৌশলের রীতিনীতিগুলো আজও প্যারিসের একটি জাদুগরে সংরক্ষিত আছে। সেই বৈঠকি সভায়
যে ফর্মুলা ও পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়, এর মধ্যে কয়েকটি ছিল এই:
এক. মুসলিম নেতৃবৃন্দকে কখনো একতাবদ্ধ হতে না দেওয়া। তাদের মধ্যে বিভেদ বিভাজন সৃষ্টি করে দূরত্ব তৈরি করা।

দুই. আরব বিশ্বর রাষ্ট্রনায়কদের মধ্যে বিদ্বেষের আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া। তাদেরকে বিচ্ছিন্ন রাখার জন্যে সর্বাত্মক চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া।

তিন. আরব ভূখণ্ড মুসলিমদের হৃদয়ের আকর।
এখানকার বরেণ্য ধার্মিক ব্যক্তিদের প্রভাব গোটা দুনিয়ার মুসলিমদের উপর খুবি প্রকট। ফলে এদের যে কোনো একজনের ডাকে সারা দুনিয়ার মুসলমান একতাবদ্ধ হয়ে যাওয়া বিচিত্র নয়। আর মুসলমানরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে গেলে তাদেরকে ঠেকানো অসম্ভব। তাই যে-কোনোভাবেই হোক, আরবদেশের শীর্ষতম ইসলামি ব্যক্তিত্বকে জনসমাজে খাটো করে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করা। এর পিছনে যা অর্থকড়ি দরকার, তা সরবরাহ করতে সামান্যতম দ্বিধা না করা।
এই তৃতীয় ফর্মুলাটি জানার পর আর বুঝতে অসুবিধা হওয়ার কথা নয় যে, কিছুদিন পরপর আমাদের ভালোবাসার নকিবেরা কেন পদস্খলিত হচ্ছেন? কেন তাদের কাছ থেকে এমন উদ্ভট ক্রিয়াকর্ম প্রকাশ পাচ্ছে।?
হারামাইনের রক্ষকদের প্রতি আমাদের সেই আস্থা এখন আর নেই। তাদের লাইফস্টাইলে এখন আধুনিকতার ছোঁয়া। ইউরোপীয় সভ্যতার ইলিক-ঝিলিক। মুজলুম মুসলমানদের রক্তের উপর যাদের প্রমোদ তরী ভাসমান, সেই জালিমরা এখন আমাদের এই রক্ষকদের পরম বন্ধু।
কিন্তু হারামাইনের নকিব যারা, প্রিয় নবীর মুসল্লার
ওয়ারিছ যারা, তাদের প্রতি আমাদের আস্থা এখনো হারিয়ে যায় নি। হৃদয়ের সবটুকু জায়গাজুড়ে এখনো তাদের অবস্থান চরম দার্ঢ্য। তাদের কাছ থেকে আমরা আশা করি সর্বোচ্চ সতর্কতা। কিন্তু তারা যদি সুক্ষ্ণ
কূটচালে পরাস্ত হন বারবার, তবে এ-লাজ আমরা রাখি কোথায়।!
একদিন ইমাম আবু হানিফা রহ, পিচ্ছিল রাস্তা দিয়ে হাঁটছিলেন।খুব ধীরে ধীরে অতি সন্তর্পণে। দেখলেন একটা ছোট্র ছেলে থর থর করে দ্রুত হাঁটছে। ছেলেটিকে উদ্দেশ্য করে আবু হানিফা বললেন, এই ছেলে! একটু ধীরে ধীরে হাঁটো! তাড়াহুড়ো করো না! নইলে পড়ে গিয়ে কমর ভেঙ্গে যাবে।
উত্তরে বালক বল্ল, মুহতারাম! আমি পড়লে তেমন সমস্যা নেই। এতে শুধু আমার কমর ভাঙ্গবে।
কিন্তু আপনে পড়লে গোটা জাতির কমর ভেঙ্গে যাবে; কেননা আপনি হচ্ছেন আমাদের ইমাম বা নেতা। তাই আপনাকে আমার চেয়ে শতগুণ বেশি সতর্ক হয়ে চলা উচিত।
নিউজফিডে আদিল কালবানী সাহেবের তাসখেলার ভিডিও চিত্রটি চোখে ভেসে ওঠার পর থেকে ইতিহাসের এই বালকের কথাটি বারবার মনে পড়ছে!!!
হে আল্লাহ আমাদেরকে রক্ষা করো। আমাদের ইমামদেরকে হেফাজত করো।
______________Junaid Kiampury

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now