তোমায় ফিরে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্খা।

যেদিন তুমি আমায় বললে আমি একটু অসুস্থ, তখনই আমার মনটা কেঁপে উঠেছিলো, হয়তো তোমায় হারিয়ে ফেলতে চলছি আমি। নিজের খেয়াল রেখো বলে যখন চলে গেলা তখন কিছুক্ষনের জন্য শান্ত ছিলাম। অপেক্ষা করছিলাম তোমার একটা এসএমএস'এর জন্য যেখানে তুমি আমায় বলবা আমি ঠিক আছি তুমি চিন্তা করো না। কিন্তু সেদিন রাত শেষ হয়ে দিন হলো, তোমার চলে যাওয়ার সময় আবার ফিরে আসলো কিন্তু তোমার কোন রেসপন্স পাইনি। ফোন নাম্বারটাও অফ করা ছিলো। আর কোন পথ রাখোনি তোমার অসুস্থতার খোঁজ খবর নেওয়ার জন্য। তুমি হয়তো ভাবোনি আমি তোমায় নিয়ে কোন চিন্তা করি না বা করবো না। হয়তো সেজন্যই নিশ্চিন্তে হসপিটালের বেডে শুয়ে ছিলে। বিশ্বাস করো আমি সেদিন পাগল হয়ে গেছিলাম প্রায় যখন সকালেও তোমার কোন এসএমএস পেলাম না। আমি তবুও অপেক্ষা করছিলাম হয়তো আজকে রাতে তুমি আমায় বলবে, শোভন আমি ঠিক আছি একদম তুমু চিন্তা করো না। কিন্তু সেদিনও আমার আশা ভেঙে গেলো। আমি প্রতিদিন ঘন্টায় একবার করে চেক করতাম যে তুমি অনলাইনে আসছো কি না। জানো, আমি কোন কিছুতে মনোযোগ দিতে পারছিলাম না। আমি জানতাম তুমি খুব অসুস্থ ছিলে, কিডনির ইনফেকশন নিয়ে ভুগছিলে তুমি। আমায় কখনো ক্লিয়ার করে বলোনি তবে আমি বুঝতে পেরেছিলাম।

আমাদের পরিচয় কিন্তু সেই সময় খুব বেশি দিনের ছিলো না। মাসখানেক হবে আমাদের পরিচয় হয়েছিলো ফেসবুকে। কিন্তু কেমন জানি এতো দ্রুত তোমার প্রতি আমার মায়া জন্মে গিয়েছিলো। তোমায় এমনকি দেখিও নাই তখন, কণ্ঠ টাও শুনিনি, তবুও একটা শক্ত মায়া আমায় আটকে রেখেছিলো তোমার দিকে। এক অপরিচিতার জন্য আমার মন অশান্ত হয়ে উঠছিলো। কিন্তু কে জানতো অপরিচিতা মায়া তৈরী করে হঠাৎ হারিয়ে যাবে অপরিচিতা হয়েই। কে জানতো বলোতো, অপরিচিতা আমার রাতের ঘুম কেড়ে নিবে, দুশ্চিন্তায় সারারাত পার করতাম, কেমন আছো, কি করছো এসব ভেবেই ফজরের আযান দিয়ে দিত।

জানো, সেদিন আমি ভোরের আযান শুনে আর ঘুমাইনি, নামাজ পড়ে তোমায় সুস্থতা কামনা করছিলাম। আমি সত্যি খুব করে চাইতাম তুমি আবার ফিরে আসো, তোমায় এক নজর দেখার তীব্র ইচ্ছে জাগতো মনে, তোমার অসুস্থ, মন মরা মুখটা আমার চোখে কেমন ঝাপসা ভেসে উঠতো। আচ্ছা, তোমার কি আমার কথা মনে পড়েনি একবারের জন্যও? আমায়ও তো দেখোনি, আমার কণ্ঠও তো তখনো তোমার কানে স্পর্শ করেনি, একবারও কি ইচ্ছে হয়নি?

১০ দিন পাড় হয়ে গেলো তবুও তোমার কোন খোঁজ পাচ্ছিলাম না, কোথাও খুঁজে পাচ্ছিলাম না। বিশ্বাস করো আমার আর খোঁজার কোন জায়গা ছিলো না, আমি চেষ্টা করেছি খুব করে তোমার কাছে আমার তোমাকে দেখার, তোমার অবস্থা সম্পর্কে জানার তীব্র আকাঙ্খা পৌঁছাতে কিন্তু পারিনি। আমি আমার শহরের সকল ব্যাস্ত জনকথা ভুলে গিয়েছিলাম।

তোমায় এখনো বলা হয়নি, ১৪ দিন পরও যখন ফিরে আসলে না, আমি তোমায় অনেক বকছিলাম একা একাই সেদিন। তোমার উপর তীব্র অভিমান নিয়ে ভুলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিলাম, কিন্তু অজান্তেই আমার চোখের কোণে জল চলে এসছিলো। আমি অনেক হ্যাপি সময় কাটাতাম সব সময় কিন্তু সেদিনের পর থেকে সব যেন অন্ধকার লাগতে শুরু করেছিলো। একা পাখির মতো বসে থাকতাম আমার শহরে তোমার ফিরে আসার অপেক্ষায়। তোমায় দেখিনি, তোমায় শুনিনি তবুও কেন এতো মায়া ছিলো!

অবশেষে যখন আমি আশা ছেড়ে দিলাম তোমার ফিরে আসার, ১৫ দিন পর তোমার এসএমএস আসলো। আমি সেদিন সত্যি কেঁদে দিয়েছিলাম তুমি ফিরে এসেছো, এতো খুশি লাগছিলো। তুমি অনেক দুরে ছিলে, কিন্তু খুব করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে ইচ্ছে করছিলো সেদিন। খুব করে বকতে ইচ্ছে করছিলো, কেন হঠাৎ এভাবে হারিয়ে গিয়েছিলে। কিন্তু তুমি বললে আমি হসপিটালে ছিলাম কোন সুযোগ ছিলো না তোমায় জানানোর, আর দুঃখ প্রকাশ করলা। জানো, আমি সেদিন অনেক বেশি খুশি হয়েছিলাম যে তুমি সুস্থ হয়ে ফিরছো আমার শহরে।

সেদিনের পর থেকে এক দিনের জন্যও আড়াল হতে দেইনি তোমাকে আর কখনো হতেও দিব না।

IMG_20200917_200050 (1).jpg

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now
Ecency