সময় করে জীবনকে নিয়ে একটু ব্যতিক্রম ভাবে ভাবতে হয়। সেটা পরিবার, সমাজের দায়িত্ব বাদ দিয়ে। কিন্তু আমরা বেশি ভাবতে পছন্দ করি সমাজকে নিয়ে। নিজেকে নিয়ে ভাবার আগেই সমাজের মানুষকে নিয়ে ভাবি। কারণ আমরা নিজের থেকেও অন্যদের পছন্দ কে বেশি মূল্যায়ন করি। আমাদের পরিবার একটা নিয়ম খুব ভালো ভাবে মেনে চলে। সেটা হল, শিশু জন্ম হওয়ার পরপরই সে শিশুর পিতামাতা সিদ্ধান্ত নেয় সে ভবিষ্যতে কি হবে। তাদের ইচ্ছেমতো ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার এইসব ট্যাগ সেই সদ্য জন্ম নেওয়া শিশুর সাথে লাগানো হয়।
পিতা-মাতা সেই ভাবেই তার সন্তানকে বড় করে। কখনো জিজ্ঞাসা করে না সে বড় হয়ে কি হতে চায়। তার মধ্যে কোন জিনিসটার প্রতি আকর্ষণ বেশি দেখা যায়। আমি মনে করি কারো যদি নিজের ইচ্ছা অনুযায়ী ভবিষ্যৎ বাছাই করা হয় অবশ্যই তার প্রতিভা বিকশিত হবে। অনেক পিতা-মাতা তার সন্তানের প্রতিভা বিকাশ করার জন্য সাহায্য করে। আবার অনেক পিতা-মাতা-সন্তান এর প্রতিভা দেখেও না দেখার ভান করে এড়িয়ে যায়। যার কারণে অনেকেই অল্প বয়সে পড়াশোনা থেকে ঝরে পড়ে। ঠিক এই কারনে অনেকে নিজেকে নিয়ে ভাবার অথবা নিজেকে অনুসন্ধান করার কোন সময় কিংবা সুযোগ কোনটিই পায় না। সময় পেলে তখন আর ইচ্ছেটাই থাকে না। সব মানুষেরই অধিকার রয়েছে নিজের মতো করে বাঁচার। নিজের যেটা ভালো লাগে সেটার সাথে জীবনটা উপভোগ করে কাটানোর।
আমি আমার জীবনটাও নিজের ইচ্ছাতে কাটাচ্ছি না। এখনো নিজেকে নিজের ভেতর খুঁজে বেড়াই। নিজের ইচ্ছে গুলোকে খুজে বেড়াই। মাঝেমধ্যেই সবার মত আমিও ভাবি আমি এখন পর্যন্ত যতটা এসেছি, সেটা কি আমার ইচ্ছে নাকি আমার পরিবারের। সত্যি বলতে আমার পরিবার আমার নিজেকে খুঁজতে দেওয়ার সময় দিয়েছিলো। আমি যেটাই নিজেকে নিয়ে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেছি আমার পরিবার সেটাই আমাকে দিয়েছে। এই সবকিছুর মধ্যেও মাঝেমধ্যে নিজের মনে প্রশ্ন উধয় হয় আমি আসলে আমার জীবনের সবকিছু নিয়ে কতটা সুখী। যখনই রাতে ঘুমের জন্য চোখ বন্ধ করি নিজের জীবনকে নিয়ে হাজারো প্রশ্ন জাগে। তখন অন্তত নিজেকে খুঁজে বেড়াই। নিজের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানার তীব্র আকাঙ্ক্ষা তখন মনের মধ্যে জাগ্রত হয়। জীবনের নানা প্রশ্ন নিজেকে ঘিরে ধরে। বারবার নিজের মনের মধ্যে আকাঙ্ক্ষা জাগে নিজেকে খুঁজে বের করার। আসলে জীবনের প্রতিটা দিনই হয়তো মানুষ নিজেকে খুঁজতে ব্যস্ত থাকে।
শুধু নানা ধরনের দায়িত্ব কর্তব্যের কারণে আমরা নিজেকে খেয়াল করতে ভুলে যাই। পরিবারের দায়িত্ব, সমাজ কি বলবে এইসবের ভীড়ে আমরা নিজেকে বুঝতে পারি না। কখনো নিজেকে প্রশ্ন করা হয় না তুমি তোমার জীবনটাকে নিয়ে কতটা সুখী। জীবনের সকল চাওয়া পাওয়া গুলোর মধ্যে একটাও কি পূরণ করা হয়েছে!! এ প্রশ্নগুলো আমার কাছে এখন খুব জটিল মনে হয়। জীবনের অনেকটা সময় পার করে এখন নিজেকে খুঁজে বেড়ানো টা বোকা বোকা লাগে। কারণ এখননিজেকে খুঁজতে প্রয়োজন হয় না। কারণ সময়ের সাথে আছি জীবন চলে যাচ্ছে। কিছু কিছু মানুষ সব সময় জীবনকে নিয়ে অনুসন্ধান করতে পছন্দ করে। যদি কখনো নিজেকে খুঁজে পেয়ে যান তাহলে ভাববেন আপনি জীবনে সুখের রাস্তায় হাঁটছেন।