আমার জীবনের স্মরনীয় আড্ডা, যার আমার হৃদয়ের চিরকাল চিরসবুজ হয়ে থাকবে। (My Best Hangingout Time Ever)

”জীবন মানে বহতা নদী থেমে সেতো থাকে না” আসিফ আকবরের এই গানটি আমার জন্য যেমন স্মৃতি বিজারিত ঠিক ততটাই সত্যি এই গানের প্রথম বাক্যটি। বহতা নদীর মতো জীবনের মহূর্তগুলো ক্রমানয়ে অতীত হয়ে যাচ্ছে। সূখময় মহূর্তগুলো আজ শুধু স্মৃতি পাতায় চির সজীব হয়ে আছে। চরম বাস্তবতা সেই স্মৃতির পাতায় ধূলো জমিয়ে দিয়েছিলো। ধন্যবাদ @bdcommunity,আমাকে আমার স্মৃতির পাতা থেকে ধূলো গুলো ছেড়ে ফেলে দেবার সুযোগ করে দেবার জন্য। আমি গত দুই দিন থেকে ঠিক এটা ভাবি নাই যে আমি এই লেখা প্রতিযোগীতার জন্য কি লিখতে যাচ্ছি। গত দুই দিন আমি আমার স্মৃতি পাতা গুলো ঠিক উল্টে পাল্টে দেখতে ছিলাম। ফোকাসটা ঠিক আড্ডাবাজির উপরেই ছিল। জীবনের যে স্তর গুলো পাড়ি দিয়ে এসেছি, প্রতিটি স্তরের খুব ভালো বন্ধুদের কথা মনে পড়ে গেছে গত দুই দিনে। যাদের সাথে দীর্ঘদিন যাবত যোগাযোগ হয় নাই গত দুই দিন চেষ্টা করেছি তাদের সাথে যোগযোগ করার, যাদের মোবাইল নম্বর এবং সোসাইল মেডিয়া একাউন্ট আমার জানা আছে।

আড্ডাবাজি বাঙ্গালীর রক্তে মিশে আছে। বয়স কখনো বাঙ্গালীর আড্ডাবাজীকে থামিয়ে রাখতে পারে নাই। কোমলমতি শিশু যারা আড্ডাবাজির সংজ্ঞাই ভালো করে জানে না তারাও আড্ডা দিতে ভূল করে না, গ্রামে কিংবা শহরের বৃদ্ধ দাদু, দিদারাও আড্ডা দিতে ভালোবাসেন তাদের সমবয়সিদের সাথে। কিশোর, যুবক এবং মধ্যবয়স্কদের কথা আবার নতুন করে বলার কিছুই নেই। সমবয়স্ক দুই জন, তিন জন অথবা তার অধিক একত্রিত হলেই সেখানে আড্ডা শুরু হয়ে যায়, আড্ডার জন্য সময় কাল এবং যথাযথ পরিবেশের প্রয়োজন হয় বাঙ্গালীদের জন্য। তারা বাজারের চায়ের দোকানে আড্ডা দিতে পারে তেমনি পারে বিকাল বেলা কোন স্কুল, কিংবা কলেজ মাঠের সবুজ ঘাসের উপরের বসে। অস্থির গরমে যখন জন জীবন অতিষ্ঠ, গ্রামের মানুষগুলো চাঁদনি রাতে বাড়ির উঠানে মৃদু ঠান্ডা বাতাসে আড্ডা দিতে কখনো ভূল করেন না, এই আড্ডায় বয়স কোন বাধা মানে না।


মন আজ বড়ই আড্ডাবাজ হতে চায়
image src

আমি যে খুব বেশি আড্ডাবাজ ছিলাম ঠিক তেমনটা নয়, তবে আড্ডা দিতে খুব ভালো বাসতাম। আমার মতে আড্ডা বাজির মজাটা ঠিক তখনি পাওয়া যায়, যখন কোন সঠিক সময়ে বাসায় ফেরার কোন প্রকার তাড়া থাকে না। মায়ের বকুনি খাবার কোন প্রকার সম্ভাবনা থাকে না, এক কথায় আপনি যখন স্বাধীন জীবন যাপন করতে শুরু করেন ঠিক তখনি হয়তো আড্ডাবাজির ঠিক মজাটা পাওয়া যায়। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপট পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, বাংলাদেশের অধিকাংশ ছেলে মেয়েরা হয়তো কলেজ জীবনে অথবা ইউনিভার্সিটি জীবনে নিজ পরিবারকে ছেড়ে এবং নিজ শহরকে ছেড়ে অন্য শহরের লেখা পড়া করতে যায় এবং এই সময়টা তারা নিজেদেরকে স্বাধীন বলে দাবি করে। কারন এই সময়ে রাত জেগে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলে বকুনি দেবার মতো আসলে কেউ থাকে না। মেসের রুমমেটদের সাথে রাত জেগে কার্ড খেলা, আর আড্ডা, হয়তোবা ভার্সিটির হলের ছাদে বসে বন্ধুদের সাথে গিটার নিয়ে গান করে আড্ডা দেয়া এই স্মৃতিগুলো কেউ কখনো ভূলতে পারবে না।

ক্যাম্পাসের কত রমনী আড্ডা বাজির কেন্দ্রিয় চরিত্র হয়েছিল, সেই রমনীরা যদি এই সব কথা কোন দিন জানতে পারতো, তারা কখনো কল্পনাও করতো না তাদের বন্ধুরা তাদেরকে নিয়ে এমন সব মন্তব্য করতে পারে। সদ্য প্রেমে পড়া কোন প্রেমিক যদি আড্ডায় উপস্থিত থাকে, তাকে ক্ষেপিয়ে তোলার সর্বত্তোম অস্ত্র থাকে আড্ডাবাজির সদস্যদের কাছে। আমার কলেজ জীবনের কথাই বলি, কতই না ক্লাস ফাকি দিয়ে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে যেতাম রাজশাহীর পদ্মা নদীর তীরে। নিজের কলেজের মেয়েদেরকে প্রতিদিন দেখতে দেখতে যখন বিরক্ত হতাম চলে যেমাত মহিলা কলেজের সামনে অথবা বালিকা স্কুলের সামনে আড্ডা দিতে। উদ্দেশ্য আড্ডার ছলে রমনী দর্শন। কলেজ জীবনে আড্ডায় বন্ধুদের থেকে প্রথম সিগারেট নিয়ে, একটান দেবার পর যখন কাশতে কাশতে চোখ দিয়ে পানি এসে গিয়েছিলো, আর তা দেখে বন্ধুরা নিজের হাসি থামাতে পারছিলো না, আমি আজও পারি নি সেই দিনটির কথা ভূলতে।

আমি মিথ্যা কথা বলবো না আজকে, আজ মন খূলে সবকিছু শেয়ার করতে চাই আপনাদের সাথে যদিও প্রতিযোগীতার বিষয় নির্ধারন করা হয়েছে আপনার জীবনের সেরা আড্ডার দিনটি, আমি একটু নিয়মের ব্যতিক্রম করতে চাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা সুন্দুর দৃষ্টিতে দেখবেন আপনারা, কারন আমার জীবনের অতীতের আড্ডার প্রতিটি আড্ডার সময় আমাকে খুবই আনন্দিত করে তোলে। আজ বহুবছর পরে সুযোগ পেয়েছি, সকল স্মৃতি একত্রে স্মরন করার, ছেড়েই বা দেই কেমন করে। তাই ভূমিকা হিসাবেই লিখছি, যদিও ভূমিকাটা একটু বড়ই হচ্ছে।

আড্ডাবাজির যেমন ভালো দিক আছে, এর যে খারাপ দিক নেই তা কিন্তু নয়। কলেজের দ্বিতীয় বর্ষে এসে কিছু খারাপ আড্ডাবাজদের চক্করে পড়ে গিয়েছিলাম আমি। তাদের সাথে আড্ডার ফাঁকে ফাকেঁ শিখেছিলাম প্রথমবারের মতো গাজা সেবন করা। তবে আমি ভাগ্যবান আমি এই গাজা পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ছিলাম এবং তা শুধু বিশেষ বিশেষ দিনে সেবন করতাম। কলেজ জীবন শেষ করে যখন ইউনিভার্সিটিতে উঠলাম, আড্ডাবাজির ধরনটা কেমন জানি পরিবর্তন হয়ে গেল। তখন আর খেলার মাঠে, স্কুলের মাঠে কিংবা নদীর তীরে আড্ডা দিতে ভালো লাগতো না, অপেক্ষায় থাকতাম কখন রাত্রি হবে। বাড়ির মালিক কখন ঘুমিয়ে যাবে। আর আমরা বসব কার্ড নিয়ে। সাথে থাকবে সামন্য কিছু বেনসন সিগারেট। যা আমরা খেতাম চারভাগ করে। সেই চারভাগ ও করতাম স্কেল দিয়ে দাগ পরিমাপ করে। প্রথম দিকে খেলতাম কল ব্রিজ তার পর শিখে গেলা ২৯ কার্ড এবং তারপর শিখলাম হাজারী। কার্ড খেলে আড্ডা দিয়ে কখন ভার্সিটি জীবন শেষ হয়ে গেল ঠিক বুঝতেই পারলাম না।

আড্ডাময় এই দিনগুলি এবং রাতগুলি জীবনে আর কখনো ফিরে পাবো কিনা জানি না। এখন প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে তাড়াতাড়ি করে অফিস যাই, অফিসের সময় শেষ হয়ে গেলে, বাসায় ফেরার জন্য নিজেকে খুব তাগিদ দেই, কয়েকজন কলিগ আছে বন্ধুর মতো তাদের সাথে হয়তো সপ্তাহে একদিন ২০-৩০ মিনিট এর আড্ডা হয়, কিন্তু এটাকে আড্ডা বলা যায় না, কারন আড্ডার বিষয়ের কেন্দ্র বিন্দুতেও থাকে অফিস নামের সেই চিড়িয়াখানাটা। ক্লান্ত শরীরের যখন বাসায় ফিরে আসি, তখন আমার আড্ডা দেবার মনটাকে যেন নিস্তেজ করে দেয় এই ক্লান্ত শরীর, যদিও বা আড্ডা দিতেও মন চায়, আড্ডাটা দেব কার সাথে, সেটাই তখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাড়ায় নিজের কাছে। তাই আপনাদের সাথেই আড্ডা দেবার চেষ্টা করি। প্রতি শুক্রবার আশায় থাকি রাত দশটা কখন বাজবে। কখন আমি আমার খুব চিরচেনা মানুষদের কন্ঠ শুনতে পাবো। কখনো সবাই মিলে হাসি, ঠাট্টা এবং সিরিয়াস কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করবো। আপনাদের ক্ষেত্রে বিষয়টা কেমন আমি জানি না। হয়তো আপনারা এখনো আড্ডা দেন নিজেদের বন্ধু বান্ধবিদের সাথে। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে বিষয়টা সম্পূর্ন ব্যতিক্রম। কেন জানি না আপনাদের সকলকেই আমার খুব পরিচিত এবং খুব আপন মনে হয়। চুপ করে আপনাদের সকলের কথা শুনতে খুব ভালো লাগে আমার। প্রকৃত পক্ষে আমরা সকলেই অনেক ভাগ্যবান যে আমরা এখনো আড্ডা দেই।

আমার জীবনের সেরা এবং স্মরনীয় আড্ডার মহূর্তঃ

যদি বলি আমার জীবনের সেরা আড্ডার কথা, তাহলে আপনারা হয়তোবা অবাক হবেন। আমার জীবনের সবচেয়ে খুব ভালো দুইজন বন্ধু হচ্ছে আমার দুই চাচাতো ভাই এবং তারা দুজন যমজ। ছোট বেলা থেকেই অমরা একসাথে বড় হয়েছি। কিন্তু দূভার্গ্যক্রমে আমার বাবার চাকুরীর সুবাদে আমারা সদূর কক্সবাজারে পাড়ী জমাই। আমার কিশোর জীবনের সম্পূর্নটাই কেটেছে, ঈদগাদ নামের একটি ছোট্ট শহরে যেটা কক্সবাজার জেলায় অবস্থিত। স্কুল জীবনে তেমন আড্ডাবাজ ছিলাম না, কারন তখন মা বাবার সাথেই থাকতে হতো। সন্ধ্যার পরে কখনোই বাসার বাহিরে যেতে পারতাম না। তখন আমি দশম শ্রেনির ছাত্র। খেলাধুলা খুব ভালোবাসতাম আমি। বিশেষ করে ক্রিকেট এবং আমার সকল বন্ধু বান্ধব ও ক্রিকেট খুব ভালোবাসতো, আমাদের আড্ডার বিষয়ের ক্রেন্দ্র বিন্দু তখন শুধু ক্রিকেট এই ছিল এবং মাঝে মাঝে সুন্দরী বান্ধবীরাও উকি ঝুকি মারতো। ক্লাসে খুব ভালো ছাত্র ছিলাম, গনিত এবং রসায়ন খুব ভালো বুঝতাম, সকলের খুব প্রিয় পাত্র ছিলাম, তাই আড্ডা দিতোও ভয় পেতাম খুব। কারন সেই সময় আড্ডাবাজ ছেলেদেরকে খারাপ ছেলে হিসাবে অখ্যায়িত করা হতো।

সময়টা ২০০৬ এর ঠিক শেষের দিকে। দশম শ্রেনির প্রাক-প্রবেশিকা অর্থাৎ যাকে আমরা টেস্ট পরীক্ষা বলে থাকি, তা আর দুই দিনের মধ্যেই শেষ হতে যাচ্ছে। ঠিক সেই সময় আমাদের স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ঘোষনা করলেন যে, প্রতিটি বিভাগের এক হইতে দশ রোল পর্যন্ত সকল ছাত্রকে স্কুল হোস্টেলে বাধ্যতামূলক থাকতে হবে এবং তা শেষ পরীক্ষার দিনেই সকলকে স্কুল হোস্টেলে উঠতে হবে। তাদের স্পেশাল পরিচর্চা করা হবে বিনা অর্থে স্কুল কতৃপক্ষের পক্ষ থেকে। এই ঘোষনা শোনার পর আমাদের সকলের মনের ভিতরে যেন আনন্দের ঘন্টি বেজে উঠলো। জীবনের এই প্রথম বাবা মায়ের শাষনের বাইরে থাকতে পারব। ভাবতেই খুব খুশি লাগছিল। আমাদের কয়েকজন বন্ধু পূর্ব থেকেই ছাত্রাবাসে থাকত।

শেষ পরীক্ষার রাতেই আমরা আমাদের প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র গুছিয়ে রেখেছিলাম এবং অনেকে সাথে করেও নিয়ে এসেছিল। আমার বাসা স্কুল থেকে খুব কাছে হওয়ায় আমি নিয়ে আসি নাই। বিকালের মধ্যেই আমারা সকলে ছাত্রাবাসে অবস্থান নিলাম এবং সন্ধ্যায় স্কুল সভাপতি ঘোষনা করলেন আজকে তোমরা আনন্দ করো অনেকদিন কষ্ট করেছো, আজকে আর কোন প্রকার পড়াশুনা না। এই বলে উনি হোস্টেলের সকল চাবি এবং দায়িত্ব আমাদের স্কুল হোস্টেলের ৯ বৎসর বয়সের কেয়ারটেকার যদি ভূলে না যাই তাহলে ওর নাম ছিল জুম্মনকে সব দায়িত্ব বুঝিয়ে দিয়ে গেল। আমাদের খুশি দেখে কে। রাতে কি করা সেই পরিকল্পনায় ছক কশা কশি নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লাম সকলেই। যেই ভাবা সেই কাজ, রাত্রে হোস্টেলের ছাদে সিনেমা দেখা হবে। দায়িত্ব পড়ল কয়েক বন্ধুর উপর, আমার উপর পড়ল সিডি প্লেয়ারের, কারন কিছু দিন আগেই জিৎ এর সাথি সিনেমা দেখার জন্য আমার বাবা সিডি প্লেয়ার কেনেন। এক জনের উপরের পড়ল টেলিভিশনের দায়িত্ব এবং একজনের উপর পড়লো সিডি ডিস্ক এর দায়িত্ব। আমি অনেক কষ্টে মাকে রাজি করিয়ে বাবার আজান্তে সিডি প্লেয়ার নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছিলাম এবং সকলেই যে যার কাজে সফল। রাত্রে খাবার পর্ব শেষ করে, যখন জুম্নন সাহেব ঘুমিয়ে পড়লেন তখন ওর কোমড় থেকে ছাদের চাবি নিয়ে আমার ছাদ খুলে ফেলি এবং চাবি আবার ওর কোমড়ে রেখে দেই। তারপর আমাদের সকলের রুমের আলো নিভিয়ে দিয়ে, দরজা লাগিয়ে দিয়ে সবাই ছাদে চলে যাই। আমাদের ছাত্রবাসের আসে পাশে কোন আবাসিক বাড়ী ছিল না। ছিল শুধু কিছু দোকান পাট। আর ওগুলো রাত আটটার মধ্যেই বন্ধ করে দিত। তাই আমাদের কোন প্রকার সমস্যা হয় নাই। আমরা সকলেই খুব মজা করতে ছিলাম। প্রথমে আমরা হিন্দি গানের সিডি চালাই এবং সকলেই গানের সাথে নাচি। তারপর ক্লান্ত হলে আমরা সকলে বসে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আড্ডা দেই। আড্ডার কেন্দ্র বিন্দুতে ছিল আমাদের ক্লাসের সুন্দরী মেয়েরা। কার কাকে ভালো লাগে। কে কাকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে চায়। কে কাকে প্রেমের প্রস্তাব দিবে এবং সেটা বিদায় অনুষ্ঠানের আগে না পড়ে। এক পর্যায়ে এসে দেখা গেলো সানজিদা নামের সবচেয়ে সুন্দুরী মেয়েটাকে একাধিকজনে ভালোবাসে এবং পছন্দ করে। আমারা এই বিষয়টার কোন প্রকার সমাধানে পৌছাতে পারলাম না শেষ অবধি।

আড্ডায় পড়াশুনার বিষয়গুলোও বাদ যায় নি সেদিন। কে কে খুব ভালো ফলাফল করতে পাড়ে এবং কার প্রস্তুতি বর্তমানে কেমন এবং কার কোন কোন বিষয়ের দূর্বলতা আছে সব আলোচনা করেছিলাম আমরা সেদিনের আড্ডায়। আড্ডা দিতে দিতে ভূলেই গিয়েছিলাম, যে আমরা রাতে দেখার জন্য কয়েকটা ফ্লিম এনেছিলাম। জানি না আপনার বিষয়টিকে কেমন ভাবে নিবেন, সেই দিন আমরা সকল বন্ধুই জীবনের প্রথম পর্ণ মুভি দেখেছিলাম এবং আমাদের সকলের উদ্দেশ্যও ছিল এই পর্ণ মূভি দেখা। বিষয়া ভাবলে এখনো আমার খুব হাসি পায়, কি পরিমান যে ছেলে মানুষি ছিল আমাদের সকলের সেদিনের বিষয়গুলো। বর্তমান যুগের ছেলে মেয়েরাতো দশন শ্রেনিতে ওঠা লাগে না তার আগেই পর্ন মুভির সকল ক্যাটাগরি বলে দিতে পারে। সেই সময় আমাদের কাছে পর্ন মুভি দেখাটা মূখ্য বিষয় ছিল না ছিল সকলে মিলে আনন্দ করা। তাই হয়তো আমরা একসাথে ৩০ জন পর্ন মুভি দেখতে পেরেছিলাম। আজকালের জামানায় এটা সম্ভব নয়। বিষয়টি আপনাদের কাছে খারাপ লাগলেও আমারা বন্ধুরা সকলেই সেদিন খুব বেশি আনন্দ করেছিলাম। ভালোর মাঝে একটু আধটু খারাপ থাকলে কিছু যায় আসে না। আমাদের সকলের জীবনের প্রথম স্বাধীনতা, প্রথম স্বাধীনভাবে বন্ধুদের সাথে গভীর রাতে আড্ডা দেয়া, প্রথম পর্ণ মুভি দেখা, সর্বপ্রথম আড্ডা দিয়ে রাত জাগা, আমাদের ৩০ বন্ধুর মনের ভিতরে চিরকাল চির রঙ্গীন হয়ে থাকবে সেই রাতটি। আমারা এখনো একত্রিত হলে সেই রাতের কথা আমাদের আড্ডার বিষয় হয়ে যায়। কারন সেই রাতকে আমারা আমাদের মনে চিরকাল ধরে জীবিত রাখার প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছি।

জীবনের হয়তোবা অনেক আড্ডাই দেয়া হবে কিন্তু সেই দিনের মতো ছেলে মানুষি, সেই দিনের মতো উন্মাদনা, সেই দিনের মতো উল্লাস হয়তো আর কখনো ফিরে আসবে না জীবনে। আজ আমার এই লেখায় আমি আমার সেই রাতে সঙ্গি সকল বন্ধুকে স্মরন করছি। সৃষ্টিকর্তা তাদের সকলের জীবন সুখ এবং সমৃদ্ধি দান করুক। আমার এই ব্লগ আমি তাদেরকে উৎসর্গ করলাম।

Thanks for being with me.

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now