This content was deleted by the author. You can see it from Blockchain History logs.

রংপুর চিড়িয়াখানা ভ্রমণ

আসসালামু আলাইকুম


আশা করি আল্লাহর অশেষ রহমতে আপনারা সবাই ভালো আছেন। আমিও আল্লাহর রহমতে ভালো আছি।


আজকে আমি একটি ভ্রমণ কাহিনী সম্পর্কে লিখতে যাচ্ছি। গত মাসে আমি আমার বন্ধুদের সাথে রংপুর চিড়িয়াখানা বেড়াতে গিয়েছিলাম। সেই ভ্রমন কাহিনীটিই এখন আপনাদের সাথে শেয়ার করবো। তো চলুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

রংপুর চিড়িয়াখানা


20220121_160023.jpg

রংপুর চিড়িয়াখানার প্রধান ফটক

যেখানে বন্য প্রাণী বন্দী অবস্থায় সংরক্ষণ ও গবেষণার জন্য রাখা হয় তাকে চিড়িয়াখানা বলা হয়ে থাকে। পৃথিবীর প্রায় সব বড় বড় শহরেই চিড়িয়াখানা আছে। তেমনি আমাদের রংপুর শহরেও একটা চিড়িয়াখানা আছে যেটি আমাদের বাংলাদেশের ২য় বৃহত্তম চিড়িয়াখানা এবং এটি ১৯৮৯ সালে প্রতিষ্ঠিত করা হয়। এই চিড়িয়াখানাটির আয়তন প্রায় ২০.২৭ একর। এখানে প্রায় ২৮ টি প্রজাতির ১৯৩ টি প্রানী আছে। চিড়িয়াখানার ভিতরে একটা শিশু পার্কও আছে যেখানে শিশুদের মজা করার জন্য অনেক সামগ্রী উপস্থিত আছে।

কিভাবে যেতে হয়


20220421_150428.jpg

গুগল ম্যাপে স্টেশন থেকে চিড়িয়াখানার দুরত্ব

দেশের ২য় বৃহত্তম এই চিড়িয়াখানাটি রংপুরের হনুমান তলায় অবস্থিত। রংপুর রেলওয়ে স্টেশন থেকে যার অবস্থান ৪.২ কিলোমিটার। তাই কেউ যদি রংপুর শহরের বাইরে থেকে আসে এবং ট্রেনে করে আসে তাহলে স্টেশন থেকে একটি রিকশা বা অটো নিতে হবে। রিকশাতে গেলে ভাড়া একটু বেশী নিবে। আবার কেউ যদি সড়ক পথে রংপুরের বাহির থেকে চিড়িয়াখানা ভ্রমণ করতে আসে তাহলে তাকে প্রথমে শাপলা চত্বরে যেতে হবে। শাপলা চত্বর থেকে চিড়িয়াখানার দুরত্ব মাত্র ২.৬ কিলোমিটার। শাপলা চত্বর থেকে তারপর একটা অটো বা রিকশা নিতে হবে। এভাবেই রংপুর চিড়িয়াখানায় যেতে হয়।

IMG_20220321_150218 (1).jpg

সুপার মার্কেটে হেডফোন কেনার সময় তোলা সেলফি

আমি রংপুরেই থাকি। সেদিন কোচিং করে বের হয়ে মোবাইল বের করে দেখলাম।যে আমার বন্ধু কাওসার ২বার মিসড কল দিয়েছে। তারপর কাওসারের কল ব্যাক করলাম। কল ব্যাক করতেই কাওসার বললো যে সে বই কেনার জন্য রংপুরে এসেছে তাই শাপলা চত্বরে গিয়ে একটা অটো নিয়ে চলে গেলাম পুরাতন লাইব্রেরিতে। সেখা গিয়ে কাওসারের সাথে দেখা করলাম ওর সাথে ওর একটা ছোটো ভাইও এসেছিলো। বই কেনার পর আমরা চলে গেলাম সুপার মার্কেটে। সেখানে গিয়ে আমার বন্ধু কাওসারের ছোটো ভাই একটা ব্লুটুথ হেডফোন কিনলো। তারপর আর দেরি না করে চলে গেলাম চিড়িয়াখানায়।

20220121_163124.jpg

20220121_165357.jpg

20220121_164118.jpg

খাচার ভিতর সিংহ, বানর ও হরিন

এই রংপুর চিড়িয়াখানা আমার মুখস্থ ছিলো। কেননা আমি এখানে ২০ বারেরও বেশীবার এসেছি। চিড়িয়াখানায় এসে সোজা গিয়ে জলহস্তী দেখলাম। তারপর তিনজন মিলে পুরো চিড়িয়াখানাটি ঘুরে দেখলাম। সিংহের খাচার কাছে অনেক মানুষ ভীড় করেছিলো কেননা সিংহ হটাত করে গর্জন করে উঠেছিলো। আমার সবচেয়ে মজা লেগেছে বানরের খাচার কাছে গিয়ে। সেখানে একটা ছোটো ছেলে একটা চিকন লাঠি নিয়ে বানরকে মারছে। এটা দেখে সেখানকার অনেকেই হাসলো। কেননা ছেলেটার মাথায় অনেক বুদ্ধি ছিলো। সে একটা কলার খোসা নিয়ে ধরে বানরকে ডাকছিলো। বানরেরা সেটা খেতে আসতে খাচার ফাক দিয়ে সে মারছিলো তাদের।

IMG_20220321_155505.jpg

IMG_20220321_163158.jpg

বাম পাশে আমি ও ডান পাশে টিয়াপাখির ছবি
***
ঘুরতে ঘুরতে আবরো গেইটের কাছে চলে আসলাম। এসে দেখলাম যে টিয়া পাখি খাচার ভিতর খাবার খাচ্ছে। আমি মোবাইলের ক্যামেরাটা খাচার ফুটোর কাছে নিলাম আর ছবি তুললাম। আমার ছবি তোলা দেখে একটি মহিলাও ওইরকমভাবে ছবি তোলা চেষ্টা করলো কিন্তু পারলো না। সেখান থেকে চলে গিয়ে চিড়িয়াখানার ভিতরে থাকা শিশু পার্কের ভিতর ঢুকলাম। শিশু পার্কের ভিতর শিশুদের তুলনায় তরুন তরুণীরা বেশী ছিলো। এই শিশু পার্কটির ভিতরে শিশুদেরবিনোদনের জন্য অনেকগুলো খেলনা সামগ্রি আছে। তবে বড়রাও এইসব জিনিস উপভোগ করে থাকে। শিশু পার্কের ভিতরে একটা বেঞ্চে বসে বিশ্রাম নিলাম।

1647873003068 (1).jpg

IMG_20220321_160230.jpg

ভূতের ঘর-সংসার ও নিচের ছবিতে স্টেশনে আমি ও আমার বন্ধু কাওসার

তারপর দেখলাম যে সেখানে নতুন একটা জিনিস তৈরি করেছে যেটার নাম ছিলো ভূতের ঘর-সংসার। আমি খুব ভীতু প্রকৃতির একটা ছেলে। আমি হরর মুভিগুলোই দেখি না আর ভূতের ঘর-সংসার দেখার জন্য কি করে যাই বলুন। কাওসার আমাকে অনেক জোড় করলো কিন্তু তবুও আমি সেখানে গেলাম না। তাই আর ওরাও ঢুকলো না সেখানে। শিশু পার্কে কিছুক্ষন ঘুরাঘুরি করে বিকালে সেখান থেকে বের হলাম। তারপর রংপুর টাউন হলের সামনের ঢাকা বিরিয়ানি হাউজে এসে বিরিয়ানি খেলাম। এরপর কোকা কলা নিয়ে একটা রিকশায় উঠলাম। রংপুর রেলওয়ে স্টেশনে কাওসারকে ট্রেনে উঠিয়ে দিয়ে আমি মেসে ফিরে আসলাম। আর এভাবেই আমার ভ্রমন শেষ হলো।

তো বন্ধুরা এই ছিলো আমার আজকের পোস্ট। আশা করি আপনাদের সবার ভালো লেগেছে। সবাই ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন।


ধন্যবাদ সবাইকে 💙