বিন্যান্স : স্পট ট্রেড থেকে ফিউচার ট্রেডে যাত্রা!

ক্রিপ্টোকারেন্সি দিন দিন জনপ্রিয় হচ্ছে। মানুষ এখন ধীরে ধীরে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাঝে ঝুঁকছে। পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে অথবা যে কোনো প্রান্তে এত সহজে ও অল সময়েই যে আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব হতে পারে, তা আমি ২ বছর আগে কল্পনাও।করতে পারতাম না। অথচ আজ বুঝতে পারছি, পৃথিবীটা আমাদের জন্য কত ছোট হয়ে গিয়েছে। ঠিক ছোটবেলায় পড়া সেই গ্লোবাল ভিলেজ রচনাটার মতো, যেখানে পুরো পৃথিবীকে একটি গ্রাম হিসেবে উপস্থাপন করা হত।

img_0.041610504004588655

বিন্যান্স এর সাথে আমার পরিচয় প্রায় দেড় বছর আগে। একজনের পরামর্শে মোবাইলে এপটা ইন্সটল করে রেখেছিলাম। তখন অবশ্য কিছু বুঝতাম না। ট্রেডিং সম্পর্কে তো একেবারেই ধারনা ছিল না। অবশ্য তেমন একটা আগ্রহও ছিল না।

তবে এই বছরের শুরুটা আমার জন্য কিছুটা আলাদা। ক্রিটোকারেন্সি, ট্রেডিং ইত্যাদির প্রতি আমার কোনো এক অদ্ভুত কারণে আগ্রহের সৃষ্টি হয়। ইউটিউব, গুগল, রেডিটসহ কিছু কিছু জায়গায় এসব নিয়ে ঘাটাঘাটি শুরু করলাম আর টুকটাক ধারনা নেয়ার চেষ্টা করলাম। ধীরে ধীরে একটু একটু করে এগুলো সম্পর্কে কিছুটা হলেও আইডিয়া তৈরি করতে পেরেছিলাম নিজের ভেতর।

আমি প্রথমে স্পট ট্রেডের মাধ্যমে যাত্রা শুরু করেছিলাম। যদিও এটাকে কখনোই তেমন একটা সুবিধা করতে পারি নি। তবে যারা এক্সপার্ট, তাদের কাছ থেকে টুকটাক জেনে জেনে কয়েন বাই/সেল করতাম। এমন না যে প্রফিট হত, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লস হতো। এমনও হয়েছে যে ৫০ ডলার দিয়ে ট্রেডিং শুরু করেছি, একদিনের মাঝেই সব খরচ করে ফেলেছি। সেসময়টাতে নিজের উপর রাগ হতো, খারাপ লাগতো। কিন্তু কোনো এক অদ্ভুত কারণে ক্রিপ্টো ট্রেডিং এর প্রতি একটা নেশা তৈরি হয়ে গিয়েছিল।

img_0.8287078793146643

ধীরে ধীরে ট্রেডিং বুঝতে শিখলাম। এখন প্রফিট তেমন একটা না হলেও লস হয় না। তবে প্রফিট কিংবা লসের চেয়েও বড় বিষয় হল আমি এগুলো নিয়ে ঘাটাঘাটি করতে এখন অনেক বেশি আনন্দ পাই। এইটাই আমার জন্য অনেক বেশি কিছু।

ট্রেডিং এর ক্ষেত্রে আমি সবচেয়ে বড় প্রফিট অর্জন করেছিলাম মূলত টেরার লুনা ক্র‍্যাশ করার পর। লুনার প্রাইস শূণ্য হয়ে যাবার পর মজা করে ২০ ডলারে ৪ লাখের মতো লুনার কয়েন কিনেছিলাম। এই গল্পটা অবশ্য এর আগের একটা পোস্টে শেয়ার করেছিলাম। তবুও আজ আবার লিখছি।

এই ২০ ডলারের লুনা ৪-৫ দিনের মাথায় প্রায় আড়াইশো ডলার ভ্যালু হয়ে গিয়েছিল। আমি তো পুরাই অবাক। এত অল্প সময়ে এত প্রফিট আমি কখনো করতে পারি নি। আমার জন্য সেই দিনটা অনেক আনন্দের ছিল। যদিও ৫০% লুনা সেল করে দিয়ে বাকি ৫০% ওয়ালেটে রেখে দিয়েছিলাম। ভেবেছিলাম প্রাইস আরো বাড়তে পারে। কিন্তু এরপর আর প্রাইস বাড়ে নি। বরং দিন দিন আরো কমেছে। অবশ্য লুনার আর কী দোষ দিব। বিটকয়েনের মতো স্টাবলিশড একটা কয়েনই তো গত প্রায় দুই মাসে অলমোস্ট ৫০% ভ্যালু হারিয়ে ফেলেছে।

img_0.5965651187799225

যায় হোক, এতদিন স্পট ট্রেডিং করলেও এবার আবার সমস্ত আগ্রহ ফিউচার ট্রেডের প্রতি চলে গিয়েছে। যদিও এর আগে বেশ কয়েকবার ফিউচার ট্রেড বুঝার চেষ্টা করেছিলাম। কিন্তু আমার কাছে এইটা অনেক ঝামেলার মতো হতো। একটার পর একটা ইউটিউবে টেকনিক্যাল এনালাইসিস ভিডিও দেখেও তেমন একটা সুবিধা করতে পারি নি কখনো।

তবে কিছুদিন আগে এক বন্ধুর সাথে দেখা। সে অবশ্য গত প্রায় এক বছর ধরে নিয়মিত ফিউচার ট্রেড করে যাচ্ছে। সে ঠান্ডা মাথায় লম্বা একটা সময় নিয়ে আমাকে ফিউচার ট্রেডের আদ্যোপান্ত বুঝানোর চেষ্টা করে কিছুটা হল। আমিও টুকটাক কিছুটা বুঝতে পারলাম।

img_0.2864120533508099

সেই বুঝ থেকেই মূলত গতকাল ২০ USDT নিয়ে ফিউচার ট্রেড করার চেষ্টা করলাম। কিন্তু দুঃখের বিষয়, অল্প কয়েক ঘন্টার মাঝেই সব ডলার হারিয়ে ফেলেছি। তবে পুরো বিষয়টা আমার কাছে খুব ইন্টারেস্টিং লেগেছে। লিকুইডিটি হয়ে সব টাকা হাওয়া হয়ে গেলেও ট্রেডিং এর পুরো সময়টাতে আমি আলাদা একটা উত্তেজনা অনুভব করছিলাম।

ভাবছি ফিউচার ট্রেড নিয়ে আরো কিছুদিন টানা ঘাটাঘাটি করব। এরপর নতুন করে আবারও ট্রাই করব। শুনলাম, বিভিন্ন পেইড সিগনাল গ্রুপ আছে ফিউচার ট্রেড নিয়ে সিগনাল দেয়ার জন্য। যদিও এসব নিয়ে আমার আগ্রহ কম। আমি চাচ্ছিলাম এই বিষয়ে নিজের মাঝেই নূন্যতম একটা ধারনা নিয়ে আসা। আর ঠিক এজন্যই আগামী কয়েক মাস অল্প অল্প করে প্রতিনিয়ত এখানে ট্রেডিং করে যাবো। আপাতত প্রফিটের আশা করছি না। বাকিটা দেখা যাক...

বিন্যান্স ছাড়াও আরো কিছু প্লার্টফর্ম আছে ট্রেডিং এর জন্য। রিসেন্টলি নতুন একটা প্লার্টফর্ম যুক্ত হয়েছে এই লিস্টে। নাম কু কয়েন। এইটার ইন্টারফেসটা আমার কাছে ভালই পছন্দ হয়েছে। যদিও আমি এখনো এখানে ট্রেডিং করি নি। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে দুই একদিনের মাঝে কুকয়েনেও ট্রেডিং করার চেষ্টা করব আমি।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
7 Comments
Ecency