জীবন থেকে পাওয়া

WhatsApp Image 2022-07-22 at 6.58.23 PM.jpeg

জীবনে মানুষের চাওয়া পাওয়ার কোন কমতি থাকে না আমরা অনেক সময় নিজের কাছে প্রশ্ন করে ফেলি জীবন থেকে কি পেয়েছি সুখ চিরস্থায়ী হয় না জীবনে খারাপ সময় এর অবস্থান সবথেকে বেশি হঠাৎ করে থেমে যায় সবকিছু সব ক্লান্তি যেন আঁকড়ে ধরে নিশ্চুপ চারিদিক তখন নিজেকে খুব একা মনে হয় নিঃসঙ্গ মনে হয় ।

তখন মনে হয় কোন সুখের কারণে আমি আজ সবকিছু হারিয়ে নিঃস্ব একলা পথের পথিক আমি এই কথাগুলো বলছি আমার একটি খুব কাছের মানুষ আমার বন্ধু তার মুখে কিছু কথা শুনে আমি আজ নিশ্চুপ জীবনটা মানুষকে কতটা খারাপ সময় দিয়ে পার করতে হয় ।

যার উপর থেকেই জিনিসগুলা যায় সেই বুঝতে পারে আসলে জীবনটা কিছুই না জীবনটা একটা স্বপ্ন আমরা ঘরের মধ্যেই থাকি সবাই তবে হ্যাঁ আমরা কেউ চিরস্থায়ী না একটা সময় আমাদের এই পৃথিবী ছেড়ে বিদায় নিতে হয় ।

আমি যতক্ষণ এই পৃথিবীতে আমরা আছি ততক্ষণ কেন একজন আর একজনের ভালো দেখতে পারলাম আমরা কোনোভাবেই মানতে পারি না যে তুমি আমার থেকে ভাল থাক বাবা আমি তোমার থেকে আরও দ্বিগুন ভালো আছি একথাগুলো শুনলেই কেন যেন কিছু মানুষের গায়ে এলার্জি উঠে যায় ।

তেমনি আমার বান্ধবীর জীবনে কিছু ঘটে যাওয়া কথা আমি আপনাদের সাথে শেয়ার করব আমার বান্ধবী ও সবে একটু বড় হয়েছে প্রায় ১৪ প্রায় ১৫ বছর বয়স তখন হুট করে ওর বাসার লোকজন ওর জন্য ছেলে দেখতে শুরু করে মেয়ে সুন্দরী কোথা থেকে কি হয় বলা যায় না ।

WhatsApp Image 2022-07-22 at 6.58.23 PM (2).jpeg

তারপর ওর মাটা অসুস্থ ছিল মনে করছিলাম আর বাজবে না পড়ে খুব তাড়াহুড়া করে আমার ওই বান্ধবিটার বিয়ে হয়ে যায় কিন্তু বান্ধবিটার বয়স এতই কম ছিল কোনোভাবেই সংসারে অ্যাডজাস্ট করতে পারছিল না তারপর জোরপূর্বক ওর পেটে বাচ্চা আসে আর বাচ্চাটা নেওয়া হয় যাতে করে সংসারটা রক্ষা পায় এভাবে করেও প্রায় সাত-আট বছর সংসার করতে থাকে ওর উপর অনেক নির্যাতন হয় ও সেটা মুখ বন্ধ করে সহ্য করতে থাকে কখনোই কাউকে কোন কিছু বুঝতে দেয়না ও খুব শান্তশিষ্ট একটি মেয়ে ।

তারপর হুট করে একদিন ও সিদ্ধান্ত নেয় ওই সংসার জীবন টাতে আর থাকতে চায় না ও মুক্তি চায় তখন ওর বাবার বাড়িতে এসে ও সিদ্ধান্ত নেয় ও ডিভোর্স দিবে কিন্তু ওর পরিবারের লোকজন সেটা মানতে চায় না বলে মানুষ মাত্রই ভুল এবারের মত মাফ করে দে পরমুহূর্তে আবার সেই সংসারে আমার বান্ধবীর ফিরে যেতে হয় ।

অতঃপর আমার বান্ধবী অনেক কষ্টে জীবন যাপন করতে থাকে তারপর হুট করে অসুস্থ হয়ে পড়ে কিন্তু ওর শশুর বাড়ির লোকজন ওর অসুস্থতা মানতে পারেনি ও তারপরও অসুস্থ শরীর নিয়ে দিনের-পর-দিন কাজকাম সবার দিকে খেয়াল নিজের সন্তানের দিকে খেয়াল স্বামীর দিকে খেয়াল মোটকথা পুরো সংসারের খেয়ালি করতে গিয়ে ও সেন্সলেস হয়ে যায় ও সেন্সলেস হয়ে গেলে অতঃপর ওকে একটা ভালো হসপিটালে নিয়ে যাওয়া হয়।

তারপর সেখান থেকে ওকে বলা হয় আমরা এই রোগী রাখতে পারব না আপনারা অন্য কোথাও নিয়ে যান উন্নত খুব সিরিয়াস একটা অসুখ হয়েছে আমাদের এখানে চিকিৎসা নেই তারপর কি করবে পাঁচ-ছয় দিন এভাবেই গেল চিকিৎসা বিহীন খুট করে আমার বান্ধবীর প্রচন্ড পরিমানে পেটে ব্যথা শুরু হয় সারাদিন এভাবেই গেল তারপর সন্ধ্যাবেলায় ডাক্তারের কাছে যখন নিয়ে গেল ডাক্তার তাকে খুব বকাবকি করল ডাক্তার বান্ধবীকে বলল এই রোগী অপারেশন করলে বাচবেনা তাই আমি এই রিক্সার ভিতর যাবোনা ।

নিচতলা আসার পর একটি লোক একটি ডাক্তারের ঠিকানা দেয় তারপর ওই ঠিকানায় যাবার পর ডাক্তার তিনদিন অবজারভেশনে রেখে অপারেশন করতে চায় তারপর তারপর অপারেশন টা হয়ে গেলেন ও বলতেছিলো ও ওর মৃত্যু নিয়ে চোখে দেখেছে ও জানে না কি কারনে সৃষ্টিকর্তা ওকে আবার এই দুনিয়াতে রেখে গেছে ও হাসপাতালের বিছানায় কাঁদিয়েছে অপারেশন হওয়ার পর সাত দিন ওর কাছে কেউ ছিল না ওই সাত দিন থেকে ও মনের মধ্যে জিদ করে ও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ।

এই জীবনটাতে থাকতে চায় না যে কোন কিছুর বিনিময়ে সেই সংসার থেকে মুক্তি চায় কারণ বুঝে গিয়েছিল এসংসারে থাকলে ও মারা যাবে হয়তোবা সৃষ্টিকর্তাকে রেখে গেছে নতুন একটি জীবন দান করেছে সুন্দর একটি জীবন উপহার দিয়েছে সেই সুন্দর জীবনটা সুন্দর করে সাজাতে চায় তারপর বান্ধবী বাসায় এসে কাউকে কিছু না বলে চুপচাপ থেকে ওর মার সাথে কথা বলে ওর মাকে পুরোটাই ঘটনা খুলে বলে ও বাসায় গিয়ে তারপর ডিভোর্স করে দেয় ।

ডিভোর্স করে দেয়ার পরও যে আমার বান্ধবীর সুখী ছিল তা কিন্তু নয় ও অনেক কষ্ট করেছে আমি যেটা আমার চোখে দেখেছি ও ওর বাচ্চা নিয়ে ওর বাবার বাসায় অনেক দিন থেকে অনেক দিনের পর দিন চলে গেছে মাথার উপর দিয়ে খুব কষ্ট হয়েছে এটা আসলে বলে বোঝানো যাবে না পরমুহূর্তে ও কিন্তু পড়াশোনা খুব বেশি দূর করতে পারেনি কারন ওর যে সংসারের বিয়ে হয়েছিল ।

সেই পরিবারের লোকজন ওকে আর পড়তে দেয়নি ও বাবার বাড়িতে থেকে পড়াশোনা টা কমপ্লিট করে এবং ও একটি চাকরি করতে গিয়েও অনেক অপমান হয়েছে যেটা আসলে আমাদের মেয়েদের সাথে সব সময় ঘটে তারপর ওর জীবনে একটি মানুষ আছে সে মানুষটা ওকে বলে ওর হাত ধরতে চায় ওর মানুষটাকে দেখে ভালো লাগছিল আবার ভয় করছিল দ্বিতীয়বার কোন ভুল যেন না হয় ।

তারপর কিছুদিন পর ওর বাচ্চাটাকে হারায় কারণ ও দেখতে ছিল ওর বাবার বাসায় থাকলে ওর বাচ্চাটা ভালো থাকবে না যদিও দ্বিতীয়বার বিয়ে করে সেই স্বামীর সংসার করে তাহলে বাচ্চাদের অশান্তি হবে সেজন্য আমার বান্ধবী তার বাচ্চাটাকে তার বাবার কাছে দিয়ে দেয় এতেও কি তার শান্তি মিলে তারপরও সে শান্তি মেলে নাই ।

কারণ আমি হয়তো কষ্টটা বুঝতেছি না কিন্তু ওর নিজের সন্তানের ত্যাগ করে দ্বিতীয় বিয়ে করে আজ অনেকদিন পর ওর সাথে দেখা হয়েছিল আরও আমাকে সব ঘটনা গুলো খুলে বলেছিল এবং পরিশেষে আমাকে শুধু বললো আমি কোন সুখের আশায় কি করেছি আজকে পুরাটাই আমার সামনে।

আমি আসলে বুঝতে পারতেছিলাম না ওকে সান্তনা দিব নাকি ওকে বলবো আমাদের জীবন থেকেই পাওয়া আমাদের এই গল্পগুলো আমাদের মানতে হবে কারণ আমরা মেয়ে মেয়েরা মায়ের জাত কেন আমরা বারবার ভুলে যাই ।

কেন আমাদেরকে সম্মান করতে নেই কেন আমরা সম্মানের যোগ্য না কেন বারবার আমরা এই জিনিসগুলো সাফার করতেছি আমাদের সমাজের মানুষগুলো কবে তাদের মনুষত্ব পাল্টাবে আমার আসলে জানা নাই তবে হ্যাঁ সঠিক মানুষের হাত ধরে যদি গাছ তলায় থাকা যায় তাহলে হয়তোবা জীবনে শান্তি মিলবে ।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
Join the conversation now