ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়া এবং বিজয়নগর উপজেলার অঞ্চল গুলো কে সাধারণত উজান এলাকা বলা হয়ে থাকে। মূলত এসব অঞ্চলে বিপুল পরিমাণ ঋতু ভিত্তিক ফল মূল উৎপাদন হয়ে থাকে। এখান থেকেই পুরো শহরের বিপুল চাহিদা মেটানো হয়ে থাকে।
এখন গ্রীষ্মকাল। আম-কাঁঠালের ও হরেক রকমের ফল মূলের দিন। ওইসব এলাকা এখন সব ফল মূলে পরিপূর্ণ। ভ্রমণের জন্যে শহরের মানুষদের এখন পছন্দের তালিকায় আছে সেসব অঞ্চল। ভ্রমণের সাথে কিছু গাছ থেকে, ফরমালিন মুক্ত তাজা ফল মূল কে-ই পছন্দ না করে। তাইতো আজ পরিবার-পরিজন এর একাংশ নিয়ে গিয়েছিলাম সেসব অঞ্চলে। আমাদের মূল উদ্দেশ্য ছিল লিচু বাগান ভ্রমণ ও সেখান থেকে টাটকা লিচু খাওয়া এবং নিয়ে আসা।
ভ্যাপসা গরম চারদিকে, শহরে পেরিয়ে যখন ই সেসব অঞ্চলে ঢুকতে শুরু করলাম আর চারদিকে সবুজের সমারোহ আমাদের সাদরে গ্রহণ করে নিলে।চলতি গাড়িতে নির্মল বাতাস দিয়েছে প্রশান্তি। খুনসুটি আর আড্ডায়-আড্ডায় চলে গেলাম ফল মূলের রাজ্যে। কিন্তু হতাশার বিষয় হলো আমরা গিয়ে দেখি অধিকাংশ বাগানে লিচু পাড়া শেষ প্রায়।তাও বহু কষ্টে একটি বাগান পেয়েছি যেখানে লিচুর রাজ্যে যে কেউ হারিয়ে যাবে।এবং সে অঞ্ছলগুলোও হচ্ছে ইন্ডিয়ার বর্ডারের একদম পাশেই।কাঁটাতারের বেড়া গুলি দিব্যি খালি চোখে দেখা যাচ্ছে।প্রায়শই শুনা যায় যে ইন্ডিয়ান আর্মড ফোর্সের গুলিতে অনেক লোক এসব সীমান্ত এলাকায় মারা যায়,তাদের মধ্যে কী কী রাখাল আবার কেউ কেউ অবৈধ চোরাচালানকারী।
লিচু বাগানের কিছু ছবি নিচে দেওয়া হলো।
বাগান থেকে ফিরে আসার সময় দেখতে পেলাম রেল লাইনের পাশেই ছোট্ট একটি বাজার এর মতো।যেখানে একদম ছোট ছোট ব্যাবসায়ীরা এনে এনে এভাবে খলি তে করে খুচরা দামে বিক্রি করছে।আর সেসব বাগানের ভিতর গাছ চুক্তিতে বিক্রি হয়ে থাকে।তবে যারা ঘুরতে যায় তারা ইচ্ছে করলেই সেখানে গাছ থেকে নিজ হাতে পেড়ে খেতে পারবে এবং নিয়ে আসতে পারবে তবে তার জন্যে রয়েছে কিছু হিসাব-নিকাশ। তারা আপনাকে একটি গাছ দেখিয়ে দিবে যে এইদিক থেকে খেতে থাকুন ইচ্ছেমতো এবং পরবর্তীতে তার দেখেই অনুমান করে নিতে পারবে আপনারা কতগুলো লিচু সেদিক থেকে খেয়েছেন।এভাবেই হিসাব করে থাকে সেগুলোর এবং আপনি চাইলেই পছন্দসই গাছ থেকে লিচু কিনে নিয়ে আসতে পারবেন।
তবে বাগানের ভিতর শহর কিংবা বাজারের থেকে লিচুর দাম কিছুটা বেশি মনে হবে প্রথমে কিন্তু আপনি যখন সেগুলো একবার খাবেন তখন পার্থক্য বুঝতে পারবেন।সেগুলোর স্বাদ এবং গুণগত মান খুব ভালো যা একজনকে সন্তুষ্টি এনে দিবে।শহরের ভ্যাপসা গরম থেকে কিছুক্ষণের জন্যে মুক্তি,পরিবার নিয়ে ভ্রমণ,গাছ থেকে লিচু পেড়ে খাওয়া, বাড়িতে নিয়ে আসা, সব মিলিয়ে লিচুর রাজ্যে ভালো একটি দিন ছিল।