Assha othoba Nirasha: [আবার হবে তো দেখা?]

Photo From: Pixabay7p2cu6.jpg

আবার হবে তো দেখা, এক কাপ চায়ে?
হাত ধরে হাটা, সবুজ ঘাসে?
যাবে, তেপান্তরের মাঠে, যেখানে দিগন্ত ছুয়ে যায়?
দেখা দিবে, সুনীল এর "তোমাকে চাই" কবিতায়?

মফস্বল শহরে বেড়ে উঠা তুলন সদ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয় অর্থনীতি বিভাগে, আকাশ সমান স্বপ্ন নিয়ে ক্লাস করতে থাকে প্রথম সেমিস্টার থেকে, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ায় যার আজন্ম স্বপ্ন।

ক্লাসে যেতে আসতেই প্রথম সেমিস্টারের চূড়ান্ত পরীক্ষা চলে আসে। কারো সাথে তেমন করে পরিচয় হওয়ার মতো সুযোগ হয়ে উঠেনি।যাক প্রথম সেমিস্টার ফাইনাল ভালো ভাবেই শেষ করে তুলন।

প্রথম সেমিস্টার ফাইনালের পর কয়েকদিন বিরতি দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় সেমিস্টারের ক্লাস। ম্যাক্রো ইকোনমিকস ক্লাস, সবাই স্যারের লেকচার মনোযোগ দিয়ে শুনছে, এমন সময় সবার মনোযোগে বিঘ্ন ঘটিয়ে হনহন করে ক্লাসে প্রবেশ করে এক সুন্দরী ললনা, ধপাস করে বসে পড়ে তুলন এর পাশে।

বাস্তবে ডানাকাটা পরীর দেখা পেয়ে পুরো ক্লাসে আর মনোযোগ দিতে পারেনি তুলন। ক্লাস শেষে রাতুল কে জিজ্ঞেস করতে বেরিয়ে আসে ডানাকাটা পরীর নাম, তিতলী। বাহ যেমন সুন্দরী নামটাও সুন্দর, আবার পড়ালেখায়ও বেশ ভালো।

ব্যবসায় গণিত এর ক্লাস শেষে সবাই দৌড় দিলো নোটিশ বোর্ডের দিকে, ১ম সেমিস্টারের রেজাল্ট দেখতে। তুলনও গেলো তবে সবার শেষে, গিয়ে দেখে তার নাম সবার প্রথমে। তিতলীর নাম খুঁজে পায় তৃতীয় নাম্বারে। যাক তুলন আস্বস্ত হলো এই ভেবে যে তিতলীকপ প্রপোজ করলে অন্তত রিফিউজ হওয়ার সম্ভাবনা কম।

তিতলীর সাথে টুকটাক কথা হয় কিন্তু মনের কথাগুলো মনেই থেকে যায়। তিতলীর যদি কোন পছন্দ থাকে! এই ভয়ে তিতলীকে তুলনের আর বলা হয় ভালোলাগার কথা গুলো। তারপরও অনেক সাহস করে একটা চিরকুটে লিখে তিতলীর বিজনেস মেথ বই এ চালান করে দে, এতে যদি কিছু হয়!

এরই মধ্যে দ্বিতীয় সেমিস্টারও শেষ হয় দিন যায় মাস আসে, নতুন সেমিস্টার আসে কিন্তু তিতলীর কাছ থেকে কোন জবাব পায়না তুলন। এতে করে তিলন আটো কম কথা বলে তিতলীর সাথে ফলে তিতলীও আগ বাড়িয়ে কিছু বলছেনা যদি তুলন তাকে পছন্দ নান করে!

এইদিকে সেমিস্টার শেষ তাই গণিত বইটিও খোলা হলোনা।

এইভাবে সম্মান শেষ বর্ষের পরীক্ষা ও শেষ, সবাই যারযার ক্যারিয়ার নিয়ে বেশির ভাগ সময় ব্যয় করতেছে। এবং যথাসময়ে ফলাফল ঘোষণা করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তুলন খুবই খুশি অনেকদিন পর দেখা হবে ডানাকাটা পরীর সাথে।

তুলন রেজাল্ট দেখার জন্য ডিপার্টমেন্ট গেলেও তিতলীকে কেথাও দেখেনি নোটিশ বোর্ড ছাড়া! তুলন রেকর্ড সংখ্যক নাম্বার পেয়ে প্রথম হলেও তার মনে শ্রাবণের মেঘ জমেছে।

তুলন মাস্টার্স শেষ করলেও তিতলী করেনি, খবর নিয়ে জানতে পারে তিতলী বিসিএস প্রশাসন ক্যাডারে জয়েন করছে। এইদিকে তুলন মাস্টার্সে ও কৃতিত্বের সাথে পাস করে জয়েন করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হিসেবে।

তিতলী ও তুলন দুজনেরই বয়স বাড়ে, বিয়ের জন্য বলে পরিবার থেকে।

এইদিকে তিতলীর বিয়ে ঠিক হয়ে যায় ছেলে উন্নয়ন সংস্থা জাইকার পরামর্শক হিসেবে কাজ করে। বিয়ের দিন গনিয়ে আসতেছে বাসা পরিস্কারের অনু সংগ হিসেবে পুরনো বই গুলো গোছাতে গিয়ে গণিত বই থেকে পড়ে যায় চিরকুটটা, খুলে দ্রুত চোখ বুলায় তিতলী, নিজেকে আবিষ্কার করে যেনো কাঙ্খিত সর্গে!

তিতলী ফেসবুকে নক দে তুলনকে, তুলন অফলাইনে।
মোবাইল ঘেটে আবিষ্কার করে কাঙ্খিত নাম্বার, কল করে তুলনের নাম্বারে। তিলন ক্লাস নিচ্ছে দেখে তার সেল ফোন সাইল্যান্ট ছিলো।

ক্লাস শেষে তুলন কল ব্যাক করে, জিজ্ঞেস করে কে বলছেন? ওপাশ থেকে বলে উঠে তোমার কাছে সুনীল এর "তোমাকে চাই" কবিতাটা আছে? তুলন আমতাআমতা করে বলে আছে। ওপাশ থেকে বলে তাহলে বিকালে টিএসসিতে চলে আসো এক কাপ চা খাবো।

H2
H3
H4
3 columns
2 columns
1 column
9 Comments
Ecency