নিব্বা আর নিব্বি গিয়েছিল সভ্য সমাজে বার্গার খেতে।
জরুরি কাজের ফাকে রাতের বেলায় নিব্বা আর নিব্বি হাটতে বের হয়েছিল ব্যাস্ত শহরে। বেশ কিছুক্ষণ ধরে নিব্বি পরিচ্ছন্ন শহর দেখছিল আর তার মনের কথাগুলো নিব্বা কে বলছিল।
নিব্বিঃ আমি না আগে ভাবতাম যে আমাদের এলাকার ৫/৬ তলা বিল্ডিংগুলোই মনে হয় বড় আর আমাদের এলাকাটাই অনেক আধুনিক। আর এরকম পরিচ্ছন্ন শহর যে বন্যাদের শহর ছাড়াও হয় বুঝিই নাই।
নিব্বাঃ কি বলছো? তোমার মাথায়ই ছিল না এই ছোট্ট জিনিস? আর বন্যাদের এলাকার ব্যাপার টা বুঝলাম না।
নিব্বিঃ তোমার সাথে ঝামেলা হওয়ার পর বন্যাদের বাসায় গিয়েছিলাম কয়দিন থাকতে, তখন ওদের এলাকা টা এরকম পরিচ্ছন্ন দেখে খুব ভালো লাগছিল। আমার আবারো যাইতে ইচ্ছা করছিল।
নিব্বাঃ আবারো ঝামেলি করে যেতে ইচ্ছা করছিল নাকি?
নিব্বিঃ আরেহ না।
আরো কিছুক্ষণ হাটার পর নিব্বার চোখে পড়লো ফেমাস বার্গার শপ নাম যার বার্গার কিং। নিব্বা মনে মনে ভাবছে যে নিব্বি তো বার্গার খুব পছন্দ করে আর যেহেতু আগের বার একটা জায়গায় বার্গার ভালো লেগেছে, তো এটা আরো বেশি ভালো লাগবে। পরে নিব্বা ঠিক করলো ভিতরে গিয়ে বার্গার খেয়ে আসবে। হঠাৎ তার মাথায় আসলো যে একটু রিসার্চ করে যাওয়া দরকার দামের ব্যাপার টা যেহেতু ব্যাস্ত শহরের ব্যাস্ত খাবারের জায়গা, পকেট এ কুলাবে কিনা তাও তো জানতে হবে। তো নিব্বা অনলাইনে ঢুকে মেনু দেখতে চাইলো সাথে দামটাও। দামি দামি খাবারের মাঝে নিব্বা খুজছিল কমদামি কিছু পায় কিনা। হঠাৎ করে নিব্বা একটা কমদামি বিফ বার্গার দেখে সে কি খুশি! সোজা লম্বা সিড়ি বেয়ে উঠতে লাগলো নিব্বা আর নিব্বি। নিব্বা কিন্তু তখনো শিউর না যে এটাই কি বার্গার কিং এর রাস্তা নাকি ভুল পথে যাচ্ছে। পরে খেয়াল করলো যে ঠিক পথেই আছে। ভিতরে গেল তারা।
তো ভিতরে গিয়ে নিব্বা রেগুলার কাস্টমারের ভাব নিয়ে একটা টেবিল নিয়ে বসলো আর সাথে নিব্বি তো ছিলই। মেনু খুজছিল নিব্বা কিন্তু পেল না আর একটা সময়ে বুঝতে পেল যে কাউন্টারে গিয়ে মেনু দেখে আগে টাকা দিয়ে আসতে হবে।
নিব্বা কিছুক্ষণ মেনু দেখে সেই কমদামি বার্গার টা পেয়ে এরপর...
নিব্বাঃ এই বার্গার টা হবে তো?
শপ কিপারঃ জ্বি, হবে।
নিব্বাঃ ওকে, ওটা দুই পিস দিবেন ঐ টেবিলে।
শপ কিপারঃ ঠিক আছে, স্যার। স্যার, কোল্ড ড্রিংকস লাগবে?
নিব্বাঃ কোন সাইজ কয় টাকা দাম?
শপ কিপারঃ একটাই সাইজ আছে স্যার, ৭০ টাকা মাত্র।
নিব্বা মিলি সেকেন্ড এর মধ্যে ভেবে বললোঃ ক্লিন ওয়াটার হবে না? ড্রিংকস এর ব্যাপার টা তো জানা দরকার কোনটা খাবে।
শপ কিপারঃ জ্বি পানি হবে। আমরা যেটা ইউজ করি সেটা দিয়ে দিব,পে করতে হবে না।
নিব্বাঃ ওকে, থ্যাংকস।
নিব্বা গিয়ে বসলো নিব্বির সাথে আর অপেক্ষা করছিল আর নিব্বি কে বললো যে ১লিটার ড্রিংকস খাই ৫০ টাকা দিয়ে আর এখানে ৭০ টাকা দিয়ে ২০০/৪০০ মিলি কেন খাবো? বাইরে গিয়ে খাবো নে লাগলে।
কিছুক্ষণ পর বার্গার আসলো। একটা বড় ট্রে তে করে বড় একটা কাগজের ব্যাগের ভিতরে ২টা বার্গার, এক গ্লাস পানি এনে টেবিলে রেখে ট্রে টা নিয়ে গেল। নিব্বা ভাবছিল যে, কোন প্লেট দিল না কেন। শুধুমাত্র দুইটা পাতলা কাগজ দিয়ে গেল। নিব্বা শপ কিপার কে ডেকে বললো আরো এক গ্লাস পানি দিতে যেহেতু মানুষ ২ জন। পেয়েও গেল সেটা আর এরপর নিব্বা ভাবছিলো যে খাওয়ার পর অবশিষ্ট অংশ টা ফেলবে কোথায় যদিও সেটাও পরে বুঝতে পেরেছে তারা। একটা সময়ে নিব্বি বলে উঠলো "বার্গার টা টক লাগতেছে গো, কাঁচা টমেটো দিয়েছে মনে হয়। ওহ না, এ যে জলপাই। বার্গারে কেউ জলপাই দেয়? রুফটপের সেই বার্গার টাই তো ভালো ছিল"।
নিজেরও ভালো না লাগা নিব্বার মন তখন বলছিল, "ঘি এর পেটে কি আর কুকুর সয়?"