This content was deleted by the author. You can see it from Blockchain History logs.

The history of breaking the rules ...

বাস চাপায় মর্মান্তিকভাবে নিহত দুই শিক্ষার্থীর মৃত্যুতে ক্ষোভে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ জানাচ্ছে স্কুল কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা। তাদের এই প্রতিবাদ যৌক্তিকও বটে। কারণ, পরিবহন খাতের এই নৈরাজ্যের অবসান হওয়া উচিত। আশা রাখছি, সবার দাবীর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে সরকার যথাযথ পদক্ষেপ নিবে।
কিন্তু এই আন্দোলনকে ঘিরে আমার মধ্যে বেশ কিছু প্রশ্ন জেগেছে- সেজন্যেই এই লেখার অবতারণা।
লক্ষ্য করেছি যে অনেকেই এই আন্দোলনকে সমর্থন দিয়ে বলেছেন, আমরা যা করতে পারিনি, তা এই কোমলমতি ছেলে-মেয়েরা করে দেখিয়েছে। কথাটা তো সত্য।তবে এই সত্যর মধ্য দিয়ে প্রকটভাবে এই সত্যটাও তো বেরিয়ে এসেছে যে, নাগরিক হিসেবে যাদের কথা বলার কথা ছিল তারা কথা বলেনি, যাদের প্রতিবাদ করার কথা ছিল তারা প্রতিবাদ করেনি, যাদের রুখে দাঁড়ানোর কথা ছিল তারা রুখে দাঁড়ায়নি। আর এখন তারা নিজেদের ব্যর্থতার দোহাই দিয়ে আন্দোলনকে সমর্থন দিচ্ছে, উৎসাহ দিচ্ছে, ফেসবুকে লাইভ শেয়ার দিচ্ছে। কিন্তু একবারও বলছেন না কেন, আমরা আমাদের ভুল বুঝতে পেরেছি, ছেলে-মেয়েরা তোমরা ঘরে যাও, এখন থেকে আমরাই আন্দোলনটা চালিয়ে যাবো।
আরেক দল আছে যারা নিজেরা কোন কিছু দিয়েই জনগণকে উদ্দীপ্ত করতে পারে না। বসে থাকে কখন পাবলিক নামবে একটা ইস্যু নিয়ে রাস্তায় নামবে, আর তখনই তারা হুট করে টিস্যু দিয়ে ঘাম কপালের মুছতে মুছতে পাবলিকের ঘাড়ে সওয়ার হয়ে বিপ্লব ঘটিয়ে ফেলবে। তারপর একটা মাইক নিয়ে রাস্তায় তারা বসে যায়। ভাবখানা এমন যে বিপ্লবের জন্য তারা এতদিন এদিনটির অপেক্ষা করছিল।
ফেসবুকে আরেক দল অতি উৎসাহীকে দেখলাম, সত্য-মিথ্যা যাচাই না করেই, বুঝে না বুঝে শেয়ার দিয়ে মহান বিপ্লবী দায়িত্ব পালন করে। আর বলে এই আন্দোলনে অমুককে দেখি না কেন, অমুক কথা বলছে কেন? ওদের কথা শুনে মনে হবে অমুক-তমুক মনে হয় দেশের প্রধান শত্রু। এই গাধাগুলো এটাও বোঝে না যে, যখন আন্দোলন হয় তখন অমুক-তমুক কারো জন্য বসে থাকে না। এদের হলো ঘর পোড়ার মধ্যে আলু সিদ্ধ করার মানসিকতা।
ছেলে-মেয়েরা ব্যানার নিয়ে দাঁড়িয়েছে, তাতে লেখা রাষ্ট্রের মেরামতের কাজ চলছে। আর আমরা অনেকেই এতে পুলকিত হয়ে গদগদ করছি আর বলছি এইবার একটা কাজের কাজ হয়েছে, দেখছো প্রজন্মের কী দারুণ অগ্রসর ভাবনা, চোখে আঙুল দেখিয়ে দিয়েছে কীভাবে রাষ্ট্রের মেরামত করতে হয়। এ কোন আহাম্মকের স্বর্গে আমরা বাস করছি?
অথচ দেখেন তো কারবার। মন্ত্রীর গাড়ির কাগজ নাই, সংসদ সদস্যের নাই, পুলিশের নাই, বিচারকের নাই, দুদকের নাই, মিডিয়ার নাই, ব্যবসায়ীর নাই, গণপরিবহনের নাই।
বাস-ট্রাক নিয়ম মানে না। মটর সাইকেল নিয়ম মানে না। সিএনজি অটো নিয়ম মানে না। এমনকি পথচারীরাও রাস্তা পারপারে নিয়ম মানে না।
তাহলে নিয়মটা মানে কে? আইনটা মানে কে?
এই নিয়ম না মানা মানুষগুলো তো মঙ্গলগ্রহ থেকে আসেনি। এই নিয়ম না মানা লোকগুলো তো আমরাই।
তাহলে, আমরা কেন লাইন মেনে গাড়ি চালাই না?
আমরা কেন সিগনাল মানি না?
ফুটপাতে মটর সাইকেল উঠলে কেন প্রতিবাদ করি না?
আমার কেন উল্টোপথে গাড়ি চালাই? আর বাকিরা কেন কিছু না বলে তাকিয়ে দেখি?
দুটো বাসের মধ্যে যখন আগে যাবার প্রতিযোগিতা হয়, তখন বাসের মধ্যে বসে থাকা আমরা ৪০/৫০ জন যাত্রী কেন প্রতিবাদ করি না?
যখন গাড়ি চলাচলের সিগনাল দেয়া থাকে, তখন কেন আমরা রাস্তা পার হই?
আমরা নিজেরাই এই কাজগুলো না করে অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করেছি। আর এখন এই আমরাই বলছি, ছেলেমেয়েরা দারুণ একটা কাজ করছে। কী সুন্দর সিস্টেম নিয়ে এসেছে।
ছেলে-মেয়েদের আবেগকে কী অবলীলায় আমরা ব্যবহার করছি। একবারও ভাবছি না, এর পরিণতি কী হতে পারে? ওরা তো সবসময় রাস্তায় থাকবে না। আচ্ছা বলুন তো তখন কী হবে? আমরা কি আবার নিয়ম না মানার মধ্যে ফিরে যাবো?
শিক্ষার্থীদের এই বিক্ষোভ আঙুল দিয়ে এটাই দেখিয়ে দিয়েছে যে সবার আগে আমাদের স্বভাব বদলাতে হবে।
তাই, ছেলেমেয়েদের রাস্তায় ঠেলে না দিয়ে চলুন নিজেদের স্বভাব বদলাই। আমরা নিজেরাই নিয়ম মানি। রাষ্ট্র মেরামতের দায়িত্ব তো সবার, ওই কোমলমতি ছেলেমেয়েদের নয়। আমরা ঠিক হলে রাষ্ট্রও ঠিক হবে।
শেষ করবার আরেকটা কথা। যারা ঘুষ খান, যারা অবৈধভাবে সম্পদের পাহাড় বানিয়েছেন, তাদের ছেলে-মেয়ে যদি কোন একদিন বাসায় ফিরে কখনো প্রশ্ন করে, বাবা তোমার এত বিত্তের উৎস কী, তখন কী জবাব দিবেন?
এমন দিনও তো আসতে পারে। উত্তরটা ভেবে রাখবেন কিন্তু।

Thank you so much for reading my post. Your all pray for me that I am fine. And do more pray for I can post better.
Thank you for staying with @junaid12 image